ঢাকা ০৩:৩৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খালের ধারে ফেলে যাওয়া নবজাতককে উদ্ধার করলেন আরেক মা

চান্দিনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ

রাত ১১টা। ওসমানদের বাড়িতে পিঠাপুলি বানাচ্ছেন বাড়ির নারীরা। এদিকে পাশের খাল পাড় থেকে থেমে থেমে ভেসে আসছে নবজাতকের কান্নার শব্দ। তখনও কেউ বুঝে ওঠেননি কি ঘটতে চলেছে। নবজাতকের কান্নার শব্দ পেলেই থমকে যাচ্ছিলেন পিঠা তৈরির কাজে ব্যস্ত থাকা ওসমানের মা, স্ত্রীসহ অন্য নারীরা। কান্নার শব্দ থেমে গেলে আবারও কাজে ফিরছিলেন তারা। এভাবেই চলে রাত ১টা পর্যন্ত।

কাজ শেষে ঘুমের ঘরে গিয়েও একই ভাবে তারা শুনতে পান কান্নার আওয়াজ। রাত ২টার পর শিশুটির কান্না থেমে গেলে যে যার মতো ঘুমিয়ে পড়েন। কিন্তু কৌতুহল কাটেনি ওসমানের মা মনোয়ারা বেগমের (৬০)।

কোনো রকম রাত কাটিয়ে ভোরে ফজরের নামাজের পরপর মনোয়ারা বেগম খাল পাড়ে ছুটে আসেন। কিছুটা হাঁটার পর দেখেন শুকনো খালের এক পাশে কাঁদা মাখা অবস্থায় পড়ে আছে ফুটফুটে এক ছেলে নবজাতক। প্রথম মৃত ভাবলেও কাছে গিয়ে দেখেন বুক নড়ছে। পরে খাল থেকে ওই নবজাতকে নিয়ে আসেন বাড়িতে। খবর পেয়ে ওই ওয়ার্ডের ইউনিয়ন পরিষদ মেম্বার নবজাতককে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা শেষে নিয়ে যান নিজ ঘরে। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার বাড়েরা গ্রামে। বাড়েরা দক্ষিণ বাজারের ব্রিজ সংলগ্ন খাল থেকে ওই নবজাতককে উদ্ধার করা হয়।

ওসমানের মা মনোনয়ারা বেগম জানান- মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টা থেকে আমরা হঠাৎ খাল পাড় থেকে শিশুর কান্নার আওয়াজ শুনতে পাই। সারারাত প্রচণ্ড ভয়ও পেয়েছি। পরদিন ভোরে আমি শিশুটিকে উদ্ধার করি।

বাড়েরা ইউনিয়ন পরিষদের ৭নং ওয়ার্ড মেম্বার শাহিন আলম জানান- সকালে ঘটনাটি শোনার পর ওসমানদের বাড়িতে যাই। গিয়ে বাচ্চাটির আশঙ্কাজনক অবস্থা দেখে দ্রুত চান্দিনার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে আসি। সেখানে শিশু ডাক্তারের পরামর্শে চিকিৎসা সেবা দেই। পরে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে বিষয়টি অবগত করে আমার বাড়িতে নিয়ে যাই। বর্তমানে আমার স্ত্রী ফাতেমা বেগম ওই নবজাতককে মাতৃস্নেহে আগলে রেখেছেন।

বাড়েরা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. খোরশেদ আলম জানান- এলাকায় কোন পরিবারে এমন ঘটনা ঘটেছে তা আমরা খুঁজে দেখার চেষ্টা করছি।

চান্দিনা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবুল ফয়সল জানান- তদন্ত সাপেক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্নেহাশীষ দাশ জানান- ঘটনা জেনেছি। খোঁজ নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

মুরাদনগরে ৪৬তম জাতীয় বিজ্ঞান মেলার পুরস্কার বিতরন অনুষ্ঠিত

খালের ধারে ফেলে যাওয়া নবজাতককে উদ্ধার করলেন আরেক মা

আপডেট সময় ০২:৪০:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২০

চান্দিনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ

রাত ১১টা। ওসমানদের বাড়িতে পিঠাপুলি বানাচ্ছেন বাড়ির নারীরা। এদিকে পাশের খাল পাড় থেকে থেমে থেমে ভেসে আসছে নবজাতকের কান্নার শব্দ। তখনও কেউ বুঝে ওঠেননি কি ঘটতে চলেছে। নবজাতকের কান্নার শব্দ পেলেই থমকে যাচ্ছিলেন পিঠা তৈরির কাজে ব্যস্ত থাকা ওসমানের মা, স্ত্রীসহ অন্য নারীরা। কান্নার শব্দ থেমে গেলে আবারও কাজে ফিরছিলেন তারা। এভাবেই চলে রাত ১টা পর্যন্ত।

কাজ শেষে ঘুমের ঘরে গিয়েও একই ভাবে তারা শুনতে পান কান্নার আওয়াজ। রাত ২টার পর শিশুটির কান্না থেমে গেলে যে যার মতো ঘুমিয়ে পড়েন। কিন্তু কৌতুহল কাটেনি ওসমানের মা মনোয়ারা বেগমের (৬০)।

কোনো রকম রাত কাটিয়ে ভোরে ফজরের নামাজের পরপর মনোয়ারা বেগম খাল পাড়ে ছুটে আসেন। কিছুটা হাঁটার পর দেখেন শুকনো খালের এক পাশে কাঁদা মাখা অবস্থায় পড়ে আছে ফুটফুটে এক ছেলে নবজাতক। প্রথম মৃত ভাবলেও কাছে গিয়ে দেখেন বুক নড়ছে। পরে খাল থেকে ওই নবজাতকে নিয়ে আসেন বাড়িতে। খবর পেয়ে ওই ওয়ার্ডের ইউনিয়ন পরিষদ মেম্বার নবজাতককে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা শেষে নিয়ে যান নিজ ঘরে। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার বাড়েরা গ্রামে। বাড়েরা দক্ষিণ বাজারের ব্রিজ সংলগ্ন খাল থেকে ওই নবজাতককে উদ্ধার করা হয়।

ওসমানের মা মনোনয়ারা বেগম জানান- মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টা থেকে আমরা হঠাৎ খাল পাড় থেকে শিশুর কান্নার আওয়াজ শুনতে পাই। সারারাত প্রচণ্ড ভয়ও পেয়েছি। পরদিন ভোরে আমি শিশুটিকে উদ্ধার করি।

বাড়েরা ইউনিয়ন পরিষদের ৭নং ওয়ার্ড মেম্বার শাহিন আলম জানান- সকালে ঘটনাটি শোনার পর ওসমানদের বাড়িতে যাই। গিয়ে বাচ্চাটির আশঙ্কাজনক অবস্থা দেখে দ্রুত চান্দিনার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে আসি। সেখানে শিশু ডাক্তারের পরামর্শে চিকিৎসা সেবা দেই। পরে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে বিষয়টি অবগত করে আমার বাড়িতে নিয়ে যাই। বর্তমানে আমার স্ত্রী ফাতেমা বেগম ওই নবজাতককে মাতৃস্নেহে আগলে রেখেছেন।

বাড়েরা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. খোরশেদ আলম জানান- এলাকায় কোন পরিবারে এমন ঘটনা ঘটেছে তা আমরা খুঁজে দেখার চেষ্টা করছি।

চান্দিনা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবুল ফয়সল জানান- তদন্ত সাপেক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্নেহাশীষ দাশ জানান- ঘটনা জেনেছি। খোঁজ নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।