জাতীয় ডেস্কঃ
জাতিসংঘের পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে বৈঠক করেছে। এ দলের নেতৃত্বে রয়েছেন সংস্থাটির ইলেক্টোরাল অ্যাসিস্ট্যান্স কার্যালয়ের পাবলিক আউটরিচ অ্যাডভাইজার সভেতলানা গালকিনা। অন্যান্য সদস্যের মধ্যে ছিলেন জাতিসংঘের ইলেক্টোরাল অ্যাসিস্ট্যান্স কার্যালয়ের লার্স জোসেফ আলফোনস ডি গিয়ার ও ইয়াও ইভরাড কুয়াডিও। সংস্থাটির আবাসিক সমন্বয়কারী রবার্ট ডি ওয়ার্ট কিনসেও এতে উপস্থিত ছিলেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
একাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গত ২৫ জুলাই ঢাকায় আসে এই প্রতিনিধিদলটি। মূলত আগামী নির্বাচনে বাংলাদেশের কী ধরনের সহায়তা প্রয়োজন, তা মূল্যায়ন করার জন্য বাংলাদেশে আসেন তারা। নির্বাচন কমিশনের সাথে দেখা করার আগে তারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠক করেন।
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, গত ২০ জুন রবার্ট ডি ওয়ার্ট কিনসের নেতৃত্বে প্রায় ২০ জন প্রতিনিধি ইসির সঙ্গে বৈঠক করে। সেখানে কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূতও উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে মানসম্মত এনআইডি, ভোটার সচেতনতা কার্যক্রম, কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণসহ ১০ ধরনের কারিগরি সহযোগিতা চাওয়া হয়েছিল ইসির পক্ষ থেকে। সেই বৈঠকের ধারাবাহিকতায় প্রতিনিধিদলটি ঢাকায় আসে।
ইসি সূত্র জানায়, এ প্রতিনিধি দলটি ফিরে যাওয়ার পর আরো একটি দল ঢাকায় আসবে। ওই দলটি নির্বাচন কমিশনের চাহিদা সম্পর্কে ইআরডিসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সাথে বৈঠক করবে। এর আগে গত ১২ মার্চ নরওয়ের রাষ্ট্রদূত সিডসেল ব্লেকের ও সুইডেন রাষ্ট্রদূত জোহান ফ্রিসেল সিইসি কে এম নূরুল হুদার সঙ্গে বৈঠক করেন। আর গত ১৮ মে ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা এবং গত ৩১ মে মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা স্টিফেনস ব্লুম বার্নিকাটও নির্বাচন কমিশনের সাথে বৈঠক করেন। অন্যদিকে, গত ৬ জুন বৈঠক করেন যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার অ্যালিসন ব্লেক।
প্রসঙ্গত, এর আগে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের সাথে ইউএনডিপি এবং দাতা দেশ ও সংস্থাগুলোর ব্যাপক দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। বন্ধ করে দেওয়া হয় নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শক্তিশালী করণ প্রকল্প ‘এসইএমবি’। ২০০৪ সালের ৫ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনের পর কমিশনের সাথে ইউএনডিপির দূরত্ব বাড়ে।
ইউএনডিপি প্রথমে এ নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার বিষয়ে ওই প্রকল্পের পরিবর্তনের ও এতে সহযোগিতা কমিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানায়। পরে প্রকল্পটি মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই বন্ধ করে দেয়া হয়। কিন্তু নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের পর উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলো আবার যোগাযোগ শুরু করেছে। ইউএনডিপিও চাচ্ছে নতুন একটি প্রকল্পের মাধ্যমে নির্বাচনী সহায়তা দিতে।