তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্কঃ
কোনো বিশেষ অংশে নয়, চাঁদের সর্বত্রই সম্ভবত রয়েছে পানি! ইসরোর চন্দ্রযান-১ মিশন ও নাসার রিকনসায়েন্স অরবিটারের পাঠানো তথ্য বিশ্লেষণ করে এমনটাই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। তবে সেই পানি সহজে পাওয়া যাবে না বলেই মনে করছেন তারা। নেচার জিওসায়েন্স পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সর্বশেষ ধারণাটি যদি সত্য হয় তাহলে চাঁদের পানি সম্পর্কে এতদিন যে ধারণা প্রচলিত ছিল তা ‘ভুল’ প্রমাণিত হবে।
এর আগে পর্যন্ত মনে করা হতো, চাঁদের দুই মেরুতেই শুধু পানি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বাকি অংশে কোনো পানির অস্তিত্ব নেই। নতুন তথ্য থেকে ধারণা করা হচ্ছে, দুই মেরু নয়, চাঁদের সব জায়গাতেই পানি রয়েছে। তবে এই পানি পৃথিবী পৃষ্ঠের পানির মতো তরল আকারে নেই। পৃথিবীতে থাকা পানি সাধারণত এইচটুও (H2O) অবস্থায় থাকলেও চাঁদে যে পানির কথা বলা হচ্ছে তা অন্য ধরনের যৌগ আকারে রয়েছে।
বিজ্ঞানীদের দাবি, চাঁদের পানি অক্সিজেন ও হাইড্রোজেন অণুর সমন্বয়ে হাইড্রোক্সিল মূলক ওএইচ (OH) আকারে রয়েছে। এই হাইড্রোক্সিল মূলকের প্রবণতা হলো, এটি অন্য কোনো অণুর সঙ্গে বিক্রিয়া করে। ফলে অন্য ধাতুর সঙ্গে যুক্ত হয়ে তা নতুন কোনো যৌগ গঠন করে চাঁদের মাটিতে অবস্থান করছে।
কী করে এই পানি সৃষ্টি হলো তা নিয়েও বিজ্ঞানীরা এখনো সুস্পষ্ট কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। গবেষকরা মনে করছেন, সৌরবাতাসের সঙ্গে চন্দ্রপৃষ্ঠের সংঘর্ষেই তৈরি হয়েছে পানি। তবে এখনো এ বিষয়ে পাকাপাকিভাবে কোনো দাবি করা হয়নি। যেসব তথ্য পাওয়া গেছে, তা নিয়ে এখনো গবেষণা করা হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত যদি সত্যিই চাঁদে পানির সন্ধান মেলে এবং তা নিষ্কাশন করা সম্ভব হয়, তবে নিঃসন্দেহে তা হবে এক যুগান্তকারী আবিষ্কার।
ইতোমধ্যে চাঁদে ফোরজি মোবাইল নেটওয়ার্কের টাওয়ার তৈরির প্রকল্প গ্রহণ করেছে ভোডাফোন জার্মানি এবং নকিয়া। সব কিছু ঠিক থাকলে ২০১৯ সালের মধ্যে চাঁদে প্রথম ফোরজি নেটওয়ার্কের টাওয়ার তৈরি সম্পন্ন করার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তারা। তাই এবার যদি চাঁদের সবখানে পানি পাওয়ার বিষয়টি সত্যি হয় তাহলে হয়তো অদূর ভবিষ্যতেই পৃথিবী তার নতুন কলোনি হিসেবে চাঁদকেই বেছে নেবে।-এপি