ঢাকা ০৮:৪৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ওয়েবসাইটের স্পিড বাড়ানোর কিছু কৌশল

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্কঃ

অনেকেরই বিভিন্ন রকম ওয়েবসাইট রয়েছে। কারো কারো ওয়েবসাইট অনেক ফাস্ট, আবার কারো কারো ওয়েবসাইট অনেক স্লো। কয়েকটি পদ্ধতি অনুসরণ করলে আপনি নিজেই আপনার ওয়েবসাইট আগের চেয়ে ফাস্ট করে নিতে পারেন। যদিও এটি একটি গোপনীয় টেকনিক যা সহসা কেউ প্রকাশ করে না। চলুন দেখে নেওয়া যাক টেকনিকগুলো সম্পর্কে—

ওয়েবসাইট স্পিড অপটিমাইজেশন: ওয়েবমাস্টার টুলস বা ওয়েবপেজ স্পিড টেস্ট টুলগুলোতে কোনো ওয়েবসাইট স্পিড টেস্ট করার পর কিছু ওয়েবসাইট স্পিড অপটিমাইজেশন টিপস প্রদান করা হয়, যেগুলো বেশিরভাগই কনফিউজিং ব্যাপার, অনেক ব্যবহারকারীর কাছে। আপনার ওয়েবসাইট জাস্ট একটি জিনিস নয়, এটাও মানুষের শরীরের মতো বা কোনো ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশের মতো, এতে অনেক ছোটো বড়ো ব্যাপার রয়েছে যেগুলো একত্রে মিলে আপনার পেজটি সার্ভ করতে সাহায্য করে। একটি পেজ ফাস্ট লোড হওয়ার পেছনে অনেকগুলো ব্যাপার কাজ করতে পারে, এর মধ্যে কোনো একটির ত্রুটি হলে পেজ স্লো লোড হতে পারে। প্রথমত, আপনার ওয়েব হোস্টিং প্রভাইডার ফ্যাক্ট করে, তারপরে আপনার ওয়েবপেজগুলো কতটা অপটিমাইজেশন করা হয়েছে সেটা ম্যাটার করে, এরপরে ক্লায়েন্ট ইন্টারনেট কানেকশন কতটা ফাস্ট সেটা নির্ভর করে, তারপরে ক্লায়েন্ট ডিভাইজটির স্পেসিফিকেশনও ম্যাটার করে। এদের মধ্যে কোনো একটিতে সমস্যা থাকলে ওয়েবপেজ লোড নিতে দেরি হবে।

হোস্টিং প্রোভাইডার নির্বাচন: যদিও পেজ লোডিং স্পিড বাড়াতে হোস্টিং খুব বেশি কিছু নয়, তারপরেও হোস্টিং আবার অনেক কিছুই। আপনি যদি নেক্সট লেভেল স্পিড চান, সেক্ষেত্রে অবশ্যই ক্লাউড হোস্টিং ব্যবহার করতে রেকমেন্ড করব। পেজ কত দ্রুত লোড হবে সেটা নির্ভর করে আপনার পেজটি কত ভালো অপটিমাইজ করেছেন তার উপরে, কিন্তু আপনার সাইট কতদ্রুত পিং করা যাবে সেটা নির্ভর করে আপনার হোস্টিং প্রোভাইডারের ওপর।

সহজ ভাষায় বলতে গেলে, সাইটের রেসপন্স টাইম নির্ভর করে ওয়েব সার্ভারের উপরে। এখন সকলের নিশ্চয় ক্লাউডে টাকা ইনভেস্ট করার মতো সামর্থ্য নেই, কেননা ক্লাউড মোটেও সস্তা নয়। শেয়ার্ড হোস্টিং ব্যবহার করেও ভালো পেজ স্পিড পাওয়া যেতে পারে। তবে ব্যাপারটি হচ্ছে অনেক শেয়ার্ড হোস্টিং কোম্পানি প্যাকেজ খরচ কমাতে একই সার্ভারে অনেক ওয়েবসাইট হোস্ট করে, ফলে সার্ভার অনেক স্লো রেসপন্স প্রদান করে। সঙ্গে কমদামি ওয়েব হোস্টিংগুলোর সার্ভার পোর্ট ১০০ মেগাবিটের হয়ে থাকে, যেটা সিঙ্গেল ওয়েবসাইটের জন্য চলার মতো হলেও একই সার্ভারে শতাধিক সাইটের জন্য মোটেও ভালো পারফরম করবে না।

নিয়মিত সাইট স্পিড টেস্ট করুন: ফাস্ট সার্ভার আপনার সাইটটি দ্রুত কানেক্ট করতে সাহায্য করবে, কিন্তু পেজটি লোড নিতে কত সময় লাগতে পারে সেটা নির্ভর করবে আপনার ওয়েবপেজের ওপরে। একটি ফুল ফাংশনাল সাইট অত্যন্ত ফাস্ট তৈরি করা মুখের কথা নয়। একটি কমার্শিয়াল সাইটে অ্যাডস থাকে, বিভিন্ন সোশ্যাল প্লাগইন ইউজ করা হয়, বিভিন্ন উইজেট থাকে যেগুলোকে বাদ দেওয়া যায় না, কিন্তু এগুলোই বেশিরভাগ স্পিড স্লো করে থাকে। ফাস্ট পেজের অনেক গুণ রয়েছে, মাথায় রাখতে হবে সকলেই হাই স্পিড ব্রডব্যান্ড ইউজ করে না, তাই স্লো ইন্টারনেট কানেকশনের যাতে আপনার সাইট ভালো পারফরম করে সেটা লক্ষণীয়। ইন্টারনেটে বর্তমানে অর্ধেকেরও বেশি ট্র্যাফিক মোবাইল ডিভাইজগুলো থেকে আসে (এই সংখ্যা আরও বাড়ছে), আর ফাস্ট পেজ লোডিং হলে মোবাইল ইউজারগুলোকে ধরে রাখতে পারবেন, না হলে পেজ লোডিং এর জ্বালায় অনেকেই সাইট ত্যাগ করতে বাধ্য হবে।

ওয়েবসাইট স্পিড টেস্ট করার জন্য আরও টুলস রয়েছে সেগুলো প্রত্যেকেই একে একে ইউজ করে দেখতে পারেন। যদিও কোনো টুল থেকে আরেক টুলের রেজাল্ট আলাদা হতে পারে, কিন্তু আপনি মোটামুটি ভালো ধারণা অর্জন করতে পারবেন। পেজ স্পিড নামক গুগলের অফিশিয়াল টুলটি চেক করতে পারেন, যেখানে মোবাইল ও ডেক্সটপ থেকে আপনার সাইট কি রকম আচরণ করছে তা পরিমাপ করতে পারবেন।

পেজ সাইজ কমাতে হবে: আপনার মতো আপনার সাইটও যদি টেক্সটনির্ভর হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে এইচটিএমএল সাইজ কমানোর কিছু নেই, তবে বিশেষ কমপ্রেশন ম্যাথড ইউজ করে এর সাইজ কিছুটা কমিয়ে ইউজার ব্রাউজারে ডেলিভারি করা যেতে পারে। সার্ভার থেকে এইচটিসিসিইএসএস ফাইল মডিফাই করে gzip/deflate compression এনাবল করা যেতে পারে, যদি ওয়ার্ডপ্রেস ইউজ করেন সেক্ষেত্রে ক্যাশিং প্লাগিন থেকেও এই কমপ্রেশন এনাবল করা যায়। অথবা অনেক হোস্টিং প্রভাইডার আগে থেকেই তাদের সার্ভারে এই কমপ্রেশন ম্যাথড এনাবল করে রাখে।

আপনি যদি এটি নিজে থেকে এনাবল না করতে পারেন, আপনার হোস্টিং প্রভাইডারের সাথে যোগাযোগ করুন, তাদের টেক সাপোর্ট টিম থেকে আপনাকে করে দেবে (করে দেওয়ারই কথা!)। ওয়েবপেজের ফাইল সংখ্যা কমাতে হবে, যত কম ফাইল তত কম ডিএনএস লুকাপ এবং ততদ্রুত ওয়েবপেজ! জানি একটি ফুল ওয়েবসাইটে না চাইলেও অনেক ফিচার রাখতে হয়, বিশেষ করে অ্যাডস যেটা না থাকলে ওয়েবসাইটটি রান করে রাখা সম্ভব হবে না। তবে এ অ্যাডস এবং আলাদা মার্কেটিং প্লাগইনগুলো আলাদা আলাদা সার্ভার ব্যবহার করে ফলে ব্রাউজারকে আলাদা আলাদা রিকোয়েস্ট পাঠাতে হয়, এতে পেজ লোডিং টাইম বেড়ে যায়।

ইমেজ সাইজ কমিয়ে ফেলুন: ওয়েবসাইট স্পিড অপটিমাইজেশন করার ক্ষেত্রে ইমেজ সাইজ কমিয়ে ফেলা বেশ দরকারি একটি ব্যাপার। আমি অনেককেই এই ভুলটি করতে দেখেছি এবং পূর্বে আমি নিজেও এই ভুল করতাম, সাইটে জাস্ট আন-কম্প্রেসড ইমেজ আপলোড করতাম। জেপিজি ইমেজগুলোকে ৭০-৭৫ শতাংশ পর্যন্ত কমপ্রেস করা যেতে পারে, এতে ৭০০ কেবি সাইজের ইমেজ ১৫০ কেবি বানানো যেতে পারে খুব একটা কোয়ালিটি লস না করেই।

ওয়ার্ডপ্রেসের জন্য ইমেজ অপটিমাইজেশন অনেক সহজ, কতিপয় প্লাগইন ইউজ করে সহজেই এই কাজটি করা যেতে পারে। তবে এইচটিএমএল সাইটগুলোর জন্য প্রসেসটি একটু ঝামেলার হতে পারে। আপনাকে সার্ভার ফোল্ডার থেকে ইমেজগুলো ডাউনলোড করতে হবে, তারপরে কোনো ইমেজ এডিটিং সফটওয়্যার দিয়ে ইমেজগুলোকে কমপ্রেস করতে হবে, তারপরে আবার সার্ভারে ইমেজগুলোকে আপলোড করতে হবে।

স্ক্রিপ্ট অপটিমাইজ করুন: আপনার পেজে যদি অনেক এক্সটারনাল স্ক্রিপ্ট থাকে, যেমন—নতুন প্লাগইন, গুগল ফন্ট, অ্যাডভার্টাইজমেন্ট, উইজেট, ট্র্যাকিং কোড ইত্যাদি এতে অবশ্যই আপানার পেজটি স্লো লোড হবে। অবশ্যই আপনার অ্যাডস ড্যাশবোর্ড চেক করুন, সেখানে দেখুন কোন অ্যাড ইউনিটে কেমন ক্লিক হচ্ছে। যে ইউনিটগুলোটে একেবারেই ক্লিক আসে না, এক্ষুণি সেগুলোকে রিমুভ করে দিন, বিশ্বাস করুন কম অ্যাডস ইউনিট আপানার পেজ স্পিড অনেক বেশি বাড়িয়ে দিতে পারে।

ব্রাউজার ক্যাশ ব্যবহার করুন: আপনার সাইট যদি অত্যন্ত বেশি ডাইন্যামিক হয়ে থাকে, সেটা আলাদা ব্যাপার তারপরেও ব্রাউজার ক্যাশ টেকনিক ইউজ করতে হবে। যখন ব্রাউজার ক্যাশ সিস্টেম ইউজ করা হবে ব্রাউজার স্ট্যাটিক কন্টেন্টগুলো সার্ভারের কাছে বারবার রিকোয়েস্ট না করে লোকাল সিস্টেম থেকে লোড করবে। এতে প্রথমত, সাইট যেমন ফাস্ট লোড নেবে; দ্বিতীয়ত সার্ভার ব্যান্ডউইথ বাঁচানো সম্ভব হবে। অনেক স্ট্যাটিক ফাইল, যেমন আপনার সাইটের লোগো, সাইটের আইকন, সোশ্যাল মিডিয়া আইকন এগুলো প্রত্যেকটি পেজে একই থাকে, তাহলে বারবার কেন সার্ভার থেকে রিকোয়েস্ট করে লোড করা? —আপনি ওয়ার্ডপ্রেস ইউজ করলে জাস্ট ক্যাশিং প্লাগইন থেকে ব্রাউজার ক্যাশ ফিচারটি এনাবল করতে পারবেন। আলাদা সিএমএস বা অ্যাপাচি সার্ভারের ক্ষেত্রে এইচটিএসিসিইএসএস ফাইল মডিফাই করেও ব্রাউজার ক্যাশ অন করা যায়, জাস্ট গুগল করে দেখে নিন।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির ১৭ বছর পর বিজয় দিবস উদযাপন

ওয়েবসাইটের স্পিড বাড়ানোর কিছু কৌশল

আপডেট সময় ০১:৩৬:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২২

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্কঃ

অনেকেরই বিভিন্ন রকম ওয়েবসাইট রয়েছে। কারো কারো ওয়েবসাইট অনেক ফাস্ট, আবার কারো কারো ওয়েবসাইট অনেক স্লো। কয়েকটি পদ্ধতি অনুসরণ করলে আপনি নিজেই আপনার ওয়েবসাইট আগের চেয়ে ফাস্ট করে নিতে পারেন। যদিও এটি একটি গোপনীয় টেকনিক যা সহসা কেউ প্রকাশ করে না। চলুন দেখে নেওয়া যাক টেকনিকগুলো সম্পর্কে—

ওয়েবসাইট স্পিড অপটিমাইজেশন: ওয়েবমাস্টার টুলস বা ওয়েবপেজ স্পিড টেস্ট টুলগুলোতে কোনো ওয়েবসাইট স্পিড টেস্ট করার পর কিছু ওয়েবসাইট স্পিড অপটিমাইজেশন টিপস প্রদান করা হয়, যেগুলো বেশিরভাগই কনফিউজিং ব্যাপার, অনেক ব্যবহারকারীর কাছে। আপনার ওয়েবসাইট জাস্ট একটি জিনিস নয়, এটাও মানুষের শরীরের মতো বা কোনো ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশের মতো, এতে অনেক ছোটো বড়ো ব্যাপার রয়েছে যেগুলো একত্রে মিলে আপনার পেজটি সার্ভ করতে সাহায্য করে। একটি পেজ ফাস্ট লোড হওয়ার পেছনে অনেকগুলো ব্যাপার কাজ করতে পারে, এর মধ্যে কোনো একটির ত্রুটি হলে পেজ স্লো লোড হতে পারে। প্রথমত, আপনার ওয়েব হোস্টিং প্রভাইডার ফ্যাক্ট করে, তারপরে আপনার ওয়েবপেজগুলো কতটা অপটিমাইজেশন করা হয়েছে সেটা ম্যাটার করে, এরপরে ক্লায়েন্ট ইন্টারনেট কানেকশন কতটা ফাস্ট সেটা নির্ভর করে, তারপরে ক্লায়েন্ট ডিভাইজটির স্পেসিফিকেশনও ম্যাটার করে। এদের মধ্যে কোনো একটিতে সমস্যা থাকলে ওয়েবপেজ লোড নিতে দেরি হবে।

হোস্টিং প্রোভাইডার নির্বাচন: যদিও পেজ লোডিং স্পিড বাড়াতে হোস্টিং খুব বেশি কিছু নয়, তারপরেও হোস্টিং আবার অনেক কিছুই। আপনি যদি নেক্সট লেভেল স্পিড চান, সেক্ষেত্রে অবশ্যই ক্লাউড হোস্টিং ব্যবহার করতে রেকমেন্ড করব। পেজ কত দ্রুত লোড হবে সেটা নির্ভর করে আপনার পেজটি কত ভালো অপটিমাইজ করেছেন তার উপরে, কিন্তু আপনার সাইট কতদ্রুত পিং করা যাবে সেটা নির্ভর করে আপনার হোস্টিং প্রোভাইডারের ওপর।

সহজ ভাষায় বলতে গেলে, সাইটের রেসপন্স টাইম নির্ভর করে ওয়েব সার্ভারের উপরে। এখন সকলের নিশ্চয় ক্লাউডে টাকা ইনভেস্ট করার মতো সামর্থ্য নেই, কেননা ক্লাউড মোটেও সস্তা নয়। শেয়ার্ড হোস্টিং ব্যবহার করেও ভালো পেজ স্পিড পাওয়া যেতে পারে। তবে ব্যাপারটি হচ্ছে অনেক শেয়ার্ড হোস্টিং কোম্পানি প্যাকেজ খরচ কমাতে একই সার্ভারে অনেক ওয়েবসাইট হোস্ট করে, ফলে সার্ভার অনেক স্লো রেসপন্স প্রদান করে। সঙ্গে কমদামি ওয়েব হোস্টিংগুলোর সার্ভার পোর্ট ১০০ মেগাবিটের হয়ে থাকে, যেটা সিঙ্গেল ওয়েবসাইটের জন্য চলার মতো হলেও একই সার্ভারে শতাধিক সাইটের জন্য মোটেও ভালো পারফরম করবে না।

নিয়মিত সাইট স্পিড টেস্ট করুন: ফাস্ট সার্ভার আপনার সাইটটি দ্রুত কানেক্ট করতে সাহায্য করবে, কিন্তু পেজটি লোড নিতে কত সময় লাগতে পারে সেটা নির্ভর করবে আপনার ওয়েবপেজের ওপরে। একটি ফুল ফাংশনাল সাইট অত্যন্ত ফাস্ট তৈরি করা মুখের কথা নয়। একটি কমার্শিয়াল সাইটে অ্যাডস থাকে, বিভিন্ন সোশ্যাল প্লাগইন ইউজ করা হয়, বিভিন্ন উইজেট থাকে যেগুলোকে বাদ দেওয়া যায় না, কিন্তু এগুলোই বেশিরভাগ স্পিড স্লো করে থাকে। ফাস্ট পেজের অনেক গুণ রয়েছে, মাথায় রাখতে হবে সকলেই হাই স্পিড ব্রডব্যান্ড ইউজ করে না, তাই স্লো ইন্টারনেট কানেকশনের যাতে আপনার সাইট ভালো পারফরম করে সেটা লক্ষণীয়। ইন্টারনেটে বর্তমানে অর্ধেকেরও বেশি ট্র্যাফিক মোবাইল ডিভাইজগুলো থেকে আসে (এই সংখ্যা আরও বাড়ছে), আর ফাস্ট পেজ লোডিং হলে মোবাইল ইউজারগুলোকে ধরে রাখতে পারবেন, না হলে পেজ লোডিং এর জ্বালায় অনেকেই সাইট ত্যাগ করতে বাধ্য হবে।

ওয়েবসাইট স্পিড টেস্ট করার জন্য আরও টুলস রয়েছে সেগুলো প্রত্যেকেই একে একে ইউজ করে দেখতে পারেন। যদিও কোনো টুল থেকে আরেক টুলের রেজাল্ট আলাদা হতে পারে, কিন্তু আপনি মোটামুটি ভালো ধারণা অর্জন করতে পারবেন। পেজ স্পিড নামক গুগলের অফিশিয়াল টুলটি চেক করতে পারেন, যেখানে মোবাইল ও ডেক্সটপ থেকে আপনার সাইট কি রকম আচরণ করছে তা পরিমাপ করতে পারবেন।

পেজ সাইজ কমাতে হবে: আপনার মতো আপনার সাইটও যদি টেক্সটনির্ভর হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে এইচটিএমএল সাইজ কমানোর কিছু নেই, তবে বিশেষ কমপ্রেশন ম্যাথড ইউজ করে এর সাইজ কিছুটা কমিয়ে ইউজার ব্রাউজারে ডেলিভারি করা যেতে পারে। সার্ভার থেকে এইচটিসিসিইএসএস ফাইল মডিফাই করে gzip/deflate compression এনাবল করা যেতে পারে, যদি ওয়ার্ডপ্রেস ইউজ করেন সেক্ষেত্রে ক্যাশিং প্লাগিন থেকেও এই কমপ্রেশন এনাবল করা যায়। অথবা অনেক হোস্টিং প্রভাইডার আগে থেকেই তাদের সার্ভারে এই কমপ্রেশন ম্যাথড এনাবল করে রাখে।

আপনি যদি এটি নিজে থেকে এনাবল না করতে পারেন, আপনার হোস্টিং প্রভাইডারের সাথে যোগাযোগ করুন, তাদের টেক সাপোর্ট টিম থেকে আপনাকে করে দেবে (করে দেওয়ারই কথা!)। ওয়েবপেজের ফাইল সংখ্যা কমাতে হবে, যত কম ফাইল তত কম ডিএনএস লুকাপ এবং ততদ্রুত ওয়েবপেজ! জানি একটি ফুল ওয়েবসাইটে না চাইলেও অনেক ফিচার রাখতে হয়, বিশেষ করে অ্যাডস যেটা না থাকলে ওয়েবসাইটটি রান করে রাখা সম্ভব হবে না। তবে এ অ্যাডস এবং আলাদা মার্কেটিং প্লাগইনগুলো আলাদা আলাদা সার্ভার ব্যবহার করে ফলে ব্রাউজারকে আলাদা আলাদা রিকোয়েস্ট পাঠাতে হয়, এতে পেজ লোডিং টাইম বেড়ে যায়।

ইমেজ সাইজ কমিয়ে ফেলুন: ওয়েবসাইট স্পিড অপটিমাইজেশন করার ক্ষেত্রে ইমেজ সাইজ কমিয়ে ফেলা বেশ দরকারি একটি ব্যাপার। আমি অনেককেই এই ভুলটি করতে দেখেছি এবং পূর্বে আমি নিজেও এই ভুল করতাম, সাইটে জাস্ট আন-কম্প্রেসড ইমেজ আপলোড করতাম। জেপিজি ইমেজগুলোকে ৭০-৭৫ শতাংশ পর্যন্ত কমপ্রেস করা যেতে পারে, এতে ৭০০ কেবি সাইজের ইমেজ ১৫০ কেবি বানানো যেতে পারে খুব একটা কোয়ালিটি লস না করেই।

ওয়ার্ডপ্রেসের জন্য ইমেজ অপটিমাইজেশন অনেক সহজ, কতিপয় প্লাগইন ইউজ করে সহজেই এই কাজটি করা যেতে পারে। তবে এইচটিএমএল সাইটগুলোর জন্য প্রসেসটি একটু ঝামেলার হতে পারে। আপনাকে সার্ভার ফোল্ডার থেকে ইমেজগুলো ডাউনলোড করতে হবে, তারপরে কোনো ইমেজ এডিটিং সফটওয়্যার দিয়ে ইমেজগুলোকে কমপ্রেস করতে হবে, তারপরে আবার সার্ভারে ইমেজগুলোকে আপলোড করতে হবে।

স্ক্রিপ্ট অপটিমাইজ করুন: আপনার পেজে যদি অনেক এক্সটারনাল স্ক্রিপ্ট থাকে, যেমন—নতুন প্লাগইন, গুগল ফন্ট, অ্যাডভার্টাইজমেন্ট, উইজেট, ট্র্যাকিং কোড ইত্যাদি এতে অবশ্যই আপানার পেজটি স্লো লোড হবে। অবশ্যই আপনার অ্যাডস ড্যাশবোর্ড চেক করুন, সেখানে দেখুন কোন অ্যাড ইউনিটে কেমন ক্লিক হচ্ছে। যে ইউনিটগুলোটে একেবারেই ক্লিক আসে না, এক্ষুণি সেগুলোকে রিমুভ করে দিন, বিশ্বাস করুন কম অ্যাডস ইউনিট আপানার পেজ স্পিড অনেক বেশি বাড়িয়ে দিতে পারে।

ব্রাউজার ক্যাশ ব্যবহার করুন: আপনার সাইট যদি অত্যন্ত বেশি ডাইন্যামিক হয়ে থাকে, সেটা আলাদা ব্যাপার তারপরেও ব্রাউজার ক্যাশ টেকনিক ইউজ করতে হবে। যখন ব্রাউজার ক্যাশ সিস্টেম ইউজ করা হবে ব্রাউজার স্ট্যাটিক কন্টেন্টগুলো সার্ভারের কাছে বারবার রিকোয়েস্ট না করে লোকাল সিস্টেম থেকে লোড করবে। এতে প্রথমত, সাইট যেমন ফাস্ট লোড নেবে; দ্বিতীয়ত সার্ভার ব্যান্ডউইথ বাঁচানো সম্ভব হবে। অনেক স্ট্যাটিক ফাইল, যেমন আপনার সাইটের লোগো, সাইটের আইকন, সোশ্যাল মিডিয়া আইকন এগুলো প্রত্যেকটি পেজে একই থাকে, তাহলে বারবার কেন সার্ভার থেকে রিকোয়েস্ট করে লোড করা? —আপনি ওয়ার্ডপ্রেস ইউজ করলে জাস্ট ক্যাশিং প্লাগইন থেকে ব্রাউজার ক্যাশ ফিচারটি এনাবল করতে পারবেন। আলাদা সিএমএস বা অ্যাপাচি সার্ভারের ক্ষেত্রে এইচটিএসিসিইএসএস ফাইল মডিফাই করেও ব্রাউজার ক্যাশ অন করা যায়, জাস্ট গুগল করে দেখে নিন।