বিশেষ প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) শাখা ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি ঘোষণার প্রায় ছয় মাস পর শাখা ছাত্রলীগের ১৬১ সদস্য বিশিষ্ট প্রথম পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল বুধবার মধ্যরাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ কমিটি ঘোষণা করা হয়।
এদিকে, ছাত্রত্ব বহু আগে শেষ হয়েছে এমন বেশ কয়েকজনও রয়েছেন পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে। এ ছাড়া বিভিন্ন সময় শিক্ষক লাঞ্ছনা, সাংবাদিক লাঞ্ছনা, দলীয় নেতাকর্মীদের মারধর, চাঁদাবাজিসহ কমিটিতে স্থান পাওয়া অনেকের বিরুদ্ধে মাদক সংশ্লিষ্টতারও অভিযোগ রয়েছে।
জানা যায়, শাখা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সহসভাপতি পদে ৪০ জন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ৯ জন, সাংগঠনিক সম্পাদক ৯ জন, সহসম্পাদক ২১ জন, সদস্য ২১ জনসহ বিভিন্ন পদে মোট ১৬১ জন শিক্ষার্থীকে অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে।
অন্যদিকে, পূর্বে ঘোষিত আংশিক কমিটির দুইজন সহসভাপতি এবং একজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদককে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে রাখা হয়নি। বিশ্লেষণ করে দেখা যায় ৪০ জন সহসভাপতির মধ্যে ৯ জনেরই ছাত্রত্ব অনেক আগেই শেষ হয়েছে।
এ ছাড়া কমিটিতে স্থান পাওয়া বেশ কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে শিক্ষক লাঞ্ছনা, সাংবাদিক লাঞ্ছনা, শিক্ষার্থীদের মারধর এবং চাঁদাবাজিসহ মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদ পাওয়া বায়েজিদ ইসলাম গল্পের বিরুদ্ধে চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারি এক শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ রয়েছে।
ওই ঘটনায় তাকে ৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কারও করা হয়েছিল। সহসভাপতি পদ পাওয়া দ্বীন ইসলাম লিখন এবং একই পদে থাকা আরাফত হোসেনের বিরুদ্ধে গত ১৩ মে শাখা ছাত্রলীগের বার্ষিক সম্মেলনে বেশ কয়েকজন সাংবাদিক নেতাকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ রয়েছে। ওই ঘটনায় ছাত্রলীগের কেন্দ্র থেকে ঘটনার দিন রাতেই তাদেরকে কারণ দর্শানো নোটিশও দেওয়া হয়।
সাংগঠনিক সম্পাদক পদে থাকা সাইফুল হাসান সাদী, গোলাম দস্তগীর ফরহাদের বিরুদ্ধে এক ছাত্রকে মারধর করে চাঁদাবাজি করার অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া সাদীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় সাংবাদিকদের হুমকি এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের মারধরের অভিযোগ রয়েছে।
জানা যায়, সাদী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম মাজেদের অনুসারী। এ ছাড়া পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক ইমাম হোসেনের প্রতিক্রিয়াশীল রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে দলীয় নেতাকর্মীরাই অভিযোগ করেন। এ ছাড়া বেশ কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর মাদক সংশ্লিষ্টতা, দলীয় নেতাকর্মীদের মারধর, জুনিয়র শিক্ষার্থীকে র্যাগ দেওয়াসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ বলেন, “আমরা যাচাই বাছাই করে কেন্দ্রীয় কমিটিকে সুপারিশ করেছি। “
ঘোষিত কমিটির নেতার বিরুদ্ধে এমন গুরুতর অভিযোগের পরও কীভাবে তারা কমিটিতে স্থান পেলেন- এমন প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন বলেন, “আমরা যাচাই বাছাই করে কমিটি দিয়েছি। কারো বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আমরা পাইনি। এমন অভিযোগ থাকলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। “