ঢাকা ০৮:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দালালমুক্ত হলো হোমনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

মো: আবু রায়হান চৌধূরী, হোমনা (কুমিল্লা) থেকে:

কুমিল্লার হোমনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স দালালমুক্ত করতে উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ । স্থানীয় সংসদ সদস্য সেলিমা আহমাদ এর দিক নির্দেশনায় এবং হাসপাতালকে দালালমুক্ত করার ঘোষনা বাস্তবায়নের লক্ষে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ জনকল্যাণমূলক উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন রোগী ও এলাকাবাসী।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, হাসপাতালে কোনো দালাল নেই এবং হাসপাতালের পরিবেশটা অন্যান্য দিনের চেয়ে সুন্দর। দালাল মুক্তকরণে পুলিশের সহযোগিতাও নেওয়া হয়েছে এবং পোশাকধারী পুলিশসহ সাদা পোশাকে পুলিশকে টহল দিতে দেখা গেছে।

গত ১৪ নভেম্বর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হাসপাতাল দালালমুক্ত করার বাস্তবায়ণের জন্য এবং ওষুধ ব্যবসায়ীরা যাতে মেয়াদোত্তীর্ন ওষুধ ও ডাক্তার প্রেসক্রিপসন করা ওষুধ বদল করে অন্য ওষুধ বিক্রি করতে না পারে সে জন্য বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং ফার্মেসী মালিকদের সাথে মতবিনিময় করেন। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, সাংবাদিক ও এলাকাবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন। এ উদ্যোগ নেওয়ার পূর্বে বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কর্মরত প্রতিনিধিগন হাসপাতাল চলাকালীন সময়ে ডাক্তারদের চেম্বারের ভিতরে এবং জরুরী বিভাগে অবস্থান করে ভীড় জমাতো।

ডাক্তাররা রোগীদের প্রয়োজনে টেস্ট দিলে তারা প্রেসক্রিপশন নিয়ে টানাটানি এবং রোগীদের বিরক্ত করতো। অনেক সময় রোগীদেরকে জোর করে নিয়ে যাবার চেষ্টা করে হয়রানি এবং দুর্ব্যবহার করতো।

বিভিন্ন সময়ের্ বিভিন্ন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কর্মরত প্রতিনিধিগন মারামারি করেও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে হাসপাতালের পরিবেশ নষ্ট করতো।

এতে রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে ডাক্তারদের অসুবিধার সৃষ্টি হয়েছে এবং রোগীরাও বিভিন্ন বিড়ম্বনার স্বীকার হয়েছে। কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানীতে কর্মরত প্রতিনিধিগনকেও হাসপাতাল চলাকালীন সময়ে ভিতরে ঢুকতে নিষেধ করেছেন, ফলে ওষুধ কোম্পানীর প্রতিনিধিগনও অফিস চলাকালীন সময়ে ভিতরে প্রবেশ করে না।

প্রাইভেট এম্বোলেন্স মালিকদরেকেও ভিতরে রাখতে নিষেধ করার পর ভিতরে এম্বোলেন্স রাখতে দেখা যায়নি। রোগীদরে সাথে কথা বলে জানা গেছে, হাসপাতালের ভিতর ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লোকজন না থাকায় পরিবেশ আগের চেয়ে অনেক সুন্দর হয়েছে। আমরা শান্তি মতো চিকিৎসা সেবা নিতে পারছি এবং ডাক্তাররাও ঠান্ডা মাথায় ঠিকমতো চিকিৎসা দিতে পারছে এবং আমরা নিজেদের ইচ্ছামতো দামাদামি করে পছন্দ মতো জায়গায় গিয়ে শান্তি মতো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে পারছি। চিকিৎসকসহ জনবল সঙ্কট থাকার পরও বেড়েছে রোগীদের চিকিৎসা সেবা। প্রতিদিন আউটডোরে আসায় প্রায় ৪০০-৫০০ রোগী চিকিৎসা সেবা পেয়ে থাকেন এবং জরুরী বিভাগেও বেড়েছে চিকিৎসা সেবার মান। চিকিৎসকসহ জনবল সঙ্কটের দিকে নজর দেওয়ার জন্য উর্ধতন কতৃপক্ষের আহবান জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

এ বিষয়ে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. শহীদ উল্লাহ্ বলেন-অনেকদিন ধরে হাসপাতালকে দালালমুক্ত করার চেষ্টা ছিল। শেষ পর্যন্ত সংসদ সদস্যের সহযোগিতায় তা করতে সক্ষম হয়েছি এবং এ অবস্থা যাতে সব সময় বজায় থাকে সে জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করি।

তিনি আরোও বলেন প্রয়োজনের তুলনায় চিকিৎসক অনেক কম থাকার পরও আমরা নিরলসভাবে বাড়তি সময় দিয়ে হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা. মোহাম্মদ আবদুছ ছালাম সিকদার বলেন-আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর পরই রোগীদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার জন্য হাসপাতালকে সর্বপ্রথম দালাল মুক্ত করার পরিকল্পনা ছিল, সংসদ সদস্য সেলিমা আহমাদ এর দিক নির্দেশনায় এবং উনার একান্ত প্রচেষ্টা ও সহযোগিতায় আস্তে আস্তে তা বাস্তবায়ন করতে পারছি এবং আপনারাদের সকলের সহযোগিতায় তা পুরোপুরি মুক্ত করতে এবং সফল হতে পারবো। প্রতিদিন আমি দাপ্তরিক কাজের পাশাপাশি প্রায় ৭০-৮০ জনের মতো টিকেটের রোগী দেখে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

মুরাদনগরে ৪৬তম জাতীয় বিজ্ঞান মেলার পুরস্কার বিতরন অনুষ্ঠিত

দালালমুক্ত হলো হোমনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

আপডেট সময় ০৩:৪৬:৩৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০১৯

মো: আবু রায়হান চৌধূরী, হোমনা (কুমিল্লা) থেকে:

কুমিল্লার হোমনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স দালালমুক্ত করতে উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ । স্থানীয় সংসদ সদস্য সেলিমা আহমাদ এর দিক নির্দেশনায় এবং হাসপাতালকে দালালমুক্ত করার ঘোষনা বাস্তবায়নের লক্ষে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ জনকল্যাণমূলক উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন রোগী ও এলাকাবাসী।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, হাসপাতালে কোনো দালাল নেই এবং হাসপাতালের পরিবেশটা অন্যান্য দিনের চেয়ে সুন্দর। দালাল মুক্তকরণে পুলিশের সহযোগিতাও নেওয়া হয়েছে এবং পোশাকধারী পুলিশসহ সাদা পোশাকে পুলিশকে টহল দিতে দেখা গেছে।

গত ১৪ নভেম্বর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হাসপাতাল দালালমুক্ত করার বাস্তবায়ণের জন্য এবং ওষুধ ব্যবসায়ীরা যাতে মেয়াদোত্তীর্ন ওষুধ ও ডাক্তার প্রেসক্রিপসন করা ওষুধ বদল করে অন্য ওষুধ বিক্রি করতে না পারে সে জন্য বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং ফার্মেসী মালিকদের সাথে মতবিনিময় করেন। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, সাংবাদিক ও এলাকাবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন। এ উদ্যোগ নেওয়ার পূর্বে বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কর্মরত প্রতিনিধিগন হাসপাতাল চলাকালীন সময়ে ডাক্তারদের চেম্বারের ভিতরে এবং জরুরী বিভাগে অবস্থান করে ভীড় জমাতো।

ডাক্তাররা রোগীদের প্রয়োজনে টেস্ট দিলে তারা প্রেসক্রিপশন নিয়ে টানাটানি এবং রোগীদের বিরক্ত করতো। অনেক সময় রোগীদেরকে জোর করে নিয়ে যাবার চেষ্টা করে হয়রানি এবং দুর্ব্যবহার করতো।

বিভিন্ন সময়ের্ বিভিন্ন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কর্মরত প্রতিনিধিগন মারামারি করেও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে হাসপাতালের পরিবেশ নষ্ট করতো।

এতে রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে ডাক্তারদের অসুবিধার সৃষ্টি হয়েছে এবং রোগীরাও বিভিন্ন বিড়ম্বনার স্বীকার হয়েছে। কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানীতে কর্মরত প্রতিনিধিগনকেও হাসপাতাল চলাকালীন সময়ে ভিতরে ঢুকতে নিষেধ করেছেন, ফলে ওষুধ কোম্পানীর প্রতিনিধিগনও অফিস চলাকালীন সময়ে ভিতরে প্রবেশ করে না।

প্রাইভেট এম্বোলেন্স মালিকদরেকেও ভিতরে রাখতে নিষেধ করার পর ভিতরে এম্বোলেন্স রাখতে দেখা যায়নি। রোগীদরে সাথে কথা বলে জানা গেছে, হাসপাতালের ভিতর ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লোকজন না থাকায় পরিবেশ আগের চেয়ে অনেক সুন্দর হয়েছে। আমরা শান্তি মতো চিকিৎসা সেবা নিতে পারছি এবং ডাক্তাররাও ঠান্ডা মাথায় ঠিকমতো চিকিৎসা দিতে পারছে এবং আমরা নিজেদের ইচ্ছামতো দামাদামি করে পছন্দ মতো জায়গায় গিয়ে শান্তি মতো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে পারছি। চিকিৎসকসহ জনবল সঙ্কট থাকার পরও বেড়েছে রোগীদের চিকিৎসা সেবা। প্রতিদিন আউটডোরে আসায় প্রায় ৪০০-৫০০ রোগী চিকিৎসা সেবা পেয়ে থাকেন এবং জরুরী বিভাগেও বেড়েছে চিকিৎসা সেবার মান। চিকিৎসকসহ জনবল সঙ্কটের দিকে নজর দেওয়ার জন্য উর্ধতন কতৃপক্ষের আহবান জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

এ বিষয়ে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. শহীদ উল্লাহ্ বলেন-অনেকদিন ধরে হাসপাতালকে দালালমুক্ত করার চেষ্টা ছিল। শেষ পর্যন্ত সংসদ সদস্যের সহযোগিতায় তা করতে সক্ষম হয়েছি এবং এ অবস্থা যাতে সব সময় বজায় থাকে সে জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করি।

তিনি আরোও বলেন প্রয়োজনের তুলনায় চিকিৎসক অনেক কম থাকার পরও আমরা নিরলসভাবে বাড়তি সময় দিয়ে হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা. মোহাম্মদ আবদুছ ছালাম সিকদার বলেন-আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর পরই রোগীদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার জন্য হাসপাতালকে সর্বপ্রথম দালাল মুক্ত করার পরিকল্পনা ছিল, সংসদ সদস্য সেলিমা আহমাদ এর দিক নির্দেশনায় এবং উনার একান্ত প্রচেষ্টা ও সহযোগিতায় আস্তে আস্তে তা বাস্তবায়ন করতে পারছি এবং আপনারাদের সকলের সহযোগিতায় তা পুরোপুরি মুক্ত করতে এবং সফল হতে পারবো। প্রতিদিন আমি দাপ্তরিক কাজের পাশাপাশি প্রায় ৭০-৮০ জনের মতো টিকেটের রোগী দেখে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি।