চান্দিনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লার চান্দিনায় চুরির অভিযোগে যুবককে পিটিয়ে হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এর আগে হত্যার অভিযোগ এনে নিহতের মা মিলি বেগমের দায়ের করা মামলা নিয়ে তদন্ত শুরু করে চান্দিনা থানা পুলিশ। তদন্তের মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই হত্যাকারীদের চিহ্নিত করতে সক্ষম হয় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চান্দিনা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আজিজুল ইসলাম।
চান্দিনা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আজিজুল ইসলাম জানান, দোকানে চুরির ঘটনা যেমন সঠিক তেমনি কতিপয় ব্যক্তির নির্মম নির্যাতনে সুমন হত্যার বিষয়টিও পরিষ্কার। ঘটনার পর ওই দোকানের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। সিসিটিভির ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, রাতে দোকানের টিনের চালা খুলে ভেতরে প্রবেশ করে সুমন। কিছুক্ষণ পর ৮-১০জন ব্যক্তি এসে তাকে হাতেনাতে আটক করে হাত-পা বেঁধে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে। বিষয়টিকে গণপিটুনি বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে জড়িতরা। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছি। আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
নিহতের মা মিলি বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার পোলায় যদি চুরি করে থাকতো তাইলে তারা হাত-পা ভাইঙ্গা লুলা কইরাও যদি রাখতো তাও আমি আমার পোলার মুখে মা ডাক হুনতাম’।
চান্দিনা থানার ওসি সাহাবুদ্দীন খাঁন জানান, আইন হাতে তোলে নেওয়ার অধিকার কারও নেই। ছেলেটিকে আটক করে নির্মমভাবে নির্যাতনের কারণেই মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণ পেয়েছি। অধিকতর তদন্ত করে অপরাধীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, শনিবার (৭ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ৩টার দিকে সাতবাড়িয়া গ্রামের সাইদুর রহমানের মুদি দোকানে চোর ঢুকে বিষয়টি টের পেয়ে রফিক নামের একজন দোকানি সাঈদকে ফোন করে বিষয়টি জানায়। কিছুক্ষণের মধ্যে কয়েকজন যুবক এসে দোকানের ভেতর থেকে সুমনকে আটক করে গণপিটুনি দেয়। গুরুতর আহত অবস্থায় সুমনকে চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
পরদিন রোববার নিহতের মা বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে চান্দিনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় তিনি উল্লেখ করেন, কয়েকজন লোক রড ও লাঠি-শোঠা দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে হত্যা করে তার ছেলেকে। নিহতের মা বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে চান্দিনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।