অন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলে অবস্থিত ভারতের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি কাশ্মীর। আশির দশকে ১৫টি সিনেমা হল ছিল এই ভূস্বর্গে। তার মধ্যে নয়টি শ্রীনগরে। কিন্তু জঙ্গিদের হুমকি ও হামলায় বন্ধ হয়ে যায় সেগুলো। প্রায় দুই দশক পরে বন্ধ হয়ে যাওয়া সে হলগুলো আবার চালু করতে উদ্যোগী হয়েছেন শ্রীনগরের বিজয় ধর নামে এক সিনেমাপ্রেমী। আশির দশকে যিনি রাজ্যে ‘ব্রডওয়ে’ নামে একটি সিনেমা হলের মালিক ছিলেন। তিনি উদ্যোগী হওয়ার ফলে আবার রুপালি পর্দায় সিনেমা দেখার সুযোগ পেতে পারেন কাশ্মীরের বাসিন্দারা।
ছয় বছর পরে ১৯৯৬ সালে ভারত সরকারের আশ্বাসে তিনটি সিনেমা হলে মালিকরা আবার তাদের কার্যক্রম শুরু করে। সিনেমা দেখা শুরু করে কাশ্মীরের শ্রীনগরের বাসিন্দারা। কিন্তু তিন বছর বাদে ১৯৯৯ সালে ‘রিগ্যাল’ নামে একটি সিনেমা হলে হামলা চালায় জঙ্গিরা। তাদের গুলিতে নিহত হন একজন দর্শক। যার কারনে আবার বন্ধ হয়ে যায় সিনেমা হলগুলো।
প্রায় ২০ বছর পর আবার সাহস করে উদ্যোগ নিয়েছেন বিজয় ধর নামে ওই ব্যক্তি। যিনি মাসে অন্তত একবার শত শত মাইল পাড়ি দিয়ে কাশ্মীর থেকে দিল্লি গিয়ে সিনেমা দেখে আসেন। তার কথা, ‘দেশের অন্য প্রান্তের মানুষেরা বিনোদনের যে সুযোগ সুবিধা পান, তা শ্রীনগরেও থাকা উচিত। এ জন্য আবার সিনেমা হল চালুর উদ্যোগ নেওয়া। কেউ যদি সাহস করে হলে না আসেন বা আপত্তি থাকে, তাতে সমস্যা নেই। যারা আসতে আগ্রহী, তাদের সুযোগ সুবিধা দেওয়া আমাদের কর্তব্য।’
একুশ শতকে এসে এখনও কাশ্মীর রাজ্যটিতে সিনেমাবিরোধী প্রচার চালান মিরওয়াইজ নামে একজন হুরিয়ত নেতা। কিন্তু বিজয় ধর তাতে কান দিতে নারাজ। তিনি মনে করেন, নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কাজ করলে কোনো কাজই সফল হয় না। তবে বিজয় ধর সফল হলে কাশ্মীরের রুপালি পর্দায় আবার দাপিয়ে বেড়াতে পারবেন দেশি-বিদেশি তারকারা। যদি আবার কোনো জঙ্গি হামলা না হয়।
বন্ধ হওয়ার আগে রাজ্যের সিনেমা হলগুলোতে নাকি ইংরেজি ছবি দেখানো হতো। দিল্লি, মুম্বাইতে যাওয়ার আগে ছবিগুলো আগে কাশ্মীরের হলগুলোতে পৌছে যেত। এসব স্মৃতির কথা জানান মনজুর খান নামে শ্রীনগরের এক বাসিন্দা। ‘রিগ্যাল’ সিনেমা হলে হামলার ঘটনাও তার স্পষ্ট মনে আছে। সে সময় তিনি নাকি লুকিয়ে সিনেমা দেখতে যেতেন। তাই হল চালুর খবরে আবার আশায় বুক বাঁধছেন মনজুরের মতো কাশ্মীরের হাজারো সিনেমাপ্রেমী।