ঢাকা ১০:৫৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কিংবদন্তি স্পিনার শেন ওয়ার্ন আর নেই

খেলাধূলা ডেস্কঃ

অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি ক্রিকেটার এবং সর্বকালের সেরা লেগ স্পিনার শেন ওয়ার্ন (৫২) আর নেই। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন তিনি।

এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে তার ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠান। ফক্স নিউজ এমনটাই জানিয়েছে।

বিবৃতি অনুযায়ী, থাইল্যান্ডের কোহ সামুইয়ে তার ভিলায় নিস্তেজ অবস্থায় পাওয়া যায়। চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা সত্ত্বেও তাকে বাঁচানো যায়নি। জানা গেছে, হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে।

মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট জোড়া ধাক্কা খেলো। এর আগে আজ সকালে মারা গেছেন আরেক অজি কিংবদন্তি রড মার্শ। গত সপ্তাহেই তার হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার।  

অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটে ওয়ার্নের অবদান অবিস্মরণীয়। তাকে বলা হয় সর্বকালের অন্যতম সেরা বোলার। ১৫ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ৭০৯টি টেস্ট উইকেট নিয়ে অজিদের জার্সিতে সর্বোচ্চ এবং মুত্তিয়া মুরালিধরনের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি তিনি।  

ওয়ানডে ক্রিকেটে ২৯৩টি উইকেট নিয়েছিলেন ওয়ার্ন। অস্ট্রেলিয়ার জার্সিতে সবমিলিয়ে ৩০০-এর বেশি ম্যাচ খেলার কীর্তি ছিল তার। অ্যাশেজের ইতিহাসেও সর্বোচ্চ উইকেট তার দখলে। এমনকি ‘শতাব্দীর সেরা বল’-এর কীর্তি গড়েছিলেন তিনি।

১৯৯২ সালে সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে টেস্ট অভিষেক হওয়ার পর দলের মূল অস্ত্র হয়ে উঠেছিলেন তিনি। ১৯৯৯ বিশ্বকাপজয়ী অস্ট্রেলিয়া দলের সদস্য ছিলেন এই ডানহাতি লেগ স্পিনার। এছাড়া ১৯৯৩ থেকে ২০০৩, এই ১০ বছরে পাঁচবার অ্যাশেজজয়ী অজি দলের সদস্য ছিলেন তিনি।

ক্রিকেট মাঠে তার ‘ঘূর্ণিজাদু’ ছিল সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর ‘ক্রিকেট মোমেন্ট’-এর একটি। বল নিয়ে তার কারিকুরি তখনকার ব্যাটারদেরই মুগ্ধ করতো, দর্শকদের জন্য তা যে আরও আকর্ষণীয় ছিল, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

১৯৯২ থেকে ২০০৭; এই ১৫ বছরে ক্যারিয়ারে অসামান্য অর্জনের জন্য ওয়ার্নকে উইজডেনের ‘শতাব্দী সেরা পাঁচ ক্রিকেটারের একজন’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়।  

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর নিজের নেতৃত্বগুণের দারুণ প্রদর্শনী দেখান ওয়ার্ন। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল)-এর ফ্র্যাঞ্চাইজি রাজস্থান রয়্যালসের খেলোয়াড় ও কোচ দুই ভূমিকাতেই দেখা যায় তাকে। শুধু কি তাই, টুর্নামেন্টের প্রথম আসরেই দলকে শিরোপাও জেতান তিনি।  

শুধু মাঠেই নয়, মাঠের বাইরেও বর্ণিল জীবন ছিল ওয়ার্নারের। খেলোয়াড়ি জীবন ও কোচিং ছেড়ে ক্রিকেট ধারাভাষ্যে নাম লেখান তিনি। অবাক করা বিষয় হলো, নতুন ভূমিকাতেও ওয়ার্ন দারুণ সফল ছিলেন। ক্রিকেটের সবচেয়ে ‘ধারালো’ বিশ্লেষকদের একজন ছিলেন তিনি।  

তবে ওয়ার্নের জীবন শুধুমাত্র ‘সাফল্যমণ্ডিত’-ই ছিল না; ছিল অসংখ্য বিতর্কও। বেশ কয়েকবার নেতিবাচক কারণে শিরোনামে উঠেছিল তার নাম; বিশেষ করে ‘নারীঘটিত’ ব্যাপারে। তবে মাঠের বাইরের জীবন এক পাশে সরিয়ে রাখলে সত্যিকার অর্থে ওয়ার্ন ছিলেন ‘চ্যাম্পিয়ন ক্রিকেটার’।  ক্রিকেটবিশ্ব তাকে কিছুতেই ভুলতে পারবে না; তার অসামান্য সব কীর্তি ভুলতেও দেবে না।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির ১৭ বছর পর বিজয় দিবস উদযাপন

কিংবদন্তি স্পিনার শেন ওয়ার্ন আর নেই

আপডেট সময় ০৩:৫৯:৪৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ মার্চ ২০২২

খেলাধূলা ডেস্কঃ

অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি ক্রিকেটার এবং সর্বকালের সেরা লেগ স্পিনার শেন ওয়ার্ন (৫২) আর নেই। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন তিনি।

এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে তার ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠান। ফক্স নিউজ এমনটাই জানিয়েছে।

বিবৃতি অনুযায়ী, থাইল্যান্ডের কোহ সামুইয়ে তার ভিলায় নিস্তেজ অবস্থায় পাওয়া যায়। চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা সত্ত্বেও তাকে বাঁচানো যায়নি। জানা গেছে, হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে।

মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট জোড়া ধাক্কা খেলো। এর আগে আজ সকালে মারা গেছেন আরেক অজি কিংবদন্তি রড মার্শ। গত সপ্তাহেই তার হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার।  

অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটে ওয়ার্নের অবদান অবিস্মরণীয়। তাকে বলা হয় সর্বকালের অন্যতম সেরা বোলার। ১৫ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ৭০৯টি টেস্ট উইকেট নিয়ে অজিদের জার্সিতে সর্বোচ্চ এবং মুত্তিয়া মুরালিধরনের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি তিনি।  

ওয়ানডে ক্রিকেটে ২৯৩টি উইকেট নিয়েছিলেন ওয়ার্ন। অস্ট্রেলিয়ার জার্সিতে সবমিলিয়ে ৩০০-এর বেশি ম্যাচ খেলার কীর্তি ছিল তার। অ্যাশেজের ইতিহাসেও সর্বোচ্চ উইকেট তার দখলে। এমনকি ‘শতাব্দীর সেরা বল’-এর কীর্তি গড়েছিলেন তিনি।

১৯৯২ সালে সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে টেস্ট অভিষেক হওয়ার পর দলের মূল অস্ত্র হয়ে উঠেছিলেন তিনি। ১৯৯৯ বিশ্বকাপজয়ী অস্ট্রেলিয়া দলের সদস্য ছিলেন এই ডানহাতি লেগ স্পিনার। এছাড়া ১৯৯৩ থেকে ২০০৩, এই ১০ বছরে পাঁচবার অ্যাশেজজয়ী অজি দলের সদস্য ছিলেন তিনি।

ক্রিকেট মাঠে তার ‘ঘূর্ণিজাদু’ ছিল সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর ‘ক্রিকেট মোমেন্ট’-এর একটি। বল নিয়ে তার কারিকুরি তখনকার ব্যাটারদেরই মুগ্ধ করতো, দর্শকদের জন্য তা যে আরও আকর্ষণীয় ছিল, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

১৯৯২ থেকে ২০০৭; এই ১৫ বছরে ক্যারিয়ারে অসামান্য অর্জনের জন্য ওয়ার্নকে উইজডেনের ‘শতাব্দী সেরা পাঁচ ক্রিকেটারের একজন’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়।  

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর নিজের নেতৃত্বগুণের দারুণ প্রদর্শনী দেখান ওয়ার্ন। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল)-এর ফ্র্যাঞ্চাইজি রাজস্থান রয়্যালসের খেলোয়াড় ও কোচ দুই ভূমিকাতেই দেখা যায় তাকে। শুধু কি তাই, টুর্নামেন্টের প্রথম আসরেই দলকে শিরোপাও জেতান তিনি।  

শুধু মাঠেই নয়, মাঠের বাইরেও বর্ণিল জীবন ছিল ওয়ার্নারের। খেলোয়াড়ি জীবন ও কোচিং ছেড়ে ক্রিকেট ধারাভাষ্যে নাম লেখান তিনি। অবাক করা বিষয় হলো, নতুন ভূমিকাতেও ওয়ার্ন দারুণ সফল ছিলেন। ক্রিকেটের সবচেয়ে ‘ধারালো’ বিশ্লেষকদের একজন ছিলেন তিনি।  

তবে ওয়ার্নের জীবন শুধুমাত্র ‘সাফল্যমণ্ডিত’-ই ছিল না; ছিল অসংখ্য বিতর্কও। বেশ কয়েকবার নেতিবাচক কারণে শিরোনামে উঠেছিল তার নাম; বিশেষ করে ‘নারীঘটিত’ ব্যাপারে। তবে মাঠের বাইরের জীবন এক পাশে সরিয়ে রাখলে সত্যিকার অর্থে ওয়ার্ন ছিলেন ‘চ্যাম্পিয়ন ক্রিকেটার’।  ক্রিকেটবিশ্ব তাকে কিছুতেই ভুলতে পারবে না; তার অসামান্য সব কীর্তি ভুলতেও দেবে না।