ঢাকা ১২:৩৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০২ মার্চ ২০২৫, ১৭ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ছাত্রদলের কমিটি নব্য বাকশালীদের মতো ভোট ডাকাতি করে গঠিত হয়নি: রিজভী

জাতীয়;

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুর কবির রিজভী বলেছেন, কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ডে নিষেধাজ্ঞা আরোপের এখতিয়ার আদালতের নেই। ছাত্রদল নিজেরা এখন পর্যন্ত যা কিছু করেছে, তার সবই আইনসম্মত। ছাত্রদল একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নেতৃত্ব নির্ধারণ করেছে। কাউন্সিলরদের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত এই কমিটি। এটা রাতের আঁধারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে নব্য বাকশালীদের ভোট ডাকাতি করে সরকার গঠনের মতো অবৈধ কিছু নয়।

মঙ্গলবার নয়া পল্টনে দলের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি ছাত্রদলের নতুন কমিটির কাজে আদালতের নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে এ কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, আইনের বিধানে রাজনৈতিক দল বা তাদের কর্মকাণ্ড সংশ্লিষ্ট কোনো বিষয় আদালতের এখতিয়ারে পড়ে না, এমন একাধিক উচ্চ আদালতে রায় রয়েছে। আরপিও ১৯৭২ এবং দ্য পলিটিক্যাল পার্টিস অডিন্যান্স-১৯৭৮ অনুসারে বিএনপি একটি রাজনৈতিক দল। এই দল বা তার কোনো কর্মকর্তা বা কর্মকাণ্ডের ওপর সহকারী জজ আদালত বা নিম্ন আদালতের কোনো আদেশ জারি বা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার এখতিয়ার নাই।

তিনি বলেন, আমরা অতীতে কখনও দেখিনি রাজনৈতিক দলের কার্যক্রমে আদালত যুক্ত হচ্ছে বা হস্তক্ষেপ করছে। এখন আদালতকে নগ্নভাবে ছাত্রদলকে ধ্বংস করার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগ এতোই বিএনপিকে ভয় পায় যে, একটা ছাত্রদলের কমিটি নিয়েও তাদের গায়ে জ্বালা ধরে গেছে। কে কমিটি করবে, কিভাবে কমিটি হল- এটা আদালতের বিষয় নয়। আদালতকে দিয়ে রাজনীতি নিয়ন্ত্রণের এই সংস্কৃতি দেশের জন্য ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনবে।

আদালতের নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে জানতে চাইলে রিজভী বলেন, ‌’আমাদের কাছে এখনও কোনো কাগজ এসে পৌঁছায়নি। এ ব্যাপারে এখন কিছু বলতে পারব না। এখনও অফিসিয়ালি কিছু পাইনি।

তিনি বলেন, ছাত্রলীগের কমিটি গঠন, সভাপতি-সাধারণসম্পাদককে বাদ দেওয়া, নতুন দুইজনকে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ‘পরিপন্থী ও অবৈধ’। অথচ এ ব্যাপারে আদালত নিশ্চুপ। আদালত একেবারে ডার্ক গ্লাস পড়ে বসে আছেন। আদালত যদি নিরপেক্ষ ও স্বাধীন হতো তাহলে আরপিও ভঙ্গ ও দস্যূবৃত্তিক কর্মকাণ্ড আমলে নিয়ে ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি বিলুপ্ত করে দিতো। আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডকে শোকজ করতো।

রিজভী বলেন, বিশ্বখ্যাত সাময়িকী ফোর্বসে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, সিঙ্গাপুরের শীর্ষ ৫০ ধনীর তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশের সামিট গ্রুপ। তাদের বর্তমান সম্পত্তির পরিমাণ ৯১০ মিলিয়ন, যা বাংলাদেশি অর্থে প্রায় ৭ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকা। আপনারা জানেন, এই সামিট গ্রুপের মালিক কে, ক্ষমতার সঙ্গে তাদের সম্পর্ক কী? এটা আমার মনে হয় নাম ধরে বলার অপেক্ষা রাখে না, আপনারা নিশ্চয় জানেন। আপনারা জানেন, এরা সরকারের খুব ঘনিষ্ঠ। খবর বেরিয়েছে, এদের কুইক রেন্টাল প্রকল্পের বিদ্যুৎকেন্দ্র বসিয়ে রেখে মুফতে ক্যাপাসিটি চার্জ পান। কুইক রেন্টাল প্রকল্পের উদ্যোক্তারা বিদ্যুৎ উৎপাদন না করে, অলস উৎপাদন ক্ষমতা থাকার কারণে ক্যাপাসিটি চার্জ পাচ্ছেন কোনো সার্ভিস দেওয়া ছাড়া, বিদ্যুৎ উৎপাদন ছাড়া একেবারে পকেটে টাকা ভরে নিচ্ছেন। এই প্রতিষ্ঠানটি ক্যাপাসিটি চার্জ হিসেবে দুই হাজার কোটি টাকা নিয়ে যাওয়া একটা অবিশ্বাস্য লেভেলের লুটতরাজ। এভাবেই ক্ষমতাসীন দলের লোকজন বিদেশে টাকা পাচার করে দেশকে দেউলিয়া করে দিচ্ছে।

তিনি বলেন, দুই একজন মানে একেবারে চতুর্থ ও পঞ্চম গ্রেডের নেতা, তাদের দেখছি দুইশ কোটির টাকার মতো এফডিআর এবং অন্য টাকা পয়সা। ওদের যদি দুইশ কোটি টাকার এফডিআর থাকতে পারে তাহলে এই সমস্ত (সামিট গ্রুপ) ব্যক্তিবর্গের টাকার পরিমানটা কী রকমের, কী পরিমান সরকারি স্থাপনাতে কাজ করে টাকা নিয়ে গেছেন এবং সেটাকে বাইরে বিনিয়োগ করেছেন যে, সিঙ্গাপুরে ৫০ জন ধনীর মধ্যে এদের নাম আছে।

সংবাদ সম্মেলনে দলের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিবউন নবী খান সোহেল, খন্দকার আবু আশফাক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ছাত্রদলের কমিটি নব্য বাকশালীদের মতো ভোট ডাকাতি করে গঠিত হয়নি: রিজভী

আপডেট সময় ০৩:৫৮:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯
জাতীয়;

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুর কবির রিজভী বলেছেন, কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ডে নিষেধাজ্ঞা আরোপের এখতিয়ার আদালতের নেই। ছাত্রদল নিজেরা এখন পর্যন্ত যা কিছু করেছে, তার সবই আইনসম্মত। ছাত্রদল একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নেতৃত্ব নির্ধারণ করেছে। কাউন্সিলরদের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত এই কমিটি। এটা রাতের আঁধারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে নব্য বাকশালীদের ভোট ডাকাতি করে সরকার গঠনের মতো অবৈধ কিছু নয়।

মঙ্গলবার নয়া পল্টনে দলের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি ছাত্রদলের নতুন কমিটির কাজে আদালতের নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে এ কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, আইনের বিধানে রাজনৈতিক দল বা তাদের কর্মকাণ্ড সংশ্লিষ্ট কোনো বিষয় আদালতের এখতিয়ারে পড়ে না, এমন একাধিক উচ্চ আদালতে রায় রয়েছে। আরপিও ১৯৭২ এবং দ্য পলিটিক্যাল পার্টিস অডিন্যান্স-১৯৭৮ অনুসারে বিএনপি একটি রাজনৈতিক দল। এই দল বা তার কোনো কর্মকর্তা বা কর্মকাণ্ডের ওপর সহকারী জজ আদালত বা নিম্ন আদালতের কোনো আদেশ জারি বা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার এখতিয়ার নাই।

তিনি বলেন, আমরা অতীতে কখনও দেখিনি রাজনৈতিক দলের কার্যক্রমে আদালত যুক্ত হচ্ছে বা হস্তক্ষেপ করছে। এখন আদালতকে নগ্নভাবে ছাত্রদলকে ধ্বংস করার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগ এতোই বিএনপিকে ভয় পায় যে, একটা ছাত্রদলের কমিটি নিয়েও তাদের গায়ে জ্বালা ধরে গেছে। কে কমিটি করবে, কিভাবে কমিটি হল- এটা আদালতের বিষয় নয়। আদালতকে দিয়ে রাজনীতি নিয়ন্ত্রণের এই সংস্কৃতি দেশের জন্য ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনবে।

আদালতের নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে জানতে চাইলে রিজভী বলেন, ‌’আমাদের কাছে এখনও কোনো কাগজ এসে পৌঁছায়নি। এ ব্যাপারে এখন কিছু বলতে পারব না। এখনও অফিসিয়ালি কিছু পাইনি।

তিনি বলেন, ছাত্রলীগের কমিটি গঠন, সভাপতি-সাধারণসম্পাদককে বাদ দেওয়া, নতুন দুইজনকে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ‘পরিপন্থী ও অবৈধ’। অথচ এ ব্যাপারে আদালত নিশ্চুপ। আদালত একেবারে ডার্ক গ্লাস পড়ে বসে আছেন। আদালত যদি নিরপেক্ষ ও স্বাধীন হতো তাহলে আরপিও ভঙ্গ ও দস্যূবৃত্তিক কর্মকাণ্ড আমলে নিয়ে ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি বিলুপ্ত করে দিতো। আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডকে শোকজ করতো।

রিজভী বলেন, বিশ্বখ্যাত সাময়িকী ফোর্বসে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, সিঙ্গাপুরের শীর্ষ ৫০ ধনীর তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশের সামিট গ্রুপ। তাদের বর্তমান সম্পত্তির পরিমাণ ৯১০ মিলিয়ন, যা বাংলাদেশি অর্থে প্রায় ৭ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকা। আপনারা জানেন, এই সামিট গ্রুপের মালিক কে, ক্ষমতার সঙ্গে তাদের সম্পর্ক কী? এটা আমার মনে হয় নাম ধরে বলার অপেক্ষা রাখে না, আপনারা নিশ্চয় জানেন। আপনারা জানেন, এরা সরকারের খুব ঘনিষ্ঠ। খবর বেরিয়েছে, এদের কুইক রেন্টাল প্রকল্পের বিদ্যুৎকেন্দ্র বসিয়ে রেখে মুফতে ক্যাপাসিটি চার্জ পান। কুইক রেন্টাল প্রকল্পের উদ্যোক্তারা বিদ্যুৎ উৎপাদন না করে, অলস উৎপাদন ক্ষমতা থাকার কারণে ক্যাপাসিটি চার্জ পাচ্ছেন কোনো সার্ভিস দেওয়া ছাড়া, বিদ্যুৎ উৎপাদন ছাড়া একেবারে পকেটে টাকা ভরে নিচ্ছেন। এই প্রতিষ্ঠানটি ক্যাপাসিটি চার্জ হিসেবে দুই হাজার কোটি টাকা নিয়ে যাওয়া একটা অবিশ্বাস্য লেভেলের লুটতরাজ। এভাবেই ক্ষমতাসীন দলের লোকজন বিদেশে টাকা পাচার করে দেশকে দেউলিয়া করে দিচ্ছে।

তিনি বলেন, দুই একজন মানে একেবারে চতুর্থ ও পঞ্চম গ্রেডের নেতা, তাদের দেখছি দুইশ কোটির টাকার মতো এফডিআর এবং অন্য টাকা পয়সা। ওদের যদি দুইশ কোটি টাকার এফডিআর থাকতে পারে তাহলে এই সমস্ত (সামিট গ্রুপ) ব্যক্তিবর্গের টাকার পরিমানটা কী রকমের, কী পরিমান সরকারি স্থাপনাতে কাজ করে টাকা নিয়ে গেছেন এবং সেটাকে বাইরে বিনিয়োগ করেছেন যে, সিঙ্গাপুরে ৫০ জন ধনীর মধ্যে এদের নাম আছে।

সংবাদ সম্মেলনে দলের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিবউন নবী খান সোহেল, খন্দকার আবু আশফাক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।