জাতীয় ডেস্ক:
মিয়ানমার থেকে নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি সে দেশ থেকে আসছে ইয়াবাও। রোহিঙ্গাদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে মাদক ব্যবসায়ীরা। শরণার্থী ছদ্মবেশে ব্যবসায়ীরা খুব সহজেই ইয়াবা আনছে। বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বেশকিছু চালান উদ্ধার করছে। এক মাসে এর পরিমাণ ৩০ লাখ পিস। গত ছয় দিনেই উদ্ধার হয়েছে ১৬ লাখ পিস ইয়াবা। সেই সাথে আটক হচ্ছে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা। যাদের অধিকাংশই মিয়ানমারের নাগরিক।
জানা গেছে, গত ২৫ আগস্টের পর প্রায় ৫ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে এসেছে। বাংলাদেশ তাদেরকে মানবিক কারণে আশ্রয় দিচ্ছে। এই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে দুই দেশের মাদক ব্যবসায়ীরা।
র্যাবের এক শীর্ষ কর্মকর্তা ইত্তেফাককে জানান, রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী নিধন কর্মসূচি চলছে। কিন্তু মাদক ব্যবসায়ীদেরকে ভালোই রেখেছে মিয়ানমার সরকার। তাদের গায়ে সেনাবাহিনী আঁচড়ও লাগাচ্ছে না। বরং বাংলাদেশে ইয়াবা পাচারে তাদেরকে নানাভাবে সহায়তা করছে। ওই কর্মকর্তা আরো জানান, রাখাইন প্রদেশে একের পর এক রোহিঙ্গাদের গ্রাম ও বসতভিটা পুড়িয়ে ফেললেও ইয়াবা কারখানাগুলো পুরোদমে সচল রেখেছে মিয়ানমার। সেনাসদস্যরা পালা করে ইয়াবা কারখানা পাহারা দিচ্ছে।
গতকাল বুধবার টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ এলাকায় একটি মাছ ধরার ট্রলার থেকে ৮ লাখ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। আটক করা হয় মিয়ানমারের ৪ নাগরিককে। এছাড়া গতকাল চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড এলাকা থেকে দেড় হাজার ইয়াবাসহ দুই যুবককে আটক করে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, আটক যুবকরা একটি বাসে করে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা যাচ্ছিল। আটক ইলিয়াস ও ফয়সাল টেকনাফের একটি শরণার্থী শিবিরের বাসিন্দা। এর আগে গত মঙ্গলবার বিজিবি ৩ লাখ ইয়াবাসহ ৩ রোহিঙ্গাকে আটক করে। গত সোমবার কক্সবাজার শহর থেকে ৭ হাজার ইয়াবাসহ দুই যুবককে আটক করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। গত রবিবার নগরীর ফিরিঙ্গিবাজার এলাকা থেকে তিন হাজার ইয়াবাসহ দুই রোহিঙ্গা যুবককে আটক করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র ইত্তেফাককে বলেন, ইয়াবাসহ রোহিঙ্গা ধরা পড়ার ঘটনা শুধু টেকনাফ বা উখিয়াতেই সীমাবদ্ধ থাকছে না। তাদেরকে চট্টগ্রামসহ দেশের অন্যান্য স্থান থেকেও ধরা হচ্ছে।
র্যাব-৭ অধিনায়ক লে. কর্নেল মিফতাহ জানান, ইয়াবা পাচারের সঙ্গে রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যার কোনো যোগসূত্র নেই। ইয়াবা পাচার আগেও ছিল এখনো চলছে। তবে বাংলাদেশের উদারতায় পোয়াবারো মাদক ব্যবসায়ীদের। তারা আগের চেয়ে আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে। তিনি আরো বলেন, প্রতিদিন হাজার হাজার রোহিঙ্গা ঢুকছে। তাদের সকলকে আলাদাভাবে তল্লাশি করাও প্রায় অসম্ভব একটি কাজ। মিয়ানমার আসলেই বাংলাদেশকে নানাভাবে চরম বিপদে ফেলেছে।