ঢাকা ০৪:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দেশে আয়োডিন স্বল্পতায় জটিল রোগে ৬ কোটি মানুষ

লাইফস্টাইল ডেস্কঃ

দেশের প্রায় ৬ কোটি মানুষ আয়োডিন স্বল্পতার শিকার। আর ৩ কোটি মানুষ জানেন না যে, তারা আয়োডিন ঘাটতির শিকার হয়ে স্বল্প বুদ্ধি ও শিখন ক্ষমতা কমে যাওয়াসহ নানা জটিল রোগে ভুগছেন। এমন তথ্য জানিয়েছে ‘আয়োডিন ও লবণ রিসার্চ সেন্টারের’ গবেষকরা।

 

গতকাল কলাবাগানের পবা কার্যালয়ে আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন। ‘পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন’-(পবা) ও ‘আয়োডিন ও লবণ রিসার্চ সেন্টার’ যৌথভাবে এ গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজনে করে।

মূল প্রবন্ধে আয়োডিন ও লবণ রিসার্চ সেন্টারের গবেষক মো. মোনজুরুর হক বলেন, মানুষের মাথায় চুল কম, স্থূলদেহ, ছেলেমেয়েরা খাটো হয়ে যাচ্ছে, মেয়েরা সংখ্যায় বেশি খাটো, স্কুল পড়ুয়াদের পড়াশোনায় মন বসে না, স্মরণশক্তি ও ধৈর্য-ক্ষমতা কম ইত্যাদি বিষয় আজকাল লোকসমাজে আলোচনা হয়। তাছাড়া নানা রোগব্যাধি তো লেগে আছেই। এসব ঘটনা দেহে আয়োডিনের অভাবের কারণে হতে পারে।

তিনি আরো বলেন, বর্তমানে আয়োডিনের অভাব হয়ত কমেছে, তবে গলগন্ড ছাড়া অন্যান্য সমস্যা যে বৃদ্ধি পায়নি তা জোর দিয়ে বলার সুযোগ নেই। আয়োডিনের অভাব হয় শিশু জন্মের আগেই। মহিলাদের গর্ভবতী অবস্থায় আয়োডিনের ঘাটতি বেশি হলে মৃত সন্তান প্রসব, গর্ভপাত, শিশুর জন্মগত অস্বাভাবিকতা, বামনত্ব এবং অনিরাময়যোগ্য সমস্যার সৃষ্টি করে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশ মোতাবেক একজন মানুষকে দৈনিক সর্বোচ্চ ৫ গ্রাম লবণ খাবার নির্দেশনা দিয়েছে। বিশ্বের প্রতিটি দেশ তা অনুসরণ করে। এই লবণে (সোডিয়াম ক্লোরাইড) থাকা সোডিয়াম একজন মানুষ দৈনিক গ্রহণ করবে সর্বোচ্চ ২ গ্রাম (২০০০ মিলিগ্রাম)। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তা থেকে আরো কমানোর নির্দেশনা দিয়েছে। বিশ্বের প্রতিটি দেশ তা অনুসরণ করে।

বক্তারা বলেন, লবণে আয়োডিনের পরিমাণ এমনভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে যে, প্রতিজন প্রতিদিন ১৪.৫ গ্রাম আয়োডিনযুক্ত লবণ খেলে চাহিদা পূরণ হবে। ১৪.৫ গ্রাম লবণে সোডিয়াম আছে কমপক্ষে ৬৬০০ মিলিগ্রাম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশ, সোডিয়াম পরিমাণ ২০০০ মিলিগ্রামের স্থলে আমরা খাচ্ছি প্রতিজন দৈনিক ৬৬০০ মিলিগ্রাম।

পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা)-এর চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে ও ট্যালেন্ট প্রমোশন ইনিশিয়েটিভের সভাপতি মো. আবদুল মান্নানের সঞ্চালনায় বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আয়োডিন ও লবণ রিসার্চ সেন্টারের গবেষক মো. মোনজুরুর হক। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পবা’র সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান, সম্পাদক ডা. খালেদ শওকত আলী, এম এ ওয়াহেদ, আইসিডিডিআরবি’র সাবেক পরিচালক ও রোগতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ ডা. মুস্তাক হোসেন, কলাবাগান থানার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবুল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর এম আখতারুজ্জামান, গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর সোনিয়া বেগম, অধ্যাপক রীনাথ ফওজিয়া প্রমুখ।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

মুরাদনগরে তিনজনকে কুপিয়ে জখম বাড়ি ভাঙচুর

দেশে আয়োডিন স্বল্পতায় জটিল রোগে ৬ কোটি মানুষ

আপডেট সময় ০৬:১৩:০৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ এপ্রিল ২০১৯
লাইফস্টাইল ডেস্কঃ

দেশের প্রায় ৬ কোটি মানুষ আয়োডিন স্বল্পতার শিকার। আর ৩ কোটি মানুষ জানেন না যে, তারা আয়োডিন ঘাটতির শিকার হয়ে স্বল্প বুদ্ধি ও শিখন ক্ষমতা কমে যাওয়াসহ নানা জটিল রোগে ভুগছেন। এমন তথ্য জানিয়েছে ‘আয়োডিন ও লবণ রিসার্চ সেন্টারের’ গবেষকরা।

 

গতকাল কলাবাগানের পবা কার্যালয়ে আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন। ‘পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন’-(পবা) ও ‘আয়োডিন ও লবণ রিসার্চ সেন্টার’ যৌথভাবে এ গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজনে করে।

মূল প্রবন্ধে আয়োডিন ও লবণ রিসার্চ সেন্টারের গবেষক মো. মোনজুরুর হক বলেন, মানুষের মাথায় চুল কম, স্থূলদেহ, ছেলেমেয়েরা খাটো হয়ে যাচ্ছে, মেয়েরা সংখ্যায় বেশি খাটো, স্কুল পড়ুয়াদের পড়াশোনায় মন বসে না, স্মরণশক্তি ও ধৈর্য-ক্ষমতা কম ইত্যাদি বিষয় আজকাল লোকসমাজে আলোচনা হয়। তাছাড়া নানা রোগব্যাধি তো লেগে আছেই। এসব ঘটনা দেহে আয়োডিনের অভাবের কারণে হতে পারে।

তিনি আরো বলেন, বর্তমানে আয়োডিনের অভাব হয়ত কমেছে, তবে গলগন্ড ছাড়া অন্যান্য সমস্যা যে বৃদ্ধি পায়নি তা জোর দিয়ে বলার সুযোগ নেই। আয়োডিনের অভাব হয় শিশু জন্মের আগেই। মহিলাদের গর্ভবতী অবস্থায় আয়োডিনের ঘাটতি বেশি হলে মৃত সন্তান প্রসব, গর্ভপাত, শিশুর জন্মগত অস্বাভাবিকতা, বামনত্ব এবং অনিরাময়যোগ্য সমস্যার সৃষ্টি করে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশ মোতাবেক একজন মানুষকে দৈনিক সর্বোচ্চ ৫ গ্রাম লবণ খাবার নির্দেশনা দিয়েছে। বিশ্বের প্রতিটি দেশ তা অনুসরণ করে। এই লবণে (সোডিয়াম ক্লোরাইড) থাকা সোডিয়াম একজন মানুষ দৈনিক গ্রহণ করবে সর্বোচ্চ ২ গ্রাম (২০০০ মিলিগ্রাম)। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তা থেকে আরো কমানোর নির্দেশনা দিয়েছে। বিশ্বের প্রতিটি দেশ তা অনুসরণ করে।

বক্তারা বলেন, লবণে আয়োডিনের পরিমাণ এমনভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে যে, প্রতিজন প্রতিদিন ১৪.৫ গ্রাম আয়োডিনযুক্ত লবণ খেলে চাহিদা পূরণ হবে। ১৪.৫ গ্রাম লবণে সোডিয়াম আছে কমপক্ষে ৬৬০০ মিলিগ্রাম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশ, সোডিয়াম পরিমাণ ২০০০ মিলিগ্রামের স্থলে আমরা খাচ্ছি প্রতিজন দৈনিক ৬৬০০ মিলিগ্রাম।

পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা)-এর চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে ও ট্যালেন্ট প্রমোশন ইনিশিয়েটিভের সভাপতি মো. আবদুল মান্নানের সঞ্চালনায় বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আয়োডিন ও লবণ রিসার্চ সেন্টারের গবেষক মো. মোনজুরুর হক। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পবা’র সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান, সম্পাদক ডা. খালেদ শওকত আলী, এম এ ওয়াহেদ, আইসিডিডিআরবি’র সাবেক পরিচালক ও রোগতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ ডা. মুস্তাক হোসেন, কলাবাগান থানার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবুল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর এম আখতারুজ্জামান, গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর সোনিয়া বেগম, অধ্যাপক রীনাথ ফওজিয়া প্রমুখ।