নাজমুল করিম ফারুক, তিতাস (কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লা তিতাস উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার (পিইসি) গোপনীয় কোড নম্বর হাতিয়ে দুটি বিদ্যালয়ের ফলাফল পরির্বতনের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলায় কর্মরত বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৭৩জন প্রধান ও সহকারী শিক্ষক সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত ভাবে অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি নিয়ে উপজেলার সর্বত্র সমালোচনা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার গাজীপুর মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মাহবুবুল হক সরকার ও বাতাকান্দি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আক্তার হোসেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস কর্তৃক প্রদত্ত গোপনীয় কোড নম্বর হাতিয়ে নেয়। উক্ত কোড নম্বর ব্যবহার করে জেলার বুড়িচং মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও গণিত বিষয়ের প্রধান পরীক্ষক কামরুল হাসানের সাথে আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে অন্যান্য পরীক্ষক দিয়ে ৬টি বিষয়ের কিছু উত্তরপত্রে ৬৫ পেলেও কভার পৃষ্ঠায় ৮০ এবং মার্কসীটে ৭০ কে ৮০ বানানো হয়েছে। যা বুড়িচং এর ময়নামতি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও বিজ্ঞান বিষয়ের প্রধান পরীক্ষক ফরিদা আক্তার এবং তিতাসের কালাইগোবিন্দপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুন্নাহারের সাথে আলাপচারিতায় বেরিয়ে আসে এসব তর্থ্য।
উপজেলার গাজীপুর মডেল ও বাতাকান্দি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উত্তরপত্র গুলোর ভেতরের নম্বর, কভার পৃষ্ঠার নম্বর ও মাকর্সীটের নম্বর মিলালে সত্যতা পাওয়া যাবে বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।
এব্যাপারে কালাইগোবিন্দপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুন্নাহার বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না এবং এ ব্যাপারে কারো সাথে কোন কথা হয়নি।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক সাখাওয়াত হোসেন বলেন, পিইসি খাতার গোপান কোড নম্বর একমাত্র উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ছাড়া অন্য কেউ জানার কথা নয়। শিক্ষা অফিসের অসাধু চক্রের সঙ্গে জড়িত না থাকলে তিতাসের খাতা বুড়িচং উপজেলায় গেছে তা শিক্ষকরা কিভাবে জানতে পারল?
গাজীপুর মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মাহবুবুল হক সরকার জানান, গোপনীয় কোড নম্বর হাতিয়ে নেয়ার প্রশ্নই উঠে না। এটা অফিসের বিষয়। আর ঐদিন আমাদের বুড়িচং শিক্ষক সমিতির লোকজন আমাদের সাথে মতবিনিময় করতে এসেছে এবং পরবর্তীতে তারা মেঘনায়ও মতবিনিময় করে ঢাকার একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেয়। আমাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট।
এব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল আউয়াল বলেন, উপজেলার প্রধান ও সহকারী শিক্ষকদের একটি অভিযোগ পেয়েছি। তবে আমার জানা মতে পিইসি পরীক্ষার খাতার গোপনীয় নম্বর কেউ জানার কথা নয়। যেহেতু অভিযোগ উঠেছে সেহেতু উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যে ব্যবস্থা নেবে তাই গ্রহণ করা হবে।
তিতাস উপজেলা নির্বাহী অফিসার মকিমা বেগম বলেন, পিইসি পরীক্ষার খাতার গোপন কোড নম্বর হ্যাক করে কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনিয়ম করেছে বলে অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি সম্পর্কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে অবগত করা হয়েছে।