ঢাকা ০৩:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নাঙ্গলকোটে নির্বাচনী সহিংসতায় আহত একজনের মৃত্যু

কুমিল্লা প্রতিনিধিঃ

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নির্বাচনী সহিংসতায় আহত বেকারি শ্রমিক শাকিল হোসেন (২১) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে তিনি মারা যান। নিহত শাকিল উপজেলার পেড়িয়া ইউনিয়নের আশারকোটা গ্রামের দিনমজুর আবুল খায়েরের ছেলে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে শুক্রবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পঞ্চম ধাপের নাঙ্গলকোটের পেড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিল নিয়ে পেড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ও সাবেক চেয়ারম্যান এম এ হামিদ গত বুধবার রাত সাড়ে ৮টায় মাধবপুর গ্রামের কামালের গরুর খামারের সামনে পথসভা করেন। এ সময় মাধবপুর গ্রামের ইউপি সদস্য বাবুল গাজীর নেতৃত্বে ১৫/২০ জনের একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে অতর্কিতভাবে পথসভায় হামলা করে। হামলায় শাকিলসহ ছয় থেকে সাত ব্যক্তি আহত হন। ওই সময় শাকিল উপজেলার জোড্ডা পূর্ব ইউনিয়নে পানকরা গ্রামে তার খালা রিনা বেগমের লাশ দাফন করে আশারকোটায় নিজ গ্রামে যাওয়ার পথে সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হন।

আহত অন্যরা হলেন, মাহফুজ (৩২), ফরহাদ (২০), ফরিদ (২৫), মোহন (২৮) ও রুবেল (২৫)। সন্ত্রাসীরা শাকিলের মাথায়, গায়ে কুপিয়ে এবং এলোপাতাড়ি পিটিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় পার্শ্ববর্তী খালে ফেলে দেয়। খবর পয়ে শাকিলের চাচা গোলাফ হোসেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় খাল থেকে তাকে উদ্ধার করে নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। পরে তার অবস্থার অবনতি হলে বৃহষ্পতিবার সকালে তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। আবারো তার অবস্থার অবনতি হলে ওইদিন দুপুরে তাকে প্রথমে ঢাকার বেসরকারি ইউনাইটেড হাসপতালে ভর্তির জন্য নেয়া হয়। কিন্তু ওই বেসরকারি হাসপতাল কর্তৃপক্ষ শাকিলকে ভর্তি করেনি। পরে শাকিলকে বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

নিহত শাকিলের বাবা আবুল খায়ের বলেন, আমার ছেলে গত ছয় বছর থেকে ঢাকাসহ বিভিন্নস্থানে বেকারি শ্রমিক হিসেবে কাজ করে আসছিল। শাকিল গত এক মাস আগে ঢাকা থেকে ছুটিতে বাড়ি আসে। গত বুধবার রাত সাড়ে ৭টায় শাকিল তার খালা রিনা বেগমের লাশ দাফন করে বাড়ি আসার পথে হামলার শিকার হয়। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।

স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী এম এ হামিদ বলেন, মাধবপুর গ্রামে আমার পথসভা চলার সময় ইউপি সদস্য বাবুল গাজীর নেতৃত্বে একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ পূর্বপরিকল্পিতভাবে দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে হামলা করে। হামলায় শাকিলসহ ছয় থেকে সাত ব্যক্তি আহত হন। আহতদের মধ্যে শাকিলের মৃত্যু হয়। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফারুক হোসেন বলেন, এ ব্যাপারে এখনো মামলা হয়নি। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছি। মামলা হলে তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মুরাদনগরে পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রবাসীর বাড়ি ঘরে হামলা, নারীসহ আহত ৩

নাঙ্গলকোটে নির্বাচনী সহিংসতায় আহত একজনের মৃত্যু

আপডেট সময় ০২:৩৫:০০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২১

কুমিল্লা প্রতিনিধিঃ

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নির্বাচনী সহিংসতায় আহত বেকারি শ্রমিক শাকিল হোসেন (২১) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে তিনি মারা যান। নিহত শাকিল উপজেলার পেড়িয়া ইউনিয়নের আশারকোটা গ্রামের দিনমজুর আবুল খায়েরের ছেলে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে শুক্রবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পঞ্চম ধাপের নাঙ্গলকোটের পেড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিল নিয়ে পেড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ও সাবেক চেয়ারম্যান এম এ হামিদ গত বুধবার রাত সাড়ে ৮টায় মাধবপুর গ্রামের কামালের গরুর খামারের সামনে পথসভা করেন। এ সময় মাধবপুর গ্রামের ইউপি সদস্য বাবুল গাজীর নেতৃত্বে ১৫/২০ জনের একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে অতর্কিতভাবে পথসভায় হামলা করে। হামলায় শাকিলসহ ছয় থেকে সাত ব্যক্তি আহত হন। ওই সময় শাকিল উপজেলার জোড্ডা পূর্ব ইউনিয়নে পানকরা গ্রামে তার খালা রিনা বেগমের লাশ দাফন করে আশারকোটায় নিজ গ্রামে যাওয়ার পথে সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হন।

আহত অন্যরা হলেন, মাহফুজ (৩২), ফরহাদ (২০), ফরিদ (২৫), মোহন (২৮) ও রুবেল (২৫)। সন্ত্রাসীরা শাকিলের মাথায়, গায়ে কুপিয়ে এবং এলোপাতাড়ি পিটিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় পার্শ্ববর্তী খালে ফেলে দেয়। খবর পয়ে শাকিলের চাচা গোলাফ হোসেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় খাল থেকে তাকে উদ্ধার করে নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। পরে তার অবস্থার অবনতি হলে বৃহষ্পতিবার সকালে তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। আবারো তার অবস্থার অবনতি হলে ওইদিন দুপুরে তাকে প্রথমে ঢাকার বেসরকারি ইউনাইটেড হাসপতালে ভর্তির জন্য নেয়া হয়। কিন্তু ওই বেসরকারি হাসপতাল কর্তৃপক্ষ শাকিলকে ভর্তি করেনি। পরে শাকিলকে বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

নিহত শাকিলের বাবা আবুল খায়ের বলেন, আমার ছেলে গত ছয় বছর থেকে ঢাকাসহ বিভিন্নস্থানে বেকারি শ্রমিক হিসেবে কাজ করে আসছিল। শাকিল গত এক মাস আগে ঢাকা থেকে ছুটিতে বাড়ি আসে। গত বুধবার রাত সাড়ে ৭টায় শাকিল তার খালা রিনা বেগমের লাশ দাফন করে বাড়ি আসার পথে হামলার শিকার হয়। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।

স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী এম এ হামিদ বলেন, মাধবপুর গ্রামে আমার পথসভা চলার সময় ইউপি সদস্য বাবুল গাজীর নেতৃত্বে একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ পূর্বপরিকল্পিতভাবে দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে হামলা করে। হামলায় শাকিলসহ ছয় থেকে সাত ব্যক্তি আহত হন। আহতদের মধ্যে শাকিলের মৃত্যু হয়। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফারুক হোসেন বলেন, এ ব্যাপারে এখনো মামলা হয়নি। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছি। মামলা হলে তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।