মনির খানঁঃ
১৪৫৮ সালে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের মহারাজার খনন করা কুমিল্লা নগরীর ঐতিহ্যবাহী ধর্মসাগর দীঘিতে বড়শিতে ধরা পড়েছে ৪০ কেজি ওজনের মাছ ‘ব্ল্যাক কার্প’। বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৮টায় দীঘির পশ্চিম অংশে ব্যবসায়ী মো. জায়েদ উল্লাহর বড়শিতে মাছটি ধরা পড়ে।
মুহূর্তেই বিশাল এই মাছ ঘরা পড়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে উৎসুক মানুষ ওই মাছটি দেখতে আসেন। খবর পেয়ে স্থানীয় এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিনও ওই মাছ দেখতে যান। একপর্যায়ে এমপিকে মাছটি উপহার দেন জায়েদ উল্লাহ। এ দীঘিতে এতো বেশি ওজনের মাছ কখনো ধরা পড়তে দেখেন নি বলে জানান স্থানীয়রা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে কুমিল্লা নগরীর প্রাণকেন্দ্র কান্দিরপাড় ও বাদুড়তলা এলাকা ঘিরে ছোটরা মৌজায় অবস্থিত ধর্মসাগরের পশ্চিম পাশে শখের বশে বড়শি ফেলেন ব্যবসায়ী মো. জায়েদ উল্লাহ। রাত সাড়ে ৮টায় হঠাৎ তার বড়শি নিয়ে টানাটানি শুরু করে মাছ। কোনোভাবেই বড়শিতে মাছটি ধরে রাখা যাচ্ছিল না। পরে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে পাড়ের কিনারায় এনে দেখতে পান বিশাল এক ব্ল্যাক কার্প মাছ। বিষয়টি মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। অনেকে ফেসবুকে লাইভ করেন। কুমিল্লা সদর আসনের এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিন ওই মাছটি দেখতে যান। পরে ওই ব্যবসায়ী তাকে মাছটি উপহার দেন।
ধর্মসাগর দীঘির ইজারাদারদের একজন কামরুজ্জামান মারুফ সাংবাদিকদের বলেন, এ দীঘির পানি শুকানো বা অপসারণ করে মাছ ধরা যায় না। জাল দিয়ে ও বড়শি ফেলে মাছ ধরতে হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর আমরা যারা ইজারা নিয়েছি, তারা শখের বশে বড়শি ফেলি। এরই মধ্যে মো. জায়েদ উল্লাহর বড়শিতে ধরা পড়ে ৪০ কেজি ওজনের ব্ল্যাক কার্প। ওই খবর পেয়ে এমপি মহোদয় মাছটি দেখতে আসেন। পরে তাকে মাছটি উপহার দেওয়া হয়। তিনি উপহার হিসেবে মাছটি নিতে চাননি, দাম দিতে চেয়েছেন। আমরা সবাই মিলে তাকে মাছটি দিয়েছি।
কুমিল্লা নাগরিক ফোরামের সভাপতি কামরুল আহসান বাবুল বলেন, এ ধরনের বড় মাছ সাধারণত জলাশয় কিংবা নদীতে ধরা পড়ে। বড়শিতে এত বড় মাছ ধরা পড়া খুব একটা শুনিনি।
ইতিহাসবিদ আহসানুল কবীর বলেন, ১৪৫৮ সালে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের মহারাজা এ অঞ্চলের মানুষের পানির চাহিদা মেটাতে ২৩ দশমিক ১৮ একর জমিতে এই বিশাল দীঘি খনন করেন। রাজা ধর্মমাণিক্যের নামানুসারে এই দীঘির নাম করা হয় ধর্মসাগর। কুমিল্লার অন্যতম পর্যটন স্পটও এটি। বড়শিতে ধরা পরা মাছটি অনেক পুরানো।