গ্রেট ব্রিটেনের লোটন অঞ্চলের ৭ বছর বয়সী মেয়ে মারিয়া (maariya) পুরো কোরআন মুখস্থ করে বিস্ময়ের জন্ম দিয়েছে। তাকে নিয়ে ব্রিটেনভিত্তিক ওয়েবসাইট ইলমফিড.কম (ilmfeed.com) একটি অনুপ্রেরণামূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
রফিক ইবনে জোবায়েরের করা ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মারিয়া যুদ্ধ কবলিত সিরিয়ার জন্য অর্থ সংগ্রহের লক্ষে একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনায় সূরা ইয়াসিনের প্রতিযোগিতার অংশ নেয়। তখন তার বয়স ছিল মাত্র ৫ বছর।
সে ওই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দ্রুততম সময়ে সূরা ইয়াসিন মুখস্থ করে ফেলে। তার মুখস্থ করার অসাধারণ দক্ষতার প্রেক্ষিতে তাকে স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় ভর্তি করা হয়। এখানে সে মাত্র দুই বছরে পুরো কোরআন অত্যন্ত সুন্দরভাবে মুখস্থ করতে সক্ষম হয়।
মারিয়ার মায়েরও লক্ষ্য ছিল, সে যেন দ্রুত কোরআন মুখস্থ করতে সক্ষম হয়। তাই মারিয়াকে হাফেজ বানানোর জন্য তাকে গাইড করতে থাকে। তার ভাষায়, ‘মারিয়া যদিও কোরআনের অর্থ উপলব্ধি করে না, কিন্তু সে খুব ভালোভাবে মুখস্থ করতে পারে। কোরআনের অর্থ ও ব্যাখ্যা বুঝার জন্য অনেক সময় রয়েছে। কিন্তু এখন সে মুখস্থ করুক। এ ধারণা থেকেই আমি তাকে মুখস্থ করার প্রতি বেশি জোড় দেই। যদিও কাজটি খুব সহজ ছিল না। আমাকে এবং মারিয়াকে এ জন্য অনেক পরিশ্রম ও ধৈর্যধারণ করতে হয়েছে। আমি মহান আল্লাহর দরবারে কৃতজ্ঞ যে, আমার আবেগ সফলতার মুখ দেখেছে।’
মারিয়া দৈনিক ৫ ঘণ্টা পবিত্র কোরআনের নতুন অংশ মুখস্থ করত। এর পর বাকি সময় পেছনের পড়াগুলো পুনরাবৃত্তি করতো। এর ফাঁকে অন্যান্য কাজগুলো করতে হতো। একটি কঠিন কার্যতালিকা তাকে অনুসরণ করতে হয়েছে কোরআন মুখস্থ করার সময়।
মারিয়াকে কোরআন মুখস্থের প্রতি অনুপ্রাণিত করার জন্য তার মা, কোরআনে কারিমে কিছু অংশ মুখস্থ হয়ে গেলেই তাকে কিছু একটা উপহার দিয়ে উদ্দীপ্ত করতেন। সেই পুরস্কারগুলো হতো একটি খেলনা, একটি রং বই অথবা ভালো কোনো রেস্টুরেন্টের খাবার। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মারিয়াই পুরস্কার কী হবে সেটা নির্বাচন করতো।
মাত্র দুই বছরে পুরো কোরআন মুখস্থ সম্পন্ন হলে তার হিফজ সমাপনী উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠান করা হয়। ওই অনুষ্ঠানে মারিয়াকে তার কৃতিত্বের জন্য বিশেষ ধন্যবাদ প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত মানুষের অনুরোধে কোরআনে কারিমের বেশ কিছু অংশ থেকে তেলাওয়াত করে শোনায় মারিয়া।
মারিয়ার মা তার মেয়ের সাফল্য বেশ গর্বিত।