খেলাধূলা :
ইডেন গার্ডেন্স উপমহাদেশের, ক্রিকেট দুনিয়ার বৃহদাকার ভেন্যুগুলোর একটি। শতবর্ষের পুরোনো ইডেন এখন যেন পুরো বিয়েবাড়ি। রাত পোহালেই বড়ো আয়োজন। বিয়েবাড়ির মতোই এখানে ব্যস্ততার শেষ নেই। এদিক-ওদিক সর্বত্রই কাজ চলছে। সাজ-সজ্জার কাজই বেশি। বিয়েবাড়িতে ‘নির্ধারিত’ কিছু থাকতে নেই! তাই হয়তো বুধবার দুপুরে প্রেসবক্সেই নিজেদের মিটিংটা সেরে ফেলেছে কলকাতা পুলিশ। বাঙালির চিরায়ত জীবনদর্শনের অংশ গুঞ্জন, কানাকানি-ফিসফাঁস এখানেও রমরমা। বিয়েবাড়ি বলে কথা, বাড়ির বাইরে হাজারো লোকের ভিড়। অঙ্গসজ্জা দেখেই যারা ক্ষান্ত হতে চান না, অংশ নিতে চান মহা আয়োজনে। আমজনতার এই আয়োজনে অংশ নিতে লাগবে টিকিট। যেটি এখন প্রায় সোনার হরিণ হয়ে উঠেছে।
এত সব কর্মযজ্ঞের মাঝেই নীরবে এগিয়ে যাচ্ছে ইডেনের প্রস্তুতি। আগামীকাল এই মাঠের সবুজ গালিচায় শুরু হবে বাংলাদেশ-ভারত দ্বিতীয় টেস্ট। দুই দেশের প্রথম দিবারাত্রির টেস্ট বলেই ঐতিহাসিক মর্যাদা পাচ্ছে এই ম্যাচ। গোলাপি বলে প্রথমবার টেস্ট ক্রিকেট খেলতে নামছে দুই প্রতিবেশী দেশ।
ঐতিহাসিক এই মাহেন্দ্রক্ষণের আকর্ষণ অনেক গুণ বেড়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অংশগ্রহণে। আগামীকাল ম্যাচের প্রথম দিনে দুই দেশের সাদা পোশাকের লড়াই উপভোগ করবেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। তার সঙ্গে থাকবেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। ভরদুপুরে হাসিনা-মমতা মিলেই ইডেনের ঘণ্টা বাজিয়ে দিবারাত্রির এই টেস্টের উদ্বোধন ঘোষণা করবেন।
বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার থেকে দুই প্যারাট্রুপার নেমে গোলাপি বল তুলে দেবেন অধিনায়ক মুমিনুল হক ও বিরাট কোহলির হাতে। মধ্যাহ্নভোজের বিরতি, চা-বিরতিতেও থাকছে নানা আয়োজন, যা ম্যাচের মহিমা বাড়িয়ে দেবে কয়েক গুণ। প্রথম দিনের খেলা শেষে অন্তত ঘণ্টাখানেকের আরেকটি অনুষ্ঠান হবে। সেখানে সংগীতানুষ্ঠানও রয়েছে।
মাঠের ২২ গজের ক্রিকেটকে ঘিরেই এতকিছু। ব্যাট-বলের লড়াইয়ের বাইরের আয়োজনগুলো খেলোয়াড়দেরও রোমাঞ্চিত করবে। যদিও বাংলাদেশের হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গো গতকাল বলেছেন, গোলাপি বল ও দিবারাত্রি টেস্টের আকর্ষণ পাশে রেখে মুমিনুলরা তৈরি হচ্ছেন মূল লড়াইয়ের জন্য। দলের সবাই খেলার দিকেই মনোযোগী। তাদের কাছে এটি সিরিজের আরেকটি ম্যাচই শুধু। সিরিজের প্রথম টেস্টে ইন্দোরে ভারতের কাছে ইনিংস ও ১৩০ রানে হেরেছিল বাংলাদেশ।
ইডেনের কিউরেটর সুজন মুখার্জি জানিয়েছেন উইকেট সম্পর্কে। গতকাল তিনি বলেছেন, ‘আমার উইকেট স্পোর্টিং হয়। তিন বছর ধরে এখানে সবার জন্য সুবিধা আছে। আমি সেরকম উইকেট বানিয়েছি, যাতে সবার জন্য কিছু থাকে।’