জাতীয়:

এডিস মশা নিধনে নতুন যে ওষুধ আনা হচ্ছে সেখানেও দুর্নীতি হবে- আগাম এমন আশঙ্কা প্রকাশ করলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রবিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপিপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে অকার্যকর ওষুধ আমদানি করা হচ্ছে- এমন দাবি করে ফখরুল আরো বলেন, ‘মশা মারার ওষুধ কার্যকর হচ্ছে না। হবে কোথা থেকে? যে দুর্নীতি তারা (সরকার) করে, তাতে তো কার্যকর হওয়ার কথা না। ’

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রী যখন মালয়েশিয়ায় গেলেন, পত্র-পত্রিকার দেখলাম, তিনি ব্যক্তিগত সফরে গেছেন। ফিরে আসার পর বলেছেন, তিনি জানেন না কতজন মানুষ মারা গেছেন। বলছেন, ১৬-১৭শ আক্রান্ত হয়েছেন। ডেঙ্গুতে কত জন মারা গেছেন, আমাদের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলতে পারেননি। এটা তার জানা নেই। ডেঙ্গু  যখন চরম আকার ধারণ করেছে, তখন স্বাস্থ্যমন্ত্রী বললেন, এডিস মশা রোহিঙ্গাদের মতো। কত বড় অমানবিক হলে, কত বড় অমানুষ হলে একজন মন্ত্রীর মুখে এ ধরনের কথা শুনতে পারি।’

ডেঙ্গু ইস্যুর বাইরেও নতুন নির্বাচনের দাবি জানিয়ে কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।

তিনি সময় শেষ হওয়ার আগেই বর্তমান সংসদ বাতিল করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচন দেয়ার দাবি জানান। একই সঙ্গে দলের কর্মীদের হতাশ না হওয়ার আহবান জানান। বলেন, পৃথিবীতে কোনো স্বৈরাচারী সরকারই দীর্ঘ সময় টিকে থাকতে পারেনি। আওয়ামী লীগও পারেনি। এবারও পারবে না।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সরকার এক এগারোর মিশন বাস্তবায়ন করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, এক এগারোর মূল মিশনটাই ছিল বাংলাদেশকে বিরাজনীতিকরণ করা। এখানে কোনো রাজনীতি থাকবে না। রাজনৈতিক শক্তিগুলোকে ধ্বংস করে দেওয়া হবে। সেই ধারাবাহিকতায় আজকে আওয়ামী লীগের সরকার সেটা বাস্তবায়ন করছে।

আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘অনির্বাচিত সরকার যারা আছেন, যারা ভোটে নির্বাচিত হয়নি, গায়ের জোরে বন্দুকের জোরে যারা বসে আছেন তাদের কাছে পরিষ্কার করে বলতে চাই, সময় শেষ হওয়ার আগেই এই সংসদ বাতিল করুন। এই নির্বাচন বাতিল করুন। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় এ দেশের জনগণ জানে কিভাবে এই ধরনের সরকারকে পরাজিত করতে হয়। ’

দেশে কঠিন অবস্থার মধ্যে বাস করছি উল্লেখ করে বিএনপির শীর্ষ এ নেতা বলেন, ৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে আমরা যে গণতান্ত্রিক সমাজের স্বপ্ন দেখেছিল সে স্বপ্নটা পুরোপুরি ভেঙে গেছে। ৯০ সালে পুনরায় হারিয়ে যাওয়া গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে এনেছিলাম সেটাকেও কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এখন একটি ভয়াবহ রকমের দানবীয় শক্তি যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, তারা আমাদের ওপরে চেপে বসেছে। বিচার ব্যবস্থাকে পুরোপুরিভাবে এই অপশক্তি নিয়ন্ত্রণ করছে। আর তাই ‘খালেদা জিয়া নূন্যতম ন্যায় বিচার পাচ্ছে না’ বলে তিনি উল্লেখ করেন।

এ সময় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ফখরুল বলেন, ‘পৃথিবীতে কোনো স্বৈরাচারী সরকারই দীর্ঘ সময় টিকে থাকতে পারেনি। আওয়ামী লীগও পারেনি। এবারও পারবে না। আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। হতাশা কাটিয়ে জনগণকে সাথে নিয়ে আমাদের মাথা উচু করে দাঁড়াতে হবে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এদেরকে পরাজিত করতে হবে।’

তিনি বলেন, ড্যাব শুধু দলের জন্য নয়, দেশের জন্য অনেক বড় বড় কাজ করে থাকে। এজন্য ড্যাবের নতুন সদস্য রিক্রুট করতে হবে।

ড্যাবের ৩০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এই আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশীদ।

অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস- চেয়ারম্যান ও ড্যাবের সাবেক মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এজেড এম জাহিদ হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. সিরাজউদ্দীন আহমেদ, অধ্যাপক ডা. আব্দুল কুদ্দুস, ড্যাবের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. আব্দুস সালাম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গণি চৌধুরী, বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম প্রমুখ।