ঢাকা ০৯:৩২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঝালকাঠিতে লঞ্চে আগুন, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪১

জাতীয় ডেস্কঃ

ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার সুগন্ধা নদীতে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এম‌ভি অভিযান-১০ নামক ল‌ঞ্চে আগুন লাগার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। অগ্নিকাণ্ডের পর পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও যৌথবাহিনী তল্লাশি চালিয়ে ঘটনাস্থল থেকে ৩৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করে। এছাড়া আহতদের মধ্যে শেরে বাংলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একজন এবং ঢাকায় আনার পথে আরেকজনের মৃত্যু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকের ওই আগুনের ঘটনায় এখনো অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের সন্ধানে উদ্ধার তৎপরতা চলমান আছে।

আগুনে দগ্ধদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ১২৪ জনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল ও ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে তিন তলা বিশিষ্ট লঞ্চটি পাঁচ শতাধিক যাত্রী নিয়ে সদরঘাট থেকে ছেড়ে যায়। রাত তিনটার দিকে ঝালকাঠির গাবখানের কাছাকাছি সুগন্ধা নদীতে থাকা অবস্থায় লঞ্চটিতে আগুন ধরে যায়। পরে ঝালকাঠি সদর উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের দিয়াকুল এলাকায় নদীর তীরে লঞ্চটি ভেড়ানো হয়।

আগুন লাগার পরই প্রাণ বাঁচাতে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েন যাত্রীদের অনেকে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ট্রলার নিয়ে লঞ্চের আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন।

ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানায়, রাত ৩টা ২৮মিনিটে তারা অগ্নিকাণ্ডের খবর পান। এরপর তাদের কর্মীরা ৩টা ৫০ মিনিটে সেখানে পৌঁছে অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধার অভিযান শুরু করেন। ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি ইউনিটের চেষ্টায় ভোর ৫টা ২০ মিনিটে তারা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। স্থানীয় বাসিন্দা, কোস্ট গার্ড ও পুলিশ সদস্যরাও উদ্ধার অভিযানে সহযোগিতা করেন।

ঘটনাস্থল থেকে অনেককে আহত অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও যৌথ বাহিনী। বিকালে উদ্ধার অভিযানে যোগ দিয়েছে এলিট ফোর্স র‌্যাব।

ঘটনাস্থল থেকে ১২৪ জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

হাসপাতালের সেবা তত্ত্বাবধায়ক সেলিনা আক্তার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, দুপুর পৌঁছে একটা নাগাদ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা লঞ্চ দুর্ঘটনায় দগ্ধ মারজিয়া আক্তার নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তার শরীরের ৭০ ভাগ পোড়া ছিল। মারজিয়াকে ভোরে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।

এছাড়া ঝালকাঠি থেকে ঢাকায় শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে আনার পথে জেসমিন আক্তার নামে ৩৫ বছর বয়সী এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে এখন পর্যন্ত মোট পাঁচজনকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয়েছে। তাদের মধ্যে শাহিনুর বেগম নামে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার শরীরের ৯০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে।

বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক কামাল হোসেন ভূঁইয়া বলেন, লঞ্চটির ইঞ্জিনকক্ষ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

এই ঘটনা তদন্তে সাত সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। এছাড়া নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে দেড় লাখ টাকা করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদের সঙ্গে তুর্কী এমপির সাক্ষাৎ

ঝালকাঠিতে লঞ্চে আগুন, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪১

আপডেট সময় ০৫:৪০:২১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২১

জাতীয় ডেস্কঃ

ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার সুগন্ধা নদীতে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এম‌ভি অভিযান-১০ নামক ল‌ঞ্চে আগুন লাগার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। অগ্নিকাণ্ডের পর পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও যৌথবাহিনী তল্লাশি চালিয়ে ঘটনাস্থল থেকে ৩৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করে। এছাড়া আহতদের মধ্যে শেরে বাংলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একজন এবং ঢাকায় আনার পথে আরেকজনের মৃত্যু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকের ওই আগুনের ঘটনায় এখনো অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের সন্ধানে উদ্ধার তৎপরতা চলমান আছে।

আগুনে দগ্ধদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ১২৪ জনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল ও ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে তিন তলা বিশিষ্ট লঞ্চটি পাঁচ শতাধিক যাত্রী নিয়ে সদরঘাট থেকে ছেড়ে যায়। রাত তিনটার দিকে ঝালকাঠির গাবখানের কাছাকাছি সুগন্ধা নদীতে থাকা অবস্থায় লঞ্চটিতে আগুন ধরে যায়। পরে ঝালকাঠি সদর উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের দিয়াকুল এলাকায় নদীর তীরে লঞ্চটি ভেড়ানো হয়।

আগুন লাগার পরই প্রাণ বাঁচাতে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েন যাত্রীদের অনেকে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ট্রলার নিয়ে লঞ্চের আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন।

ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানায়, রাত ৩টা ২৮মিনিটে তারা অগ্নিকাণ্ডের খবর পান। এরপর তাদের কর্মীরা ৩টা ৫০ মিনিটে সেখানে পৌঁছে অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধার অভিযান শুরু করেন। ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি ইউনিটের চেষ্টায় ভোর ৫টা ২০ মিনিটে তারা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। স্থানীয় বাসিন্দা, কোস্ট গার্ড ও পুলিশ সদস্যরাও উদ্ধার অভিযানে সহযোগিতা করেন।

ঘটনাস্থল থেকে অনেককে আহত অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও যৌথ বাহিনী। বিকালে উদ্ধার অভিযানে যোগ দিয়েছে এলিট ফোর্স র‌্যাব।

ঘটনাস্থল থেকে ১২৪ জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

হাসপাতালের সেবা তত্ত্বাবধায়ক সেলিনা আক্তার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, দুপুর পৌঁছে একটা নাগাদ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা লঞ্চ দুর্ঘটনায় দগ্ধ মারজিয়া আক্তার নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তার শরীরের ৭০ ভাগ পোড়া ছিল। মারজিয়াকে ভোরে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।

এছাড়া ঝালকাঠি থেকে ঢাকায় শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে আনার পথে জেসমিন আক্তার নামে ৩৫ বছর বয়সী এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে এখন পর্যন্ত মোট পাঁচজনকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয়েছে। তাদের মধ্যে শাহিনুর বেগম নামে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার শরীরের ৯০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে।

বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক কামাল হোসেন ভূঁইয়া বলেন, লঞ্চটির ইঞ্জিনকক্ষ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

এই ঘটনা তদন্তে সাত সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। এছাড়া নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে দেড় লাখ টাকা করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার।