ঢাকা ১২:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশে করোনায় ৪৫ মৃত্যু ও ৩১৭১ জন শনাক্তের রেকর্ড

জাতীয় ডেস্কঃ

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলছে। টানা দুদিন ৪২ মৃত্যুর পর করোনায় গত ২৪ ঘণ্টায় একদিনে ৪৫ মৃত্যুর রেকর্ড হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৯৭৫ জনে। এছাড়া এ সময়ে নতুন শনাক্তের তালিকায় যুক্ত হয়েছেন ৩ হাজার ১৭১ জন। তাদের নিয়ে মোট শনাক্ত হলেন ৭১ হাজার ৬৭৫ জনে। আর নতুন সুস্থ হয়েছেন ৭৭৭ জন।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে যুক্ত হয়ে করোনাভাইরাস সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরেন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা।

তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৫ টি ল্যাবে ১৪ হাজার ৬৬৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নতুন পরীক্ষা ৩ হাজার ১৭১জনের করোনা শনাক্ত হয়। এটি এ যাবতকালের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যা। এর আগে গত ২ জুন এ যাবতকালের মধ্যে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৯১১ জনের করোনা শনাক্তের কথা জানানো হয়। আর গতকাল ৮ জুন ২ হাজার ৭৪৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়। গত ৫ জুন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেকর্ড হয়। সেদিন ২,৮২৮ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্তের কথা জানানো হয়। এ পর্যন্ত ৪ লাখ ৯৫ হাজার ৪৯৫ জনের করোনা পরীক্ষা করে দেশে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৭১ হাজার ৬৭৫ জনে। ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ২১.৬২ শতাংশ।

নাসিমা আরও জানান, এই সময়ে মৃত্যু বরণ করেছেন ৪৫ জন। টানা দুদিন ৪২ মৃত্যুর পর সে সংখ্যা গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড়িয়ে গেল। তার আগে গত ৩১ মে একদিনে সর্বোচ্চ ৪০ জনের মৃত্যুর কথা জানানো হয়। এ নিয়ে মোট মৃত্যু ৯৭৫ জনের। নতুন মৃতদের মধ্যে পুরুষ ৩৩ জন ও নারী ১২ জন।

নতুন মৃতদের মধ্যে ঢাকার ২৮ জন ও চট্টগ্রামের ১১ জন ও রাজশাহী, সিলেট ও রংপুরে ২ জন করে।

তিনি আরও বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন সুস্থ হয়েছেন ৭৭৭ জন। এ নিয়ে মোট ১৫ হাজার ৩৩৬ জন সুস্থ হয়েছেন। ব্রিফিংয়ের করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পরামর্শ দেন অধ্যাপক নাসিমা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, করোনা মোকাবিলায় তরল খাবার, কুসুম গরম পানি ও আদা চা পান করতে হবে। সম্ভব হলে মৌসুমী ফল খাওয়া ও ফুসফুসের ব্যায়াম করা। এ সময় ধূমপান ত্যাগ করতে হবে। কারণ, এটি ফুসফুসের কার্যকারীতা নষ্ট করে দেয়।

চীনের উহান থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী ভাইরাস করোনা বাংলাদেশে প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। সেদিন তিনজনের শরীরে করোনা শনাক্তের কথা জানিয়েছিল আইইডিসিআর।

এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় প্রথম মৃত্যুর খবর আসে। দিন দিন করোনা রোগী শনাক্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ায় নড়েচড়ে বসে সরকার।

ভাইরাসটি যেন ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য ২৬ মার্চ থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয় সব সরকারি-বেসরকারি অফিস। কয়েক দফা বাড়ানো হয় সেই ছুটি, যা এখনও অব্যাহত আছে। ৭ম দফায় বাড়ানো ছুটি চলে ৩০ মে পর্যন্ত। ৩১ মে থেকে সাধারণ ছুটি নেই। তাই অফিস আদালতে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় সরঞ্জামাদি রাখা ও সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার উপর গুরত্ব দেয়া হচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে।

এদিকে, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের সংখ্যা ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডওমিটারের পরিসংখ্যান বলছে, মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে ৪ লাখ ৬ হাজার ১০৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে আক্রান্ত হয়েছেন ৭১ লাখ ৯৩ হাজার ৪৭৮ জন। যার মধ্যে গতকাল একদিনেই আক্রান্ত হয়েছেন এক লাখ ৭ হাজার ৪০৭ জন। আর সুস্থ হয়ে উঠেছে ৩৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫৮৫ জন। গত একদিনে মারা গেছেন ২৫০৮ জন।

ইউরোপে তাণ্ডবের পর ভাইরাসটির সংক্রমণের কেন্দ্র দক্ষিণ এশিয়া ও আমেরিকা। আক্রান্ত ও মৃত্যুতে দীর্ঘদিন ধরে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

করোনাভাইরাসের আক্রমণে সবচেয়ে বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ২০ লাখ ২৬ হাজার ৪৯৩ জন। দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ১৩ হাজার ৫৫ জনের। আক্রান্ত ও মৃত্যুর তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রের ধারেকাছে নেই কোনো দেশ।

করোনায় শনাক্ত মানুষের সংখ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের পরপরই রয়েছে লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। সেখানে এখন মোট আক্রান্ত ৭ লাখ ছাড়িয়েছে। দেশটিতে করোনায় মৃত্যু ছাড়িয়েছে ৩৭ হাজার। দেশটিতে করোনায় মোট ৩৭ হাজার ৩১২ জন মারা গেছেন।

করোনা রোগী শনাক্তের দিক দিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে রাশিয়া। দেশটিতে ৪ লাখ ৭৬ হাজার ৬৫৮ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৫ হাজার ৯৭১ জনের।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

ছাত্র আন্দেলনে আহতদের হাসপাতালে দেখে উপদেষ্টারা প্রতিদিন অফিসে যাওয়া উচিত –কায়কোবাদ

দেশে করোনায় ৪৫ মৃত্যু ও ৩১৭১ জন শনাক্তের রেকর্ড

আপডেট সময় ১০:০৩:৪৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ জুন ২০২০

জাতীয় ডেস্কঃ

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলছে। টানা দুদিন ৪২ মৃত্যুর পর করোনায় গত ২৪ ঘণ্টায় একদিনে ৪৫ মৃত্যুর রেকর্ড হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৯৭৫ জনে। এছাড়া এ সময়ে নতুন শনাক্তের তালিকায় যুক্ত হয়েছেন ৩ হাজার ১৭১ জন। তাদের নিয়ে মোট শনাক্ত হলেন ৭১ হাজার ৬৭৫ জনে। আর নতুন সুস্থ হয়েছেন ৭৭৭ জন।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে যুক্ত হয়ে করোনাভাইরাস সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরেন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা।

তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৫ টি ল্যাবে ১৪ হাজার ৬৬৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নতুন পরীক্ষা ৩ হাজার ১৭১জনের করোনা শনাক্ত হয়। এটি এ যাবতকালের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যা। এর আগে গত ২ জুন এ যাবতকালের মধ্যে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৯১১ জনের করোনা শনাক্তের কথা জানানো হয়। আর গতকাল ৮ জুন ২ হাজার ৭৪৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়। গত ৫ জুন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেকর্ড হয়। সেদিন ২,৮২৮ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্তের কথা জানানো হয়। এ পর্যন্ত ৪ লাখ ৯৫ হাজার ৪৯৫ জনের করোনা পরীক্ষা করে দেশে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৭১ হাজার ৬৭৫ জনে। ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ২১.৬২ শতাংশ।

নাসিমা আরও জানান, এই সময়ে মৃত্যু বরণ করেছেন ৪৫ জন। টানা দুদিন ৪২ মৃত্যুর পর সে সংখ্যা গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড়িয়ে গেল। তার আগে গত ৩১ মে একদিনে সর্বোচ্চ ৪০ জনের মৃত্যুর কথা জানানো হয়। এ নিয়ে মোট মৃত্যু ৯৭৫ জনের। নতুন মৃতদের মধ্যে পুরুষ ৩৩ জন ও নারী ১২ জন।

নতুন মৃতদের মধ্যে ঢাকার ২৮ জন ও চট্টগ্রামের ১১ জন ও রাজশাহী, সিলেট ও রংপুরে ২ জন করে।

তিনি আরও বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন সুস্থ হয়েছেন ৭৭৭ জন। এ নিয়ে মোট ১৫ হাজার ৩৩৬ জন সুস্থ হয়েছেন। ব্রিফিংয়ের করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পরামর্শ দেন অধ্যাপক নাসিমা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, করোনা মোকাবিলায় তরল খাবার, কুসুম গরম পানি ও আদা চা পান করতে হবে। সম্ভব হলে মৌসুমী ফল খাওয়া ও ফুসফুসের ব্যায়াম করা। এ সময় ধূমপান ত্যাগ করতে হবে। কারণ, এটি ফুসফুসের কার্যকারীতা নষ্ট করে দেয়।

চীনের উহান থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী ভাইরাস করোনা বাংলাদেশে প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। সেদিন তিনজনের শরীরে করোনা শনাক্তের কথা জানিয়েছিল আইইডিসিআর।

এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় প্রথম মৃত্যুর খবর আসে। দিন দিন করোনা রোগী শনাক্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ায় নড়েচড়ে বসে সরকার।

ভাইরাসটি যেন ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য ২৬ মার্চ থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয় সব সরকারি-বেসরকারি অফিস। কয়েক দফা বাড়ানো হয় সেই ছুটি, যা এখনও অব্যাহত আছে। ৭ম দফায় বাড়ানো ছুটি চলে ৩০ মে পর্যন্ত। ৩১ মে থেকে সাধারণ ছুটি নেই। তাই অফিস আদালতে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় সরঞ্জামাদি রাখা ও সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার উপর গুরত্ব দেয়া হচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে।

এদিকে, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের সংখ্যা ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডওমিটারের পরিসংখ্যান বলছে, মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে ৪ লাখ ৬ হাজার ১০৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে আক্রান্ত হয়েছেন ৭১ লাখ ৯৩ হাজার ৪৭৮ জন। যার মধ্যে গতকাল একদিনেই আক্রান্ত হয়েছেন এক লাখ ৭ হাজার ৪০৭ জন। আর সুস্থ হয়ে উঠেছে ৩৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫৮৫ জন। গত একদিনে মারা গেছেন ২৫০৮ জন।

ইউরোপে তাণ্ডবের পর ভাইরাসটির সংক্রমণের কেন্দ্র দক্ষিণ এশিয়া ও আমেরিকা। আক্রান্ত ও মৃত্যুতে দীর্ঘদিন ধরে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

করোনাভাইরাসের আক্রমণে সবচেয়ে বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ২০ লাখ ২৬ হাজার ৪৯৩ জন। দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ১৩ হাজার ৫৫ জনের। আক্রান্ত ও মৃত্যুর তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রের ধারেকাছে নেই কোনো দেশ।

করোনায় শনাক্ত মানুষের সংখ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের পরপরই রয়েছে লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। সেখানে এখন মোট আক্রান্ত ৭ লাখ ছাড়িয়েছে। দেশটিতে করোনায় মৃত্যু ছাড়িয়েছে ৩৭ হাজার। দেশটিতে করোনায় মোট ৩৭ হাজার ৩১২ জন মারা গেছেন।

করোনা রোগী শনাক্তের দিক দিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে রাশিয়া। দেশটিতে ৪ লাখ ৭৬ হাজার ৬৫৮ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৫ হাজার ৯৭১ জনের।