জাতীয় ডেস্ক:
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের পক্ষে বিএনপির শীর্ষ নেতারা প্রচারে অংশ নিতে পারলেও নির্বাচনী বিধির কারণে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিরা তা পারছেন না। তবে ক্ষমতাসীন দল দুই সিটিতে দুজন স্বচ্ছ ইমেজের প্রার্থী দিয়েছেন জানিয়ে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এই স্বচ্ছ ইমেজই তাদের প্রচারণার মোকাবেলা করবে।
রবিবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে সম্পাদকমণ্ডলীরে এক বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই মন্তব্য করেন।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদককে মন্ত্রিত্ব ও সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করে নির্বাচনী প্রচারে নামার চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ওই প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি একবারের জন্যও কি আচরণবিধি লঙ্ঘন করার মতো কোনো কাজ করেছি? সমাবেশে অংশ নিয়েছি? তাহলে মির্জা ফখরুল সাহেব কেন এই অবান্তর প্রশ্নটা করতে গেলেন। আমি তাকে বলবো, আপনার চ্যালেঞ্জ করা লাগবে না। যদি চ্যালেঞ্জ বলেন তাহলে বলবো, আমাদের মন্ত্রী-এমপিদের প্রয়োজন হবে না। আমাদের দুজন ক্লিন ইমেজের মেয়র প্রার্থী যথেষ্ট আপনাদের ক্যাম্পইনের মোকাবেলার জন্য।’
যারা এমপি-মন্ত্রী আছেন তাদের দ্বারা যাতে নির্বাচনী আচরনবিধি লঙ্ঘন না হয় এই ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা রয়েছে বলেও জানান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
আওয়ামী লীগের দুই নেতা আমির হোসেন আমু ও তোফায়েল আহমেদের সমন্বয়কের দায়িত্ব প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন যে কথা বলেছে সে বিষয়ে আমরা দ্বিমত পোষণ করি না। এখানে আমাদের আরও রাজনৈতিক কার্যাবলী আছে, সিটিতে আরও কাজ আছে, সেটা তারা করবেন।’
‘তারা ক্যাম্পেইনে অংশ নেবেন না। নির্বাচনী আচরনবিধি লঙ্ঘন হবে তেমন কোনো কাজে তারা অংশ নেবেন না। অহেতুক কোনো বিতর্ক আমরা সৃষ্টি করতে চাই না।’
ঢাকা উত্তর সিটি করেপারেশনে বিএনপির মিছিল আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে। এ প্রসঙ্গে অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এমন কোনো অভিযোগ করেছে বলে জানা নেই। যদি করে থাকে আর নির্বাচন কমিশন যদি মনে করে আচরণবিধি কেউ লঙ্ঘন করেছে, তারা যেকোনো পদক্ষেপ নিতে পারে।’
খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী পালন করে এদেশের মানুষের মন জয় করা যাবে না বলে বিএনপি নেতাদের বক্তব্য প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘জন্মদিবসে ভুয়া জন্মদিনে মির্জা ফখরুল সাহেব কেক কাটলেই কি মন জয় করা যাবে?’
৭ মার্চের আগে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি
আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলনের আগে শুরু হওয়া জেলা সম্মেলনের অসমাপ্ত কাজ আগামী ৭ মার্চের আগে শেষ করার জন্য কাজ শুরু করার কথা জানিয়েছেন ওবায়দুল কাদের। বলেন, ‘যেসব জেলাগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ আছে সেগুলো দ্রুত শেষ করতে হবে। আমাদের নতুন দায়িত্বপ্রাপ্তদের কাজ বণ্টন করে দিয়েছেন। মুজিব বর্ষ শুরু হওয়ার আগেই অর্থাৎ ১৭ মার্চের আগে এবং আমাদের ঐতিহাসিক ৭ মার্চ আছে, এর আগে যতটা সম্ভব অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে নেত্রীর নির্দেশনা পেয়েছি। নির্দেশনা মোতাবেক সম্পাদকমণ্ডলীকে অবহিত করেছি। যতদ্রুত সম্ভব তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবেন।’
সারাদেশে শীতার্ত মানুষের কাছে শীতবস্ত্র পৌঁছে দিতে আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘সারাদেশে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে ৪৫ লাখ শীতবস্ত্র এবং তিন কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে। জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে এই কার্যক্রম চলছে।’
ওবায়দুল কাদের জানান, দলের নতুন নির্বাহী কমিটির সদস্য ও উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের নিয়ে আগামী ১৮ জানুয়ারি টুঙ্গীপাড়া যাবেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। সেখানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং যৌথসভা হবে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, এসএম কামাল হোসেন, মির্জা আজম, সফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সাখাওয়াত হোসেন শফিক, অর্থ সম্পাদক বেগম ওয়াসিকা আয়েশা খানম, আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট নজিবুল্লাহ হিরু, কৃষি ও সমবায় সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, প্রচার সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সবুর, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি, উপদপ্তর সায়েম খান উপস্থিত ছিলেন।