চান্দিনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার মাধাইয়া ইউনিয়নের কুটুম্বপুর গ্রামের একটি পুকুর থেকে ওই লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহত জামাতা জনি পাশের দেবীদ্বার উপজেলার রাজামেহার ইউনিয়নের গাংচর গ্রামের মজিবুর রহমানে ছেলে। পেশায় পিকআপচালক।
নিহতের বাবা মজিবুর রহমান বলেন, ‘গত ছয়মাস আগে আমার ছেলের সাথে চান্দিনা উপজেলার বাতাঘাসী ইউনিয়নের নাজিরপুর গ্রামের নূরুল ইসলামের মেয়ে শিল্পী আক্তারের সাথে বিয়ে হয়। শিল্পী আগে বিবাহিতা ও এক সন্তানের জননী। আমার ছেলেকে বিয়ে করার পরেও শিল্পী তার আগের স্বামীর সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া বিবাদ হতো। ১০ দিন আগে আমার ছেলের বউ তার বাবার বাড়িতে বেড়াতে যান। গত ১৫ অক্টোবর বিকেলে আমার ছেলে শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে যান। রোববার স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ হওয়ার পর তারা আমার ছেলের হাত-পা বেঁধে মারধর করেন। রাত ১০টার দিকে আমার ছেলের শ্বশুর বাড়ির লোকজন ফোন করে কাবিনের টাকা ও অতিরিক্ত ৩০ হাজার টাকা নিয়ে আসার জন্য আমাকে বলেন। সকালে শুনি আমার ছেলের লাশ কুটুম্বপুর গ্রামের একটি পুকুরে পড়ে রয়েছে।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘ছেলের শ্বশুর বাড়ির লোকজন আমার ছেলেকে হত্যা করে লাশ পুকুরে ফেলে দিয়েছে।’
নিহত জনির স্ত্রী শিল্পী বলেন, জনি মাদকাসক্ত ছিলেন। প্রায়ই আমাকে মারধর করতেন। আমার বাপের বাড়িতে গিয়ে আমাকে মারধর করায় এলাকার লোকজন তাকে শিকল দিয়ে বেঁধে আমার শ্বশুরকে ফোন করে। রাত ১টার দিকে তিনি (স্বামী) হাতের শিকল খুলে ঘর থেকে বেরিয়ে পালিয়ে যান। পরদিন দুপুর ১২টা দিকে আমরা থানায় জিডি করতে এলে শুনতে পাই আমার স্বামীর লাশ একটি পুকুরে পাওয়া গেছে।
চান্দিনা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাকিব হাসান বলেন, ‘কুটুম্বপুর গ্রামের মতিন মিয়ার শিশু ছেলে মিলন পুকুরের পাশ দিয়ে আসার সময় ভাসমান অবস্থায় নিহতের লাশ দেখে এলাকাবাসীকে জানায়। খবর পেয়ে লাশ উদ্ধারের পর নিহতের নাক, কান ও চোখে প্রচুর রক্তক্ষরণ দেখতে পাই। এ ঘটনায় নিহতের পরিবার থানায় লিখিত অভিযোগ করার জন্য এসেছেন।’
চান্দিনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: সাহাবুদ্দীন খাঁন বলেন, ঘটনার পরপর ঘটনাস্থলে সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (এএসপি) ফয়েজ ইকবাল, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) একটি টিমসহ চান্দিনা থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। ঘটনার তদন্ত চলছে, তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।