ঢাকা ০৩:৩১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০১ অক্টোবর ২০২৪, ১৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দাউদকান্দিতে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ

দাউদকান্দি (কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ

কুমিল্লার দাউদকান্দিতে হাসপাতালের চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনার পর প্রসূতির বিক্ষুব্ধ স্বজনরা ওই হাসপাতালটি ঘেরাও করার চেষ্ঠা করলে পুলিশ হাসপাতালের মালিক ও নিহত প্রসূতির মরদেহ ফাঁড়িতে নিয়ে আসলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। আজ সোমবার ভোরে দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুরে রংধনু হাসপাতালের সামনে এ ঘটনা ঘটে।  এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা তিন সদস্য তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

নিহত প্রসূতির নাম নূর জাহান বেগম(২৪)। তিনি তিতাস উপজেলার বাগাইয়ারামপুর গ্রামের দিনমজুর ডালিম মিয়ার স্ত্রী।

পুলিশ ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার রাতে তিতাস উপজেলার বাগাইয়ারামপুর গ্রামের দিন মজুর ডালিম মিয়ার স্ত্রী নূর জাহান বেগমের প্রসব ব্যাথা হলে তাকে তিতাস হাসপাতালে নিয়ে গেলে এক দালাল তাকে রংধনু হাসপাতালে কম দামে ভাল ডাক্তার দিয়ে সিজার করে দিবে বলে নিয়ে আসে। রংধনু হাসপাতালে নিয়ে আসার পরে ভাড়া করা সার্জন ডাক্তার শাহনেওয়াজ পারভিন ও এনেসথিসিয়া ডাক্তার সিরাজুল ইসলাম নূর জাহান বেগমের সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে এক ছেলে শিশু প্রসব করায়। কিন্তু অপারেশন করার পর প্রসূতির রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়ায় পরদিন শনিবার তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন তারা। পরে ঢাকা মেডিক্যালে নেয়ার পর সেখানকার চিকিৎসক পরীক্ষা করে দেখেন তার ভুল অপারেশন করায় তার রক্তক্ষরণ বন্ধ হচ্ছে না। পরে রবিবার রাতে তার মৃত্যু হয়। ভুল অপারেশনের বিষয়টি জানতে পেরে রোগীর স্বজনরা প্রসূতির মরদেহ রংধনু হাসপাতালে নিয়ে এসে হৈ-চৈ ও চিৎকার করে হাসপাতালটি ঘেরাও করার চেষ্ঠা করলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে রোগীর মৃত্যুর খবর শুনে ওই দুই চিকিৎসক পালিয়ে যায়।

নিহতের স্বামী ডালিম মিয়া বলেন, হাসপাতালের মালিক মুকবুল হোসেন বলেছে তার হাসপাতালে ভাল ডাক্তার আছে, ৯ হাজার টাকার মধ্যে সিজার করাইয়া দিবে। ভুয়া ডাক্তার দিয়ে ভুল চিকিৎসা করাইয়া আমার স্ত্রীকে হত্যা করছে। আমি এর বিচার চাই।

এ ব্যাপারে গৌরীপুর তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ আসম আব্দুন নূর বলেন, ভোরে রংধনু হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর খবর শুনে দ্রুত ঘটনা স্থলে যাই। অপ্রিতিকর ঘটনা এরাতে হাসিপাতালের মালিক ও রোগীকে ফাড়িতে নিয়ে আসি। নিহতের পরিবারের পড়্গ থেকে অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ জালাল হোসেন বলেন, এই হাসপাতালের লাইসেন্সের মেয়াধ শেষ। তবে এখানে যারা সিজার করেছে কেউ কোনো সরকারি চিকিৎসক নয়। ঘটনাটি তদন্তে হাসপাতালের গাইনী বিশেষজ্ঞ ডাক্তার সম্পা ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ঠ্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মুরাদনগরে জাতীয় কন্যা শিশু দিবস পালিত

দাউদকান্দিতে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ

আপডেট সময় ০১:৪৮:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ অগাস্ট ২০১৮
দাউদকান্দি (কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ

কুমিল্লার দাউদকান্দিতে হাসপাতালের চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনার পর প্রসূতির বিক্ষুব্ধ স্বজনরা ওই হাসপাতালটি ঘেরাও করার চেষ্ঠা করলে পুলিশ হাসপাতালের মালিক ও নিহত প্রসূতির মরদেহ ফাঁড়িতে নিয়ে আসলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। আজ সোমবার ভোরে দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুরে রংধনু হাসপাতালের সামনে এ ঘটনা ঘটে।  এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা তিন সদস্য তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

নিহত প্রসূতির নাম নূর জাহান বেগম(২৪)। তিনি তিতাস উপজেলার বাগাইয়ারামপুর গ্রামের দিনমজুর ডালিম মিয়ার স্ত্রী।

পুলিশ ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার রাতে তিতাস উপজেলার বাগাইয়ারামপুর গ্রামের দিন মজুর ডালিম মিয়ার স্ত্রী নূর জাহান বেগমের প্রসব ব্যাথা হলে তাকে তিতাস হাসপাতালে নিয়ে গেলে এক দালাল তাকে রংধনু হাসপাতালে কম দামে ভাল ডাক্তার দিয়ে সিজার করে দিবে বলে নিয়ে আসে। রংধনু হাসপাতালে নিয়ে আসার পরে ভাড়া করা সার্জন ডাক্তার শাহনেওয়াজ পারভিন ও এনেসথিসিয়া ডাক্তার সিরাজুল ইসলাম নূর জাহান বেগমের সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে এক ছেলে শিশু প্রসব করায়। কিন্তু অপারেশন করার পর প্রসূতির রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়ায় পরদিন শনিবার তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন তারা। পরে ঢাকা মেডিক্যালে নেয়ার পর সেখানকার চিকিৎসক পরীক্ষা করে দেখেন তার ভুল অপারেশন করায় তার রক্তক্ষরণ বন্ধ হচ্ছে না। পরে রবিবার রাতে তার মৃত্যু হয়। ভুল অপারেশনের বিষয়টি জানতে পেরে রোগীর স্বজনরা প্রসূতির মরদেহ রংধনু হাসপাতালে নিয়ে এসে হৈ-চৈ ও চিৎকার করে হাসপাতালটি ঘেরাও করার চেষ্ঠা করলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে রোগীর মৃত্যুর খবর শুনে ওই দুই চিকিৎসক পালিয়ে যায়।

নিহতের স্বামী ডালিম মিয়া বলেন, হাসপাতালের মালিক মুকবুল হোসেন বলেছে তার হাসপাতালে ভাল ডাক্তার আছে, ৯ হাজার টাকার মধ্যে সিজার করাইয়া দিবে। ভুয়া ডাক্তার দিয়ে ভুল চিকিৎসা করাইয়া আমার স্ত্রীকে হত্যা করছে। আমি এর বিচার চাই।

এ ব্যাপারে গৌরীপুর তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ আসম আব্দুন নূর বলেন, ভোরে রংধনু হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর খবর শুনে দ্রুত ঘটনা স্থলে যাই। অপ্রিতিকর ঘটনা এরাতে হাসিপাতালের মালিক ও রোগীকে ফাড়িতে নিয়ে আসি। নিহতের পরিবারের পড়্গ থেকে অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ জালাল হোসেন বলেন, এই হাসপাতালের লাইসেন্সের মেয়াধ শেষ। তবে এখানে যারা সিজার করেছে কেউ কোনো সরকারি চিকিৎসক নয়। ঘটনাটি তদন্তে হাসপাতালের গাইনী বিশেষজ্ঞ ডাক্তার সম্পা ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ঠ্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।