জাতীয় :
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশে রেকর্ড ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৭৫ জনে। একই সময়ে নতুন করে ২৬৬ জনের দেহে ভাইরাসটির সংক্রমণ ধরা পড়েছে। আর সুস্থ হয়েছেন ৯জন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইলন হেলথ বুলেটিনে যুক্ত হয়ে এসব তথ্য জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
মন্ত্রী বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ২১৯০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২৬৬ জনের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা হলো ১৮৩৮ জন। আর মারা গেছেন ১৫জন। এছাড়া এই সময়ের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৯জন। এ নিয়ে মোট ৫৮ জন সুস্থ হলেন।
২০১৯ সালের শেষ দিন চীনের উহান শহর থেকে শুরুর পর বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া নভেল করোনাভাইরাস বাংলাদেশে প্রথম শনাক্ত হয় মার্চ মাসের ৮ তারিখে। সেদিন তিনজনের শরীরে করোনা শনাক্তের কথা জানিয়েছিল আইইডিসিআর।
১৮ মার্চ আইইডিসিআরের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে করোনায় প্রথম একজনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়। এরপর আজ একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর তথ্য জানালো হলো।
এছাড়া স্বাস্থ্যমন্ত্রী চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, দেশের প্রতিটি হাসপাতালে অক্সিজেনের ব্যবস্থা রয়েছে। যা করোনাভাইরাসের রোগীর জন্য বেশি প্রয়োজন। তবে করোনা আক্রান্তদের ৮০ শতাংশের বেশি রোগীর কোনো চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না। অন্যদের অক্সিজেন সাপোর্ট ও কিছু ওষুধ লাগতে পারে।
‘সারাদেশে এক সপ্তাহের মধ্যে আইসিইউ সাপোর্ট নিয়েছেন ২৭ জন। অর্থাৎ, প্রায় ১ দশমিক ৮ শতাংশ রোগী আইসিইউ সাপোর্ট নিয়েছেন। এই হারে ১০ হাজার রোগী যদি আইসিইউ সাপোর্ট নেন, তাহলে ১৮০টি ভেন্টিলেটর সাপোর্ট লাগবে।’
অনলাইন বুলেটিন যুক্ত হয়ে আইইডিসিআর পরিচালক মিরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা জানান, ২১ থেকে ৫০ বছর বয়সীদের মধ্যে সংক্রমণের হার বেশি। মোট আক্রান্তদের মধ্যে ৬৮ শতাংশ পুরুষ ও ৩২ শতাংশ নারী। আর মোট ১৮৩৮ জন আক্রান্তের মোট ৪৬ ভাগ রাজধানী ঢাকার বাসিন্দা, নারায়ণগঞ্জে ২০ ভাগ। এছাড়া গাজীপুর, চট্টগ্রাম মুন্সীগঞ্জেও আক্রান্ত বাড়ছে বলে জানান ফ্লোরা। তিনি আরও বলেন, ঢাকার মধ্যে মিরপুরের টোলারবাগে, মোহাম্মদপুর, ওয়ারী ও যাত্রাবাড়ী এলাকাতে সংক্রমণের সংখ্যা বেশি।
ডা. ফ্লোরা জানান, আক্রান্ত এক হাজার ৮৩৮ জনের মধ্যে বর্তমানে ভর্তি রয়েছেন প্রায় ৫০০ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ৬৮ শতাংশ বাড়িতে ও ৩২ শতাংশ হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করছেন। তবে হাসপাতালে যারা ভর্তি হয়েছেন তাদের সবার ক্ষেত্রে ভর্তির প্রয়োজন ছিল না। সামাজিক চাপের কারণে তাদের বাড়িতে না রেখে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দিতে হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইনেও বলা আছে, কেউ চাইলে বাসায় থেকেই চিকিৎসা নিতে পারেন, এতে হাসপাতালের ওপর চাপ কম পড়বে।