আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
জম্মু ও কাশ্মীরের বর্তমান পরিস্থিতিকে স্পর্শকাতর উল্লেখ করে ভারত সরকারকে সতর্ক করেছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। শুনানি দুই সপ্তাহের জন্য পিছিয়ে দিয়ে আজ মঙ্গলবার আদালত বলেন, আমরা স্বাভাবিক অবস্থা দেখতে চাই। কিন্তু রাতারাতি কিছু করা সম্ভব না। কেউ জানে না সেখানে কী ঘটছে। সরকারের এটা বুঝতে হবে, এটা খুবই স্পর্শকাতর ইস্যু। খবর এনডিটিভির।
এ উপলক্ষে সেখানে ইন্টারনেট ও মোবাইল নেটওয়ার্ক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় ভারত সরকার। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে বলা হয়, যোগাযোগ পরিষেবা এতটাই নাজুক যে সেনারাও তাদের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারছেন না।
আদালতের এমন সতর্কতার জবাবে সরকারপক্ষ বলছে, পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে, শিগগিরই শান্ত অবস্থা ফিরে আসবে। শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান আইনজীবী অ্যাটর্নি জেনারেল কেকে ভেনুগোপাল একথা বলেন।
ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদের আওতায় কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে কংগ্রেসকর্মী তেহসিন পুনাওয়ালা পিটিশনটি করেন। তিন বিচারপতির বেঞ্চে শুনানি হয়। তাঁরা হলেন অরুণ মিশ্র, এম আর শাহ ও অজয় রাস্তোগি।
এ ছাড়া কাশ্মীর টাইমসের নির্বাহী সম্পাদক অনুরাধা ভাসিন অন্য একটি মামলা করেছেন। আলোচিত ৩৭০ অনুচ্ছেদ সম্পর্কিত সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর কাশ্মীরে কর্মরত সাংবাদিকদের ওপর যে বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে, তা প্রত্যাহার করার কথা বলা হয়েছে ওই মামলায়। ভারতের সুপ্রিম কোর্টে সে মামলা দ্রুত শুনানির জন্য বলা হতে পারে। ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
কংগ্রেসকর্মী তেহসিন পুনাওয়ালা এর আগে জানান, তিনি ৩৭০ অনুচ্ছেদ সম্পর্কে কোনো মতামত দিচ্ছেন না। কিন্তু কাশ্মীরে জারি করা কারফিউ বা বিধিনিষেধ প্রত্যাহার চাইছেন। একই সঙ্গে জম্মু ও কাশ্মীরজুড়ে যেভাবে টেলিযোগাযোগ, ইন্টারনেট ও টিভি নিউজ চ্যানেল সম্প্রচার বন্ধ রাখা হয়েছে, সে নির্দেশ তুলে নেওয়া হোক।
এ ছাড়া জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ, মেহবুবা মুফতিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাকে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট মুক্তি দেওয়ার আদেশ দিক—এমনটাই বলা হয় পুনাওয়ালার আবেদনে। পুনাওয়ালার দাবি, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার যে সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছে, তা সংবিধানের ১৯ ও ২১ নম্বর অনুচ্ছেদের পরিপন্থী।