ধর্ম ও জীবন ডেস্ক:
শুক্রবার থেকে শুরু হতে যাওয়া বিশ্ব ইজতেমাকে ঘিরে তাবলিগ জামাতের বিরাজমান দুই পক্ষের মধ্যে কোনো সংঘাতের সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ। ইজতেমায় আসা মানুষের নিরাপত্তা দিতে র্যাব প্রস্তুত রয়েছে জানিয়ে মানুষের নিরাপত্তার জন্য কার-মোটারসাইকেল-বোট পেট্রোলিংয়ের পাশাপাশি আকাশ থেকে হেলিকপ্টার এবং ড্রোনের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক নজরদারি করা হবে বলে জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে ইজতেমার নিরাপত্তা নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন র্যাবের প্রধান।
শুক্রবার ফজরের নামাজের পর আম বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হবে বিশ্ব ইজতেমা। ইজতেমায় অংশ নিতে ইমোতধ্যে মুসল্লিরা জড়ো হতে শুরু করেছেন ইজতেমা মাঠে। গতকাল রাতেই প্রায় সাড়ে চার লাখের বেশি মুসল্লি তুরাগ তীরে এসেছেন। তাছাড়া ২৭ দেশে থেকে উল্লেখযোগ্য বিদেশি মুসল্লি এখানে সমবেত হয়েছেন। প্রথম ধাপে বাংলাদেশিদের জন্য ৯১টি খিত্তা এবং বিদেশি মুসল্লিদের জন্য একটি খিত্তা করা হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে থাকবে ৮৭টি খিত্তা। বিশাল সংখ্যক মানুষের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য পুলিশের পাশাপাশি প্রস্তুত র্যাবও।
র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘বিশ্ব ইজতেমা আমাদের মর্যাদার বিষয়। তাই এখানে নিরাপত্তার একটি বড় বিষয় রয়েছে। দুই গ্রুপের মধ্যে কোনো ধরণের সংঘাত বা মারামারি না হয় সেজন্য আমরা সতর্ক আছি। সরকারের সঙ্গে দুই গ্রুপের নেতৃবৃন্দের যোগাযোগ আছে। একাধিক মিটিং ও আলোচনা হয়েছে। প্রত্যেকে তাদের লিমিট দায়িত্ব সম্পর্কে সতর্ক আছেন। এক গ্রুপের ইজতেমা শেষ হওয়ার পরে আরেক গ্রুপ ইজতেমার মাঠ আরেক গ্রুপের কাছে হস্তান্তর করে চলে যাবে। সেটা যেন স্বাভাবিক ও শান্তিপূর্ণভাবে হয় এজন্য আমরা তৎপর থাকবো।’
বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘এরই মধ্যে তুরাগ মাঠ ঘিরে নিরাপত্তায় কাজ শুরু করেছে র্যাব। আগামী তিন (১০-১২ জানুয়ারি) পুরোদমে মাঠে থাকবে র্যাব সদস্যরা। গাড়ি, মোটরসাইকেলে টহলের পাশাপাশি তুরাগ নদীতে স্পিড বোর্ড নিয়ে টহল থাকবে। এছাড়া আকাশে র্যাবের হেলিকপ্টার টহল থাকবে। খিত্তার ভেতর এবং বাইরে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সাদা পোষাকে গোয়েন্দা দল মোতায়েন থাকবে। সার্বক্ষণিক র্যাবের কন্ট্রোল রুম থাকবে। নজরদারি আরও বাড়াতে খিত্তা ও আশপাশে সিসিটিভি বসানো হয়েছে। বম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের পাশাপাশি, ডগ স্কোয়াড এবং ড্রোন থাকবে। তাছাড়া আপদকালীন কোন পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে তা মোকাবেলার জন্য স্পেশাল অফিসাররা প্রস্তুত থাকবে।’
‘দুই পর্বের বিশ্ব ইজতেমাকে কেন্দ্র করে ঝুঁকি বিশ্লেষণ করা হয়েছে। র্যাব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সকল গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে যাচ্ছে। এছাড়া আমাদের নিজস্ব গোয়েন্দা সংস্থা আছে। যারা কাজ করছে। যাতে কোথাও কোন ধরণের ঝুঁকি প্রতীয়মান হলে সঙ্গে সঙ্গে সেটাকে আমরা মোকাবেলা করতে পারি। এটা ধারাবাহিক ভাবে আমরা করতে থাকবো। সকলের পরস্পর সহযোগিতায় দুই পর্বের বিশ্ব ইজতেমা শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হবে বলে প্রত্যাশা র্যাব ডিজির।
ইজতেমার মাঠে ঢোকার জন্য ২০টি প্রবেশ পথ থাকবে বলে জানান র্যা ব প্রধান।
এ সময় বিশ্ব ইজতেমা ঘিরে কোন ধরণের গুজব যাতে না ছড়ানো হয় সেজন্য সোশ্যাল মিডিয়া মনিটরিং করা হচ্ছে বলে জানান র্যাবের মহাপরিচালক। বেনজীর আহমেদ বলেন, ফেক এবং গুজব নিউজের কারণে অনেক সময় বড় ধরণের বিপদ চলে আসতে পারে। তাই যাচাই না করে কোন নিউজ শেয়ার করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান তিনি।