জাতীয় ডেস্কঃ
দুই মাস নয় দিন (৬৯ দিন) পর দেশে করোনাভাইরাসে মৃত্যু আবারও এক শ পার হয়েছে। গত এক দিনে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১০৮ জন, যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। এর আগে গত ১৬ এপ্রিল দেশে প্রথমবারের মতো মৃত্যু এক শ ছাড়ায়। সেদিন ১০১ জন মৃত্যুর তথ্য জানানো হয়। এরপর ১৯ এপ্রিল এক দিনে সর্বোচ্চ ১১২ জনের মৃত্যু হয়।
এদিকে মৃত্যু বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে শনাক্তের হারও। গত এক দিনে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৫ হাজার ৮৬৯ জনের দেহে। শনাক্তের হার ২১.২২ শতাংশ।
শুক্রবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ২৭ হাজার ৬৫৩টি নমুনা পরীক্ষায় ৫ হাজার ৮৬৯ জন শনাক্ত হন। এ নিয়ে মোট শনাক্ত ৮ লাখ ৭৮ হাজার ৮০৪ জন। পরীক্ষা বিবেচনায় এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩.৬০ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত একদিনে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে পুরুষ ৭৫ জন ও নারী ৩৩ জন। ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ১ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ২ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ৭ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ১৫ জন, ৫০ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ২৫ জন ও ষাটোর্ধ্ব ৫৮ জন রয়েছেন। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মারা গেলেন ১৩ হাজার ৯৭৬ জন।
এদিকে গত একদিনে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৭৭৬ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৭ লাখ ৯৭ হাজার ৫৫৯ জন।
দেশে গত বছরের ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর খবর আসে। কয়েক মাস সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার ঊর্ধ্বগতিতে থাকার পর অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। চলতি বছরের শুরুতে করোনাভাইরাসের প্রকোপ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে ছিল। তখন শনাক্তের হারও ৫ শতাংশের নিচে নেমেছিল। তবে গত মার্চ মাস থেকে মৃত্যু ও শনাক্ত আবার বাড়তে থাকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী, কোনো দেশে টানা দুই সপ্তাহের বেশি সময় পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে ধরা যায়। সে হিসেবে বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেই বলা হয়।
এরমধ্যে গত ১৬ এপ্রিল দেশে দৈনিক মৃত্যু একশো ছাড়ায়। সেদিন ও তার পরদিন ১৭ এপ্রিল ১০১ করে মৃত্যু হয় করোনায়। ১৮ এপ্রিল ১০২ জন ও ১৯ এপ্রিল ১১২ জন মারা যান, যা একদিনে সর্বোচ্চ।
বিশেষজ্ঞরা এটাকে বাংলাদেশে করোনার ‘দ্বিতীয় ঢেউ’ বলছেন। করোনা সংক্রমণ মারাত্মক আকার ধারণ করায় প্রথমে ২১ এপ্রিল ও পরে তা বাড়িয়ে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করেছিল সরকার। এরপর সেটি ধাপে ধাপে বাড়িয়ে ১৬ জুলাই পর্যন্ত করা হয়েছে।