আজিজুর রহমান রনি, বিশেষ প্রতিনিধিঃ
খোকন মিয়া (বড়ি খোকন) গত মঙ্গলবার রাতে পুলিশের ফাঁদে আটকা পড়লেন। উপজেলার বাবুটি পাড়া ইউপি থেকে ২০০ পিস ইয়াবাসহ ধরা পড়েন তিনি। গতকাল বুধবার মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দিয়ে তাঁকে আদালতে পাঠিয়েছে মুরাদনগর থানা পুলিশ।
কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার বাবুটি পাড়া ইউনিয়নের আসাদনগর গ্রামের মো. রেসমত আলীর ছেলে খোকন (৩৮) চিহ্নিত বখাটে হিসেবে এলাকায় পরিচিত। নিজে কিছু না করলেও জিন্সের প্যান্ট, শার্ট-জুতা আর স্মার্ট মোবাইল ফোনের এয়ারফোন লাগিয়ে সারাক্ষণ ঘুরে বেড়ান তিনি। আর এসবের আড়ালে রয়েছে ইয়াবা ব্যবসা। এ ব্যবসায় আঙুল ফুলে কলাগাছ বনে যাওয়া খোকন এখন কোটিপতি। তাঁর এ পরিবর্তন ঘটেছে শেষ দুই বছরে। পুলিশের তালিকায় তিনি ইয়াবা ব্যবসায়ী হিসেবে ফেরার থাকলেও ধরা পড়েননি কখনো। তাঁর বাড়ি মুরাদনগর সদর থেকে ১৫ কিলোমিটার দক্ষিনে আসাদনগর গ্রামে।
সেখানে গিয়ে দেখা যায়, ওই গ্রামটিতে টিনের ঘরের বাইরে কোনো পাকা বাড়ি নেই। হঠাৎ করে রাতারাতি প্রায় এক একর জমিতে বাড়ি তৈরি হয়ে যাওয়ায় এলাকার মানুষের কাছে স্বপ্নের মতো ঠেকেছে। কানাঘুষা শুরু হয় সর্বত্র। দৃষ্টিনন্দন এই বাড়ির খোঁজ নিতে গিয়ে জানা গেছে, ঢাকা মগবাজারে দুটি দোকান ও গৌরিপুর বাজারে একটি দোকান নিয়েছেন প্রায় দু’কোটি টাকা ব্যয় করে। খোকনের নিকটাত্মীয়ের কয়েকজনের সাথে কথা বলে ওই তথ্য পাওয়া যায়।
এলাকার ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, ‘এই বড়ি (ইয়াবা) বেইচ্যা এ রহম কর্মকান্ড করা যায় তা ভাবতেও অবাক লাগে। তা অইলে তো এইডা স্বর্ণের চেয়েও দামি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘এর কারণে যুবসমাজ ধ্বংস হয়ে গেছে। এর বিচার হওয়া দরকার।’
এলাকার একাদিক ব্যক্তি বলেন, খোকনের এই ব্যবসার কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না। প্রভাবশালী লোকদের ছত্রচ্ছায়ায় থেকে অনায়াসে এই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
পুলিশের হাতে আটক হওয়ার পর খোকনের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিনিধির। খোকন ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িত বলে স্বীকার করেন। তার অন্য কোন ব্যবসা আছে কিনা জানতে চাইলে, আর কোন ব্যবসা নেই বলে তিনি জানান।
মুরাদনগর থানার ওসি এসএম বদিউজ্জামান জানান, খোকন চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ী। তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। ইয়াবার ক্রেতা সেজে মঙ্গলবার রাতে তাঁকে আসাদনগর গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে মামলা দিয়ে জেলহাজতে প্রেরণ করা হবে।