ঢাকা ০৩:২৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এই বঞ্চনার বাজেট জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়’

জাতীয় ডেস্কঃ
২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে প্রত্যাখান করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘অলীক স্বপ্ন-কল্পনায় প্রস্তাবিত বাজেট। বঞ্চনার বাজেট জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।’
জাতীয় সংসদে বাজেট পেশের ১০ দিন পর আজ রবিবার দলের গুলশান অফিসে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই বাজেট বিশ্লেষণ করে আমরা যুগপৎ বিস্মিত, ক্ষুব্ধ এবং হতাশ হয়েছি।
তিনি ব্যাংক আমানতের ওপর অন্যায় ও অনৈতিক বর্ধিত শুল্ক আরোপ বাতিল এবং ব্যাংক ব্যবস্থার পরিপূর্ণ সংস্কার দাবিসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর আরোপিত ১৫ ভাগ ভ্যাটের হার ভোক্তাদের সহনীয় পর্যায়ে হ্রাস করার দাবি জানান।
ফখরুল বলেন, জনগণের প্রতিনিধিত্বহীন পার্লামেন্টে যেখানে কোনো জবাবদিহিতা নেই, সেই পার্লামেন্টে এই বাজেট পেশ করা হয়েছে। এখানে সরকারের দায় কোথায়? জনগণের কাছে সরকারের কোনো দায়বদ্ধতা নেই বলেই এই বঞ্চনার বাজেট জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ৪ লাখ ২ শত ৬৬ কোটি টাকার বাজেটে ১ লাখ ১২ হাজার ২ শত ৭৫ কোটি টাকার ঘাটতি দেখিয়ে যে বিরাট আকারের বাজেট, এই বাজেটের অর্থ কি? এটা নিছক বিরাট-অংকের-বাজেট প্রচারণার ধাপ্পাবাজি ছাড়া আর কিছুই নয়।
এই বাজেট মানুষকে বোকা বানানোর বাজেট, এ বাজেট প্রতারণার বাজেট। একজন অর্থনীতিবিদের মতে, ঘাটতি বাজেটের অর্থ পাওয়া যাবে কি না তা গুরুত্বপূর্ণ নয়, কেননা মূল বাজেটই তো হবে না।
বর্তমান সরকার যে সব মেগা প্রকল্প হাতে নিয়েছে সেগুলোর কাজ ২০১৭-১৮ অর্থবছরের মধ্যে বাস্তবায়ন করাই সরকারের অঘোষিত লক্ষ্য। এর জন্য প্রয়োজন হবে প্রচুর অর্থের। সেই অর্থের যোগান দেখানোর জন্যই জনগণের ওপরে করের বোঝা চাপিয়ে একটি গাণিতিক হিসেবের বাজেট হিসেবে এই বাজেট পেশ করা হয়েছে।
পরবর্তী নির্বাচনের পূর্বে সরকার এইসব প্রকল্পকে নির্বাচনী প্রচারণা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করবে। তারা বলতে চাইবে দেশের একমাত্র সার্থক উন্নয়নকারী তারাই।
তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে এই সূত্রের ৮০শতাংশ প্রবৃদ্ধি একেবারেই অসম্ভব, কল্পনা করাও কঠিন। পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে বাজেট প্রণয়নকারীরা নিছক হিসেবের অংক মেলাতে গিয়ে তাদের পছন্দসই সংখ্যাটি বসিয়ে দিয়েছেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ১৫শতাংশ ভ্যাট আরোপের ফলে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যর দাম কমবে এবং কোনো অবস্থাতেই কোনো পণ্যের দাম বাড়বে না। অর্থমন্ত্রী কিসের ভিত্তিতে এমন উদ্ভট তত্ত্ব উপস্থাপন করেছেন তা আমাদের বোধগম্য নয়। এই কারণেই বোধহয় তিনি বলেছেন, জীবনের শ্রেষ্ঠতম বাজেট দিয়েছি।
তিনি বলেন, কৃষকের ব্যবহৃত জনপ্রিয় কৃষিযন্ত্র ট্রাক্টরের ওপর বাজেটে ১৯ শতাংশ বাড়তি শুল্ক প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। বাজারে এখন ট্রাক্টর বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৮ লাখ থেকে সাড়ে ১২ লাখ টাকায়। এ হিসাবে ট্রাক্টর প্রতি গড় মূল্য দাঁড়ায় ১০ লাখ টাকা। এর সঙ্গে শুল্ক ও ভ্যাটসহ বাড়তি ১৯ শতাংশ যোগ করলে প্রতিটি ট্রাক্টরের মূল্য প্রায় ২ লাখ টাকা বেড়ে যাবে। বাড়তি এ দামের কারণে কৃষক ট্রাক্টর কেনায় আগ্রহ হারাতে পারেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এতে ব্যাহত হবে কৃষির যান্ত্রিকীকরণ, কমে যাবে উৎপাদন। এটা পশ্চাদমুখী পদক্ষেপ। এ কর প্রত্যাহার করার দাবি জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাঈল জবিউল্লাহ।
ইত্তেফাক/
ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মুরাদনগরে পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রবাসীর বাড়ি ঘরে হামলা, নারীসহ আহত ৩

এই বঞ্চনার বাজেট জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়’

আপডেট সময় ০১:২৬:১৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ জুন ২০১৭
জাতীয় ডেস্কঃ
২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে প্রত্যাখান করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘অলীক স্বপ্ন-কল্পনায় প্রস্তাবিত বাজেট। বঞ্চনার বাজেট জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।’
জাতীয় সংসদে বাজেট পেশের ১০ দিন পর আজ রবিবার দলের গুলশান অফিসে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই বাজেট বিশ্লেষণ করে আমরা যুগপৎ বিস্মিত, ক্ষুব্ধ এবং হতাশ হয়েছি।
তিনি ব্যাংক আমানতের ওপর অন্যায় ও অনৈতিক বর্ধিত শুল্ক আরোপ বাতিল এবং ব্যাংক ব্যবস্থার পরিপূর্ণ সংস্কার দাবিসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর আরোপিত ১৫ ভাগ ভ্যাটের হার ভোক্তাদের সহনীয় পর্যায়ে হ্রাস করার দাবি জানান।
ফখরুল বলেন, জনগণের প্রতিনিধিত্বহীন পার্লামেন্টে যেখানে কোনো জবাবদিহিতা নেই, সেই পার্লামেন্টে এই বাজেট পেশ করা হয়েছে। এখানে সরকারের দায় কোথায়? জনগণের কাছে সরকারের কোনো দায়বদ্ধতা নেই বলেই এই বঞ্চনার বাজেট জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ৪ লাখ ২ শত ৬৬ কোটি টাকার বাজেটে ১ লাখ ১২ হাজার ২ শত ৭৫ কোটি টাকার ঘাটতি দেখিয়ে যে বিরাট আকারের বাজেট, এই বাজেটের অর্থ কি? এটা নিছক বিরাট-অংকের-বাজেট প্রচারণার ধাপ্পাবাজি ছাড়া আর কিছুই নয়।
এই বাজেট মানুষকে বোকা বানানোর বাজেট, এ বাজেট প্রতারণার বাজেট। একজন অর্থনীতিবিদের মতে, ঘাটতি বাজেটের অর্থ পাওয়া যাবে কি না তা গুরুত্বপূর্ণ নয়, কেননা মূল বাজেটই তো হবে না।
বর্তমান সরকার যে সব মেগা প্রকল্প হাতে নিয়েছে সেগুলোর কাজ ২০১৭-১৮ অর্থবছরের মধ্যে বাস্তবায়ন করাই সরকারের অঘোষিত লক্ষ্য। এর জন্য প্রয়োজন হবে প্রচুর অর্থের। সেই অর্থের যোগান দেখানোর জন্যই জনগণের ওপরে করের বোঝা চাপিয়ে একটি গাণিতিক হিসেবের বাজেট হিসেবে এই বাজেট পেশ করা হয়েছে।
পরবর্তী নির্বাচনের পূর্বে সরকার এইসব প্রকল্পকে নির্বাচনী প্রচারণা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করবে। তারা বলতে চাইবে দেশের একমাত্র সার্থক উন্নয়নকারী তারাই।
তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে এই সূত্রের ৮০শতাংশ প্রবৃদ্ধি একেবারেই অসম্ভব, কল্পনা করাও কঠিন। পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে বাজেট প্রণয়নকারীরা নিছক হিসেবের অংক মেলাতে গিয়ে তাদের পছন্দসই সংখ্যাটি বসিয়ে দিয়েছেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ১৫শতাংশ ভ্যাট আরোপের ফলে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যর দাম কমবে এবং কোনো অবস্থাতেই কোনো পণ্যের দাম বাড়বে না। অর্থমন্ত্রী কিসের ভিত্তিতে এমন উদ্ভট তত্ত্ব উপস্থাপন করেছেন তা আমাদের বোধগম্য নয়। এই কারণেই বোধহয় তিনি বলেছেন, জীবনের শ্রেষ্ঠতম বাজেট দিয়েছি।
তিনি বলেন, কৃষকের ব্যবহৃত জনপ্রিয় কৃষিযন্ত্র ট্রাক্টরের ওপর বাজেটে ১৯ শতাংশ বাড়তি শুল্ক প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। বাজারে এখন ট্রাক্টর বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৮ লাখ থেকে সাড়ে ১২ লাখ টাকায়। এ হিসাবে ট্রাক্টর প্রতি গড় মূল্য দাঁড়ায় ১০ লাখ টাকা। এর সঙ্গে শুল্ক ও ভ্যাটসহ বাড়তি ১৯ শতাংশ যোগ করলে প্রতিটি ট্রাক্টরের মূল্য প্রায় ২ লাখ টাকা বেড়ে যাবে। বাড়তি এ দামের কারণে কৃষক ট্রাক্টর কেনায় আগ্রহ হারাতে পারেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এতে ব্যাহত হবে কৃষির যান্ত্রিকীকরণ, কমে যাবে উৎপাদন। এটা পশ্চাদমুখী পদক্ষেপ। এ কর প্রত্যাহার করার দাবি জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাঈল জবিউল্লাহ।
ইত্তেফাক/