ঢাকা ০৭:৫৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চলে গেলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর শামসুল হক মোল্লা

আজিজুর রহমান রনি, বিশেষ প্রতিনিধিঃ

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা সদর ইউনিয়নের আলীরচর গ্রামের সন্তান, আলরিচর গ্রামের চাঁদ মিয়া মোল্লা ডিগ্রি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গনিত বিভাগের সাবেক অধ্যাপক বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী, সিনেট সদস্য, বাংলাদেশ গনিত সমিতির সাবেক সাধারন সম্পাদক, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, সমাজসেবক প্রফেসর শামসুল হক মোল্লা (৯০) ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬.৩০ মিনিটে ঢাকার একটি হসপিটালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। তিনি এক স্ত্রী, তিন ছেলে, এক মেয়েসহ অসংখ্য গুনীগ্রাহী রেখে গেছেন।

তার মৃত্যুতে পরিবারসহ কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা জুড়ে বইছে শোকের ছায়া। ব্যাক্তি জীবনে শিক্ষা উন্নয়ন ও মানবসেবায় তিনি ছিলেন নিরলস নিঃস্বার্থ।

বুধবার সকাল ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বিকাল ৩টায় নিজ প্রতিষ্ঠান চাঁদ মিয়া মোল্লা ডিগ্রি কলেজ মাঠে জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

জানা যায়, স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগদানের পর থেকেই অবহেলিত গ্রামকে এগিয়ে নেওয়ার সংগ্রাম চালিয়ে যান। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসরের পর লিবিয়া ইউনিভার্সিটিতেও কিছুদিন শিক্ষকতা করেন। দেশে ফিরেই জীবনের কঠোর পরিশ্রমের সামান্য আয়ে চারদিকে শিক্ষার ব্রত ছাড়িয়ে দিতে প্রথমেই ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠা করেন চাঁদ মিয়া মোল্লা ডিগ্রি কলেজ। পরবর্তীতে শিক্ষার মান উন্নয়নে ১৯৯৯ সালে তায়মোস বেগম উচ্চ বিদ্যালয়, ২০০০ সালে আফরোজা হক কিন্ডারগার্ডেন, ২০০১ সালে তায়মোস অফুলা ইবতেদায়ী মাদ্রাসা সহ অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিজ গ্রামেই প্রতিষ্ঠা করে গেছেন। গ্রামের অবহেলিত গরীব জনগোষ্ঠীর কথা চিন্তা করে গড়ে তোলেন প্রফেসর শামসুল হক মোল্লা ট্রাস্ট। ট্রাস্টের মাধ্যমে গড়েছেন অসংখ্য ক্লিনিক, গণ গ্রন্থাগার, ছাত্রাবাস, ইদগাহ, মসজিদসহ সামাজিক প্রতিষ্ঠান। গ্রামের অসহায় মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য হাতে নিয়েছেন আদর্শ গ্রাম প্রকল্প।

সমাজে অসামান্য অবদানের জন্য ২০০৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক আন্তজার্তিক “ডিষ্টিংগুইশড লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড”, ২০০৭ সালে বাংলাদেশ এসোসিয়েশন ফর টোটাল সোসাল এডভান্সমেন্ট কর্তৃক “সেরা-সেবক” পুরষ্কার, ২০০৮ সালে বাংলাদেশ গনিত সমিতি কর্তৃক “বর্ষীয়ান গণিতবিদ সম্মাননা”, ২০১৬ সালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ গনিত বিভাগ কর্তৃক “আজীবন সম্মাননা” সহ অসংখ্য পুরষ্কারে ভূষিত হন।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মুরাদনগরে পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রবাসীর বাড়ি ঘরে হামলা, নারীসহ আহত ৩

চলে গেলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর শামসুল হক মোল্লা

আপডেট সময় ০২:২৭:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২২

আজিজুর রহমান রনি, বিশেষ প্রতিনিধিঃ

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা সদর ইউনিয়নের আলীরচর গ্রামের সন্তান, আলরিচর গ্রামের চাঁদ মিয়া মোল্লা ডিগ্রি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গনিত বিভাগের সাবেক অধ্যাপক বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী, সিনেট সদস্য, বাংলাদেশ গনিত সমিতির সাবেক সাধারন সম্পাদক, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, সমাজসেবক প্রফেসর শামসুল হক মোল্লা (৯০) ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬.৩০ মিনিটে ঢাকার একটি হসপিটালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। তিনি এক স্ত্রী, তিন ছেলে, এক মেয়েসহ অসংখ্য গুনীগ্রাহী রেখে গেছেন।

তার মৃত্যুতে পরিবারসহ কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা জুড়ে বইছে শোকের ছায়া। ব্যাক্তি জীবনে শিক্ষা উন্নয়ন ও মানবসেবায় তিনি ছিলেন নিরলস নিঃস্বার্থ।

বুধবার সকাল ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বিকাল ৩টায় নিজ প্রতিষ্ঠান চাঁদ মিয়া মোল্লা ডিগ্রি কলেজ মাঠে জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

জানা যায়, স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগদানের পর থেকেই অবহেলিত গ্রামকে এগিয়ে নেওয়ার সংগ্রাম চালিয়ে যান। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসরের পর লিবিয়া ইউনিভার্সিটিতেও কিছুদিন শিক্ষকতা করেন। দেশে ফিরেই জীবনের কঠোর পরিশ্রমের সামান্য আয়ে চারদিকে শিক্ষার ব্রত ছাড়িয়ে দিতে প্রথমেই ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠা করেন চাঁদ মিয়া মোল্লা ডিগ্রি কলেজ। পরবর্তীতে শিক্ষার মান উন্নয়নে ১৯৯৯ সালে তায়মোস বেগম উচ্চ বিদ্যালয়, ২০০০ সালে আফরোজা হক কিন্ডারগার্ডেন, ২০০১ সালে তায়মোস অফুলা ইবতেদায়ী মাদ্রাসা সহ অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিজ গ্রামেই প্রতিষ্ঠা করে গেছেন। গ্রামের অবহেলিত গরীব জনগোষ্ঠীর কথা চিন্তা করে গড়ে তোলেন প্রফেসর শামসুল হক মোল্লা ট্রাস্ট। ট্রাস্টের মাধ্যমে গড়েছেন অসংখ্য ক্লিনিক, গণ গ্রন্থাগার, ছাত্রাবাস, ইদগাহ, মসজিদসহ সামাজিক প্রতিষ্ঠান। গ্রামের অসহায় মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য হাতে নিয়েছেন আদর্শ গ্রাম প্রকল্প।

সমাজে অসামান্য অবদানের জন্য ২০০৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক আন্তজার্তিক “ডিষ্টিংগুইশড লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড”, ২০০৭ সালে বাংলাদেশ এসোসিয়েশন ফর টোটাল সোসাল এডভান্সমেন্ট কর্তৃক “সেরা-সেবক” পুরষ্কার, ২০০৮ সালে বাংলাদেশ গনিত সমিতি কর্তৃক “বর্ষীয়ান গণিতবিদ সম্মাননা”, ২০১৬ সালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ গনিত বিভাগ কর্তৃক “আজীবন সম্মাননা” সহ অসংখ্য পুরষ্কারে ভূষিত হন।