ঢাকা ০১:৩০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০২ অক্টোবর ২০২৪, ১৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিতে আ.লীগের জয়ের ১৪ কারণ

জাতীয় ডেস্কঃ

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিপুল বিজয় ‘প্রত্যাশিত’ ছিল বলেই মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার দৃষ্টিতে ১৪টি কারণে এই বিপুল বিজয় এসেছে।  তার মতে, দেশব্যাপী ব্যাপক উন্নয়ন, দেশের সর্বস্তরের মানুষের সমর্থন একাদশ জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে বিপুল বিজয়ের দিকে নিয়ে গেছে।

শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে জয়ের এই কারণগুলো উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘নির্বাচনের আগে দেশি-বিদেশি জরিপগুলিও এ রকমই ফলাফলের ইঙ্গিত দিয়েছিল। লন্ডন-ভিত্তিক ইকোনমিক ইনটেলিজেন্স ইউনিট এবং রিসার্স এন্ড ডেভলপমেন্ট সেন্টারের জরিপের ফল আপনারা লক্ষ্য করেছেন।’

৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও তার জোট মহাজোট পেয়েছে ২৮৮টি আসন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জিতেছেন আওয়ামী লীগের আরও দুই জন নেতা। প্রদত্ত ভোটের ৭৬ শতাংশেরও বেশি পড়েছে নৌকা মার্কায়। আর মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টিও আরো পেয়েছে সাত শতাংশের বেশি ভোট।
অন্যদিকে বিএনপি ও তার জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ভোট পেয়েছে সাড়ে ১৩ শতাংশ এবং আসন পেয়েছে আটটি। যদিও তারা এই নির্বাচনের ফলাফল মানতে রাজি নয়। তাদের দাবি, আগের রাতে সিল মেরে এবং ভোটের দিক তাদের সমর্থকদেরকে কেন্দ্রে যেতে বাধা দেওয়ায় এই ফলাফল হয়েছে।
যেসব কারণ চিহ্নিত

# বিগত ১০ বছরে দেশে যে উন্নয়ন হয়েছে, সাধারণ মানুষ তার সুফল পেয়েছেন।

# দশ বছর আগে যে বালক/বালিকাটি হারিকেন বা কুপির আলোয় পড়া-লেখা করত, গ্রামে পাকা রাস্তা দেখেনি, তরুণ বয়সে সে এখন বৈদ্যুতিক বাতির আলোয় পড়াশোনা করছে, মোটরযানে যাতায়াত করছে।

# যে বয়স্ক পুরুষ-নারী পরিবারে ছিল অবহেলিত-অপাংক্তেয়, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা তাঁকে সংসারে সম্মানের জায়গায় নিয়ে গেছে।
# গ্রাম বাংলার খুব কম পরিবারই আছে, যে পরিবার সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর উপকারভোগী নয়। কোন না কোনভাবে প্রতিটি পরিবার উপকৃত হচ্ছেন।

# কৃষি শ্রমিক, নির্মাণ শ্রমিক, ভ্যান বা রিক্সাচালকসহ নি¤œবিত্তের মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটেছে। ১০ বছর পূর্বে একজন কৃষি শ্রমিক তাঁর দৈনিক মজুরি দিয়ে বড় জোর ৩ কেজি চাল কিনতে পারতেন। এখন তিনি ১০ কেজি চাল কিনতে পারেন।

# সরকারি চাকুরিজীবীগণের বেতনভাতা বিগত ১০ বছরে আড়াই থেকে তিন গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

# সরকারি ও বেসরকারি খাতের শ্রমিক-কর্মচারিদের বেতন-ভাতাও সমহারে বেড়েছে। যেমন পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন ১৬০০ টাকা থেকে ৫ গুণ বৃদ্ধি পেয়ে ৮ হাজার টাকা হয়েছে।

# কৃষিজীবীদের সার, বীজসহ বিভিন্ন উপকরণে ভর্তুকি প্রদানের মাধ্যমে প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে।

# ব্যবসায় এবং শিল্প-বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে একদিকে কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে অন্যদিকে রপ্তানি বাণিজ্য প্রসারিত হয়েছে। যার সুবিধা সাধারণ জনগণ পাচ্ছেন।

# পদ্মাসেতু, ঢাকা মেট্রোরেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মহাসড়কগুলোকে চার-লেনে উন্নীতকরণসহ মেগা প্রকল্পগুলো দৃশ্যমান হওয়ায় সাধারণ মানুষের বর্তমান সরকারের উপর আস্থা জন্মেছে।

# মানুষ নিজের এবং দেশের মর্যাদা চায়। আমরা বাংলাদেশকে সেই মর্যাদা এনে দিতে পেরেছি। স্বাধীনতার ৪৪ বছর পর নি¤œ-মধ্যম আয়ের দেশ এবং ৪৬ বছর পর উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা প্রাপ্তি জনগণকেও গর্বিত করেছে। ভিক্ষুকের দেশের দুর্নাম ঘুচেছে। যাঁরা মানুষকে মর্যাদার আসনে বসিয়েছেন, তাঁদের মানুষ মর্যাদা দিবেন- এটাই স্বাভাবিক।

# বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ২০১৪ সালের পর থেকেই নির্বাচনী প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। প্রতিটি সম্ভাব্য প্রার্থী নিজ নিজ এলাকায় জনসংযোগ বাড়িয়েছেন এবং এলাকার উন্নয়নে অবদান রেখেছেন। এবারের নির্বাচনে দলের প্রতিটি নেতাকর্মী মনোনীত প্রার্থীর জন্য কাজ করেছেন।

# আমাদের নির্বাচনী প্রস্তুতি ছিল ব্যাপক। সরাসরি সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের পাশাপাশি আমরা ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়েছি।

# নির্বাচনী প্রচারকালে সমাজের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। ব্যবসায়ী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, কৃষিবিদ, শিক্ষাবিদ, সাবেক আমলা, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এবং সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য, শিল্পী-সাহিত্যিক, সাংবাদিক, ধর্মীয় নেতা- সকলেই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতি প্রকাশ্যে সমর্থন জানিয়েছেন। একটি সমাজের প্রায় সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ যখন কোন দলের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেন, তখন তাকে কোনভাবেই আটকে রাখা যায় না।

প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে নৌকা মার্কায় এবং মহাজোটের শরিক অন্যান্য মার্কায় ভোট দেওয়ায় দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানান। যারা ভোট দেননি তারাও বাদ যাননি অভিনন্দন থেকে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিতে আ.লীগের জয়ের ১৪ কারণ

আপডেট সময় ০১:৫৪:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ জানুয়ারী ২০১৯
জাতীয় ডেস্কঃ

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিপুল বিজয় ‘প্রত্যাশিত’ ছিল বলেই মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার দৃষ্টিতে ১৪টি কারণে এই বিপুল বিজয় এসেছে।  তার মতে, দেশব্যাপী ব্যাপক উন্নয়ন, দেশের সর্বস্তরের মানুষের সমর্থন একাদশ জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে বিপুল বিজয়ের দিকে নিয়ে গেছে।

শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে জয়ের এই কারণগুলো উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘নির্বাচনের আগে দেশি-বিদেশি জরিপগুলিও এ রকমই ফলাফলের ইঙ্গিত দিয়েছিল। লন্ডন-ভিত্তিক ইকোনমিক ইনটেলিজেন্স ইউনিট এবং রিসার্স এন্ড ডেভলপমেন্ট সেন্টারের জরিপের ফল আপনারা লক্ষ্য করেছেন।’

৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও তার জোট মহাজোট পেয়েছে ২৮৮টি আসন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জিতেছেন আওয়ামী লীগের আরও দুই জন নেতা। প্রদত্ত ভোটের ৭৬ শতাংশেরও বেশি পড়েছে নৌকা মার্কায়। আর মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টিও আরো পেয়েছে সাত শতাংশের বেশি ভোট।
অন্যদিকে বিএনপি ও তার জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ভোট পেয়েছে সাড়ে ১৩ শতাংশ এবং আসন পেয়েছে আটটি। যদিও তারা এই নির্বাচনের ফলাফল মানতে রাজি নয়। তাদের দাবি, আগের রাতে সিল মেরে এবং ভোটের দিক তাদের সমর্থকদেরকে কেন্দ্রে যেতে বাধা দেওয়ায় এই ফলাফল হয়েছে।
যেসব কারণ চিহ্নিত

# বিগত ১০ বছরে দেশে যে উন্নয়ন হয়েছে, সাধারণ মানুষ তার সুফল পেয়েছেন।

# দশ বছর আগে যে বালক/বালিকাটি হারিকেন বা কুপির আলোয় পড়া-লেখা করত, গ্রামে পাকা রাস্তা দেখেনি, তরুণ বয়সে সে এখন বৈদ্যুতিক বাতির আলোয় পড়াশোনা করছে, মোটরযানে যাতায়াত করছে।

# যে বয়স্ক পুরুষ-নারী পরিবারে ছিল অবহেলিত-অপাংক্তেয়, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা তাঁকে সংসারে সম্মানের জায়গায় নিয়ে গেছে।
# গ্রাম বাংলার খুব কম পরিবারই আছে, যে পরিবার সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর উপকারভোগী নয়। কোন না কোনভাবে প্রতিটি পরিবার উপকৃত হচ্ছেন।

# কৃষি শ্রমিক, নির্মাণ শ্রমিক, ভ্যান বা রিক্সাচালকসহ নি¤œবিত্তের মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটেছে। ১০ বছর পূর্বে একজন কৃষি শ্রমিক তাঁর দৈনিক মজুরি দিয়ে বড় জোর ৩ কেজি চাল কিনতে পারতেন। এখন তিনি ১০ কেজি চাল কিনতে পারেন।

# সরকারি চাকুরিজীবীগণের বেতনভাতা বিগত ১০ বছরে আড়াই থেকে তিন গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

# সরকারি ও বেসরকারি খাতের শ্রমিক-কর্মচারিদের বেতন-ভাতাও সমহারে বেড়েছে। যেমন পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন ১৬০০ টাকা থেকে ৫ গুণ বৃদ্ধি পেয়ে ৮ হাজার টাকা হয়েছে।

# কৃষিজীবীদের সার, বীজসহ বিভিন্ন উপকরণে ভর্তুকি প্রদানের মাধ্যমে প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে।

# ব্যবসায় এবং শিল্প-বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে একদিকে কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে অন্যদিকে রপ্তানি বাণিজ্য প্রসারিত হয়েছে। যার সুবিধা সাধারণ জনগণ পাচ্ছেন।

# পদ্মাসেতু, ঢাকা মেট্রোরেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মহাসড়কগুলোকে চার-লেনে উন্নীতকরণসহ মেগা প্রকল্পগুলো দৃশ্যমান হওয়ায় সাধারণ মানুষের বর্তমান সরকারের উপর আস্থা জন্মেছে।

# মানুষ নিজের এবং দেশের মর্যাদা চায়। আমরা বাংলাদেশকে সেই মর্যাদা এনে দিতে পেরেছি। স্বাধীনতার ৪৪ বছর পর নি¤œ-মধ্যম আয়ের দেশ এবং ৪৬ বছর পর উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা প্রাপ্তি জনগণকেও গর্বিত করেছে। ভিক্ষুকের দেশের দুর্নাম ঘুচেছে। যাঁরা মানুষকে মর্যাদার আসনে বসিয়েছেন, তাঁদের মানুষ মর্যাদা দিবেন- এটাই স্বাভাবিক।

# বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ২০১৪ সালের পর থেকেই নির্বাচনী প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। প্রতিটি সম্ভাব্য প্রার্থী নিজ নিজ এলাকায় জনসংযোগ বাড়িয়েছেন এবং এলাকার উন্নয়নে অবদান রেখেছেন। এবারের নির্বাচনে দলের প্রতিটি নেতাকর্মী মনোনীত প্রার্থীর জন্য কাজ করেছেন।

# আমাদের নির্বাচনী প্রস্তুতি ছিল ব্যাপক। সরাসরি সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের পাশাপাশি আমরা ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়েছি।

# নির্বাচনী প্রচারকালে সমাজের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। ব্যবসায়ী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, কৃষিবিদ, শিক্ষাবিদ, সাবেক আমলা, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এবং সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য, শিল্পী-সাহিত্যিক, সাংবাদিক, ধর্মীয় নেতা- সকলেই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতি প্রকাশ্যে সমর্থন জানিয়েছেন। একটি সমাজের প্রায় সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ যখন কোন দলের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেন, তখন তাকে কোনভাবেই আটকে রাখা যায় না।

প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে নৌকা মার্কায় এবং মহাজোটের শরিক অন্যান্য মার্কায় ভোট দেওয়ায় দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানান। যারা ভোট দেননি তারাও বাদ যাননি অভিনন্দন থেকে।