বিনোদন;
সারাদেশে ক্যাসিনো কাণ্ড নিয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর বিভিন্ন মহলে গুঞ্জনের পাশাপাশি চলচ্চিত্রপাড়াতেও সারাদিনের অন্যতম আলোচনা ছিল এই ক্যাসিনো কাণ্ড। উল্লেখ্য, দৈনিক ইত্তেফাকেই প্রথম সাম্প্রতিক এই আলোচিত ক্যাসিনো নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ পায়। এফডিসির বিভিন্ন ফ্লোরে ক্যাসিনো কাণ্ডে সম্পৃক্ততার যে খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে তা নিয়ে কানাকানি করছেন একাধিক চিত্রতারকা। সম্প্রতি ২টি চলচ্চিত্রের কাজে টলিউডের একাধিক তারকা এখন ঢাকার এফডিসি চত্ত্বরে। তারাও কৌতুহলি হয়ে জানতে চাইছেন এসব মুখরোচক খবরের তারকাদের নাম।
উল্লেখ্য, যুবলীগ নেতা জি কে শামীম গ্রেপ্তারের পর প্রকাশ্যে আসে কয়েকজন নায়িকার নাম। তবে এর প্রমাণ বা সত্যতা এখনো চূড়ান্ত নয় বলেই বিষয়গুলো ‘গুঞ্জন’ নামের ব্র্যাকেটেই জমা রয়েছে।
আর এই গুঞ্জনের প্রেক্ষিতেই চিত্রনায়িকা রত্না, মিষ্টি জান্নাত, শিরিন শীলা তাদের প্রতিবাদ ও খবরের বিষয়গুলো অস্বীকার করে নিজেদের বক্তব্য ফেসবুকে জানিয়েছেন। এক্ষেত্রে চিত্রনায়িকা রত্না তার ফেসবুকে দীর্ঘ স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘আমি তদন্ত কর্মকর্তাদের নিকট আকুল আবেদন করছি জি কে শামীম নামক লোকটির সঙ্গে জড়িত নায়িকাদের সঠিক নাম বের করে আনার জন্য। আর না হয় এভাবে তিন নায়িকা সাত নায়িকা। সন্দেহে অনেক হলদে সাংবাদিক নিজেদের ফায়দা লোটার চেষ্টায় মগ্ন। আমি শতভাগ নিশ্চিত যে সকল খবর ছাপা হচ্ছে তারা কোনোরকম প্রমাণ ছাড়াই করছেন। আমি আশা করবো জুয়া খেলার যে অভিযান দেশে চলছে, এর সঙ্গে মানুষের মান নিয়ে কিছু সাংবাদিক বরাবরই জুয়া খেলে ফায়দা লোটার চেষ্টা করে। সরকার এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের নিকট আকুল আবেদন আপনারা এই জি কে শামীমকে নিয়ে জড়িয়ে যারা মিথ্যা খবর ছাপিয়ে কিছু নির্দোষ শিল্পীর মান নষ্ট করেছে তাদের আইনগত ব্যবস্থা নেবেন, কারণ তারা শুধু ভুল তথ্য ছাপায় তা নয়, অন্তরালে ওই নায়িকার সঙ্গে অনেক অপকর্মে ব্যর্থ হয়ে পরে নির্দোষকে দোষী করে আর দোষীরা এই সুযোগে পার পেয়ে যায়। আমি সকল প্রকৃত সাংবাদিক ভাইদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলছি, আপনারাও এই মূর্খ হলদে সাংবাদিকগুলোকে চিহ্নিত করুন এবং প্রতিবাদ করুন।
আমি লক্ষ্য করেছি, প্রথমদিন জি কে শামীম এই নামটির সঙ্গে অন্য পাঁচজন নায়িকার নাম সম্পৃক্ত করা হয়। পরদিন অন্য তিনজন, এগুলো দেখেই বোঝা যাচ্ছে আনুমানিক ঢিল। এগুলোতে জানি না কী লাভ আপনাদের। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স করে বের হয়েছি। আইন বিষয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করে বর্তমানে আইন চর্চায় ব্যস্ত। আর এসব ডিগ্রি আমি নিয়েছি চলচ্চিত্রে এসে। আমার চলচ্চিত্রে কাজ করে অন্য কোনোদিকে দৌড়ানোর সময় কখনো ছিল না। চলচ্চিত্র সম্পৃক্ত ব্যক্তিবর্গ, আত্মীয়, বন্ধুমহল, সকলেই আমার সম্পর্কে জানেন। যদিও আপনাদের এই বিভ্রান্তিকর নিউজ আমার বা আমার আত্মীয়, পরিবারের মনে কোনো বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারেনি। তবুও এমন ভুল তথ্য আপনাদের পবিত্র কলম দিয়ে কেন ছাপাবেন? আমি অনেক অনুষ্ঠানে গিয়েছি, কাজের সুবাদে অনেক জায়গায় যাওয়া হয়, যদি একদিন জি কে শামীমকে কোথাও দেখতাম সকলকে জানাতাম। অমুক জায়গায় দেখেছি। এটা দোষের কিছু নয়। কারণ সে জুয়ারি কিংবা তার কত কোটি টাকা তার আছে এটাতো আর আমি জানতাম না, এতে আমার দোষ কোথায় স্বীকার করতে। কিন্তু জীবনে কোনোদিন তার নামটি শুনিনি আমি। কোনোদিন কোনো অনুষ্ঠানেও দেখা হয়নি। কিন্তু কিছু মিডিয়া আমার ছবি না জেনে ব্যবহার করছে। আমি তাদের চ্যালেঞ্জ করলাম, আমি জি কে শামীমকে চিনি না। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে সরকারের নিকট এবং প্রশাসনের নিকট সহায়তা চাইছি। এর সুষ্ঠু তদন্তে ফলাফল বের করে যেন দ্রুত এর একটা সমাধান করা হয়।’
অন্যদিকে মিষ্টি জান্নাত লেখেন, ‘আমি জি কে শামীম নামের কাউকে চিনি না, যা ছড়ানো হচ্ছে সম্পূর্ণ বানোয়াট গল্প।’
এছাড়াও প্রমাণ চেয়ে মিষ্টি জান্নাত বলেন, ‘আমি কখনো এসব কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলাম না। উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আমার বিরুদ্ধে এসব রটানো হচ্ছে। যারা অভিযোগ করছেন যদি তারা প্রমাণ না দিতে পারেন তাহলে আমি অ্যাকশন নেবো। আইনের দ্বারস্থ হবো নিজের সম্মান নষ্ট হলে।’ অন্যদিকে বদিউল আলম খোকন পরিচালিত ‘আগুন’ সিনেমাটি দেশবাংলা মাল্টিমিডিয়া প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে নির্মাণ হচ্ছে। এই প্রযোজনা সংস্থাটির কর্ণধার যুবলীগ নেতা। এক্ষেত্রে এই ছবিটির ভবিষ্যত্ অনিশ্চিত কি-না জানতে চাইলে নির্মাতা বদিউল আলম খোকন বলেন, ‘ছবিটির অধিকাংশ কাজ প্রায় শেষ। তাই ছবিটি হচ্ছে না বা হবে না- এসব খবর যারা রটাচ্ছেন তারা এই চলচ্চিত্রের শত্রু।’
উল্লেখ্য, এই সিনেমার মধ্য দিয়ে বড়পর্দায় যাত্রা শুরু করেন মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশের প্রথম আসরের রানারআপ জাহারা মিতু। কথিত আছে জনৈক ক্যাসিনো ব্যবসায়ীর সুপারিশেই ছবির নায়িকার কাস্টিং হয়। যদিও এ তথ্যটি এখন অবধি ‘গুঞ্জন’ শব্দের ব্র্যাকেটেই বন্দি। তবে ক্যারিয়ারের প্রথম সিনেমা নিয়ে এই ধরনের আলোচনা প্রসঙ্গে মিতুর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘সিনেমাটি বন্ধ হওয়ার আশঙ্কার বিষয়টি ভিত্তিহীন। কারণ আমি এখন কক্সবাজারে আগুন-এর শুটিংয়ের জন্যই এসেছি। এর বাইরে যা কিছু রটাচ্ছে তার আমি কিছুই জানি না। আমি কাউকে চিনিও না। এসব বিষয়ে পরিচালকই ভালো বলতে পারবেন।’ অন্যদিকে এ নিয়ে ছবিটির নায়ক শাকিব খানের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।