ঢাকা ০৪:১২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রথম দিন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ২৫৩

খেলাধুলা ডেস্কঃ
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে প্রথম দিন শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৫৩ রান করেছে। বাংলাদেশ। সোমবার টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে সাব্বির ও মুশফিকের হাফ সেঞ্চুরিতে স্পিনবান্ধব উইকেটে এই লড়াকু সংগ্রহ অর্জন করতে সক্ষম হয়।
উইকেটে মুশফিকুর রহিম ৬২ ও নাসির হোসেইন ১৯ রান করে অপরাজিত আছেন। বাংলাদেশের ৬ উইকেটের ৫টিই নিয়েছেন নাথান লায়ন।
সাব্বিরের ৬৬ ও মুশফিকুরের অপরাজিত ৬২ রানের সুবাদে ভালো অবস্থানে আছে বাংলাদেশ। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচেও টস জিতে এবার প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিতে কার্পণ্য করেননি বাংলাদেশ অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। তার সিদ্ধান্তে ব্যাট হাতে নেমে রক্ষণাত্মক ভঙ্গিমায় শুরু করেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার। প্রথম ৯ ওভারে মাত্র ১৩ রান যোগ করেন তারা। তবে দশম ওভারেই বিচ্ছিন্ন হয়ে যান তামিম ও সৌম্য। অস্ট্রেলিয়ার অফ-স্পিনার নাথান লায়নের বলে লেগ বিফোর ফাঁদে পড়েন তামিম। ৩৪ বল মোকাবেলা করে ৯ রান করেন তামিম।
তিন নম্বরে ব্যাট হাতে নেমে এবারও ব্যর্থ ইমরুল কায়েস। ১১ বলে ৪ রান করে লায়নের ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউ হন ইমরুল। ২১ রানে ২ উইকেট হারানোর পর বাংলাদেশকে খেলার ফেরানোর চেষ্টা করেন সৌম্য ও মোমিনুল। অনেকটা সর্তক অবস্থাতেই শুরু করেন তারা। তবে খুব বেশিক্ষণ নিজেকে সামলে রাখতে পারেননি সৌম্য। লায়নের উপর কিছুটা চড়াও হন সৌম্য। ইনিংসের ১৬তম ওভারের দ্বিতীয় বলে বাউন্ডারি হাঁকানোর পর শেষ ডেলিভারিতে উইকেট ছেড়ে লং-অন দিয়ে ছক্কা হাঁকান সৌম্য। এতে সাহস ফিরে পান সৌম্য ও মোমিনুল। তাই রান তোলার কাজটা বুঝে-শোনেই করছিলেন সৌম্য ও মোমিনুল।
কিন্তু মধ্যাহ্ন বিরতির আগ মুহূর্তে লায়নের ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন সৌম্য। ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ৮১ বলে গুরুত্বপূর্ণ ৩৩ রান করেন সৌম্য। তার বিদায়ে ৩ উইকেটে ৭০ রান নিয়ে মধ্যাহ্ন বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। সৌম্যের সাথে তৃতীয় উইকেটে ৪৯ রান যোগ করেন মোমিনুল। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তৃতীয় উইকেটে এটি সর্বোচ্চ রান।
বিরতিতে থেকে ফেরার পর উইকেট পতনের তালিকায় নাম তোলেন মোমিনুলও। লায়নের চতুর্থ শিকার হবার আগে ২টি চারে ৬৭ বলে ৩১ রান করেন মোমিনুল। এলবিডব্লিুউ তামিম-সৌম্য-ইমরুল-মোমিনুলকে শিকার করেন লায়ন। ফলে টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে একই বোলারের কাছে উপরের সারির প্রথম চার ব্যাটসম্যানের এলবিডব্লিউ হয়ে আউট হওয়া নতুন রেকর্ড গড়ে বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানরা।
৮৫ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে থাকা বাংলাদেশকে চিন্তামুক্ত করার দায়িত্ব পান ঢাকা টেস্টের নায়ক সাকিব আল হাসান। তার সঙ্গী ছিলেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। ৩টি বাউন্ডারিতে ভালো কিছু করার ইঙ্গিতও দেন সাকিব। কিন্তু সাকিবের পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়ান অস্ট্রেলিয়ার বাঁ-হাতি স্পিনার অ্যাশটন অ্যাগার। সাকিবকে ২৪ রানের বেশি করতে দেননি অ্যাগার।
১১৭ রানে পঞ্চম উইকেট হারানোর পর চা-বিরতি আগ পর্যন্ত সর্তকতার সাথেই খেলতে থাকেন মুশফিকুর ও সাব্বির রহমান। এমন অবস্থায় ৫ উইকেটে ১৫৫ রান নিয়ে চা-বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। এসময় অধিনায়ক মুশফিক ২৯ ও সাব্বির রহমান ২৪ রানে অপরাজিত ছিলেন।
চা-পানের ছোট্ট বিরতি শেষেও নিজেদের মতো করে খেলেছেন মুশফিক ও সাব্বির। অস্ট্রেলিয়া বোলারদের উপর আধিপত্য বিস্তার করে খেলে দলের স্কোর ২শ’ রানে নিয়ে যান এ জুটি। এরপর টেস্ট ক্যারিয়ারে চতুর্থবারের মত ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন সাব্বির।
হাফ-সেঞ্চুরির পরও দমে যাননি সাব্বির। নিজের ইনিংসটাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু নিজ ভুলেই ব্যক্তিগত ৬৬ রানে স্ট্যাম্পিং হয়ে থেমে যান সাব্বির। লায়নের পঞ্চম শিকার হবার আগে ১১৩ বলের ইনিংসে ৬টি চার ও ১টি ছক্কা হাঁকান সাব্বির। মুশফিকের সাথে ষষ্ঠ উইকেটে ১০৫ রান যোগ করেন সাব্বির। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ষষ্ঠ উইকেটে এটি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান।
৮২তম ওভারের দ্বিতীয় বলে সাব্বির আউট হবার দিনের বাকী সময়টুকু আর কোন বিপদ হতে দেননি মুশফিক ও নাসির হোসেন। টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৮তম ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নিয়ে দিন শেষে ৬২ রানে অপরাজিত থাকেন মুশি। তার ১৪৯ বলের ইনিংসে ৫টি চারের মার ছিলো। ৩টি বাউন্ডারিতে ৩৩ বল মোকাবেলা করে ১৯ রানে অপরাজিত নাসির।
অস্ট্রেলিয়ার লায়ন ৭৭ রানে ৫ উইকেট নেন। ৬৯ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে ১১তমবারের মত ও বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয়বারের মত ৫ বা ততোধিক উইকেট নিলেন লায়ন। এছাড়া আগার ৪৬ রানে ১ উইকেট নেন।
ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদের সঙ্গে তুর্কী এমপির সাক্ষাৎ

প্রথম দিন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ২৫৩

আপডেট সময় ০১:০৫:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭
খেলাধুলা ডেস্কঃ
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে প্রথম দিন শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৫৩ রান করেছে। বাংলাদেশ। সোমবার টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে সাব্বির ও মুশফিকের হাফ সেঞ্চুরিতে স্পিনবান্ধব উইকেটে এই লড়াকু সংগ্রহ অর্জন করতে সক্ষম হয়।
উইকেটে মুশফিকুর রহিম ৬২ ও নাসির হোসেইন ১৯ রান করে অপরাজিত আছেন। বাংলাদেশের ৬ উইকেটের ৫টিই নিয়েছেন নাথান লায়ন।
সাব্বিরের ৬৬ ও মুশফিকুরের অপরাজিত ৬২ রানের সুবাদে ভালো অবস্থানে আছে বাংলাদেশ। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচেও টস জিতে এবার প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিতে কার্পণ্য করেননি বাংলাদেশ অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। তার সিদ্ধান্তে ব্যাট হাতে নেমে রক্ষণাত্মক ভঙ্গিমায় শুরু করেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার। প্রথম ৯ ওভারে মাত্র ১৩ রান যোগ করেন তারা। তবে দশম ওভারেই বিচ্ছিন্ন হয়ে যান তামিম ও সৌম্য। অস্ট্রেলিয়ার অফ-স্পিনার নাথান লায়নের বলে লেগ বিফোর ফাঁদে পড়েন তামিম। ৩৪ বল মোকাবেলা করে ৯ রান করেন তামিম।
তিন নম্বরে ব্যাট হাতে নেমে এবারও ব্যর্থ ইমরুল কায়েস। ১১ বলে ৪ রান করে লায়নের ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউ হন ইমরুল। ২১ রানে ২ উইকেট হারানোর পর বাংলাদেশকে খেলার ফেরানোর চেষ্টা করেন সৌম্য ও মোমিনুল। অনেকটা সর্তক অবস্থাতেই শুরু করেন তারা। তবে খুব বেশিক্ষণ নিজেকে সামলে রাখতে পারেননি সৌম্য। লায়নের উপর কিছুটা চড়াও হন সৌম্য। ইনিংসের ১৬তম ওভারের দ্বিতীয় বলে বাউন্ডারি হাঁকানোর পর শেষ ডেলিভারিতে উইকেট ছেড়ে লং-অন দিয়ে ছক্কা হাঁকান সৌম্য। এতে সাহস ফিরে পান সৌম্য ও মোমিনুল। তাই রান তোলার কাজটা বুঝে-শোনেই করছিলেন সৌম্য ও মোমিনুল।
কিন্তু মধ্যাহ্ন বিরতির আগ মুহূর্তে লায়নের ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন সৌম্য। ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ৮১ বলে গুরুত্বপূর্ণ ৩৩ রান করেন সৌম্য। তার বিদায়ে ৩ উইকেটে ৭০ রান নিয়ে মধ্যাহ্ন বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। সৌম্যের সাথে তৃতীয় উইকেটে ৪৯ রান যোগ করেন মোমিনুল। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তৃতীয় উইকেটে এটি সর্বোচ্চ রান।
বিরতিতে থেকে ফেরার পর উইকেট পতনের তালিকায় নাম তোলেন মোমিনুলও। লায়নের চতুর্থ শিকার হবার আগে ২টি চারে ৬৭ বলে ৩১ রান করেন মোমিনুল। এলবিডব্লিুউ তামিম-সৌম্য-ইমরুল-মোমিনুলকে শিকার করেন লায়ন। ফলে টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে একই বোলারের কাছে উপরের সারির প্রথম চার ব্যাটসম্যানের এলবিডব্লিউ হয়ে আউট হওয়া নতুন রেকর্ড গড়ে বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানরা।
৮৫ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে থাকা বাংলাদেশকে চিন্তামুক্ত করার দায়িত্ব পান ঢাকা টেস্টের নায়ক সাকিব আল হাসান। তার সঙ্গী ছিলেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। ৩টি বাউন্ডারিতে ভালো কিছু করার ইঙ্গিতও দেন সাকিব। কিন্তু সাকিবের পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়ান অস্ট্রেলিয়ার বাঁ-হাতি স্পিনার অ্যাশটন অ্যাগার। সাকিবকে ২৪ রানের বেশি করতে দেননি অ্যাগার।
১১৭ রানে পঞ্চম উইকেট হারানোর পর চা-বিরতি আগ পর্যন্ত সর্তকতার সাথেই খেলতে থাকেন মুশফিকুর ও সাব্বির রহমান। এমন অবস্থায় ৫ উইকেটে ১৫৫ রান নিয়ে চা-বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। এসময় অধিনায়ক মুশফিক ২৯ ও সাব্বির রহমান ২৪ রানে অপরাজিত ছিলেন।
চা-পানের ছোট্ট বিরতি শেষেও নিজেদের মতো করে খেলেছেন মুশফিক ও সাব্বির। অস্ট্রেলিয়া বোলারদের উপর আধিপত্য বিস্তার করে খেলে দলের স্কোর ২শ’ রানে নিয়ে যান এ জুটি। এরপর টেস্ট ক্যারিয়ারে চতুর্থবারের মত ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন সাব্বির।
হাফ-সেঞ্চুরির পরও দমে যাননি সাব্বির। নিজের ইনিংসটাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু নিজ ভুলেই ব্যক্তিগত ৬৬ রানে স্ট্যাম্পিং হয়ে থেমে যান সাব্বির। লায়নের পঞ্চম শিকার হবার আগে ১১৩ বলের ইনিংসে ৬টি চার ও ১টি ছক্কা হাঁকান সাব্বির। মুশফিকের সাথে ষষ্ঠ উইকেটে ১০৫ রান যোগ করেন সাব্বির। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ষষ্ঠ উইকেটে এটি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান।
৮২তম ওভারের দ্বিতীয় বলে সাব্বির আউট হবার দিনের বাকী সময়টুকু আর কোন বিপদ হতে দেননি মুশফিক ও নাসির হোসেন। টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৮তম ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নিয়ে দিন শেষে ৬২ রানে অপরাজিত থাকেন মুশি। তার ১৪৯ বলের ইনিংসে ৫টি চারের মার ছিলো। ৩টি বাউন্ডারিতে ৩৩ বল মোকাবেলা করে ১৯ রানে অপরাজিত নাসির।
অস্ট্রেলিয়ার লায়ন ৭৭ রানে ৫ উইকেট নেন। ৬৯ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে ১১তমবারের মত ও বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয়বারের মত ৫ বা ততোধিক উইকেট নিলেন লায়ন। এছাড়া আগার ৪৬ রানে ১ উইকেট নেন।