জাতীয় ডেস্কঃ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী উড়োজাহাজে যান্ত্রিক ত্রুটির ঘটনায় করা আলোচিত মামলার চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে কাউন্টার টেরোরিজম এ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল সাইবার ক্রাইম ইউনিট। মামলা থেকে ১১ আসামির সবাইকে অব্যাহতি দেওয়ারও আবেদন করা হয়েছে। গতকাল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. মাহবুবুল আলম ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন শাখায় ফৌজদারি বিধান কোষের ১৭৩ ধারামতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। ঢাকা মহানগর অপরাধ, তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার এবং ঢাকার আদালতের পুলিশ প্রধান আনিসুর রহমান মামলার চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) এ এফ এম মনিরুজ্জামান মন্ডল সাংবাদিকদের জানান, তদন্তে নাশকতা, অন্তর্ঘাতি কার্য ও অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের কোন উপাদান পাওয়া যায় নাই। এ কারণে মামলার অভিযোগ প্রমানিত হয় নাই। এ কারনে সকল আসামিকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এজাহার নামীয় এক নম্বর আসামি সিদ্দিকুর রহমান ও এজাহার বহির্ভূত আসামি নাজমুল হক এবং আসামি শাহ আলম তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথ পালনে ব্যর্থ হয়েছেন। তারা যদি সঠিক দায়িত্ব পালন করতেন তাহলে প্রধামন্ত্রীর বিদেশ সফরে নিয়োজিত উড়োজাহাজে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিত না। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর জীবনহানির মতো ঘটনা ঘটিলে দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতির উপর মারাত্বক প্রভাব পড়ত। এমন স্পর্শকাতর বিষয়টি গুরুত্বহীনভাবে সম্পন্ন করায় আসামিদের বিরুদ্ধে তাচ্ছিল্য সহকারে যন্ত্রপাতি দিয়া কাজ করার প্রমান পাওয়া গেছে। মামলার সার্বিক তদন্তে এজাহার নামীয় আসামিদের বিরুদ্ধে নাশকতা, অন্তর্ঘাতী কার্য ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ প্রমানিত হয় নাই। তাই আসামিদের মামলার দায় থেকে অব্যাহতি এবং এজাহার নামীয় আসামি সিদ্দিকুর রহামান ও এজাহার বহির্ভূত আসামি নাজমুল হক এবং আসামি শাহ আলমদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি দন্ডবিধির ২৮৭ ধারায় প্রসিকিউশন দাখিল করা হলো।
মামলার নথি সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ২৭ নভেম্বর হাঙ্গেরি যাওয়ার পথে শেখ হাসিনাকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বোয়িং যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে তুর্কমেনিস্তানের আশখাবাত বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণে বাধ্য হয়। ইঞ্জিন অয়েলের ট্যাংকের একটি বি-নাট ঢিলা থাকায় ওই বিপত্তি ঘটে। সেখানে ত্রুটি সারিয়ে চার ঘণ্টা পর বুদাপেস্টের উদ্দেশে যায় বিমান। ওই উড়োজাহাজের ইঞ্জিন অয়েলের ট্যাংকের একটি নাট ঢিলা হওয়ার পেছনে নাশকতা ছিল কি-না, তা খতিয়ে দেখতে ২৮ নভেম্বর পাঁচ সদস্যের কমিটি করে বিমান মন্ত্রণালয়। পরে ঘটনা তদন্তে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এবং বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ আরও দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। এই দুই কমিটি এরই মধ্যে তাদের প্রতিবেদন দিয়েছে।
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক অনলাইন