তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক:
ফেসবুক, টুইটার, গুগলসহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া ও সার্চ ইঞ্জিন আনার ব্যক্তিগত তথ্য ও আচরণের তথ্য ছাড়া টিকে থাকতে পারবে না। তারা অর্থ উপার্জনের জন্য, বিজ্ঞাপনের জন্য ও পণ্য বিক্রির জন্য আপনার ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু আপনি বুঝতে পারছেন না যে তারা আসলে কী করছে।
এটি বলা খুবই সহজ, তারা বলছে যে, এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। তারা আমাদের ব্যক্তিগত তথ্য ও আচরণের তথ্য সংগ্রহ করছে না। তারা সব তথ্য ব্যক্তিগত রাখার পদ্ধতি অবলম্বন করতে যাচ্ছে। তারা বলছে, ‘আমরা ব্যবহারকারীদের তথ্য ও গোপনীয়তা রক্ষা করি।’
তারা কয়েক বছর ধরে ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য বিজ্ঞাপনী সংস্থাগুলোর ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অর্থ উপার্জনের জন্য সংগ্রহ করছে।
এখানে চিত্রটি তুলে ধরা হলো, সেটি ভালো করে দেখুন। আপনি ব্যবহারকারী, আপনার অবস্থান বাঁ দিকে। আপনি যখন সাইটে নিবন্ধন করবেন তখন তারা আপনাকে কিছু মৌলিক তথ্য জিজ্ঞাসা করে। এখানেই শেষ নয়, এরপর তারা ধীরে ধীরে আপনার ব্যক্তিগত তথ্যগুলো সংগ্রহ করতে থাকে। যদিও তারা বলে থাকে যে, আমরা আপনার ব্যক্তিগত তথ্য রাখি, তবে এ তথ্য কারো কাছে হস্তান্তর বা বিক্রি করি না।
এটি সত্য হতে পারে। তবে তারা এমনটি করবে না, যাতে বিজ্ঞাপনী সংস্থাগুলো আপনার পছন্দমতো বিজ্ঞাপনগুলো তৈরি করতে পারে। এমনকি অফার দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেও আপনার আচরণ-সম্পর্কিত তথ্যগুলো ব্যবহার করবে না।
যদিও তারা আপনার ব্যক্তিগত তথ্য গোপন রাখে, তবু অর্থ উপার্জনের জন্য তারা আপনার ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহার করতে পারে।
কোম্পানিগুলো অর্থ উপার্জনের জন্য যা কিছু করে, তার চেয়ে অন্য প্রসঙ্গে তারা বেশি বলে। তবে এটি স্পস্ট যে, যতক্ষণ তারা আপনার ব্যক্তিগত তথ্য না পায় ততক্ষণ তারা আপনার মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করতে পারে না।
যদিও তারা আগামী পরিকল্পনা সম্পর্কে বলে, ‘ আগামীতেও আমরা আপনার ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহার করব না।’ পরবর্তী সময়ে দেখবেন, ঐ তথ্যগুলোই তারা অর্থ উপার্জনের জন্য ও তাদের সাশ্রয়ের জন্য ব্যবহার করছে।
যদি এমন হতো যে, আপনার ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার জন্য প্রতি মাসে ১০ থেকে ২৫ ডলার পর্যন্ত অর্থ পরিশোধ করতে হবে, তাহলে ভালো হতো। তবে লাখ লাখ ব্যবহারকারী রয়েছে, যারা তাদের ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে ভাবে না। তারা শুধু অ্যাপ্লিকেশনটি ব্যবহারই করছে। তবে সার্চ ইঞ্জিন থেকে তথ্য ব্যবহার করে অর্থ উপার্জনের কোনো সম্ভাবনা নেই।
শেষ পর্যন্ত আপনার তথ্য সুরক্ষার বিষয়ে যত্নবান হওয়া প্রয়োজন। হয়তো আপনার এমন একটি দিন আসবে যেদিন আপনি বিনা মূল্যে তথ্য প্রদানের দায় অনুশোচনা করবেন। এমনও হতে পারে, আপনার ব্যক্তিগত তথ্য-সম্পর্কিত আইডিটি হ্যাক হতে পারে। এ থেকে আপনার কাজে মুক্তিপণও দাবি করতে পারে। এ ছাড়াও ঐ তথ্যগুলো ব্যবহার করে নিষিদ্ধ কাজে ব্যবহারের মাধ্যমে আপনাকে আইনি জটিলতায় ফেলতে পারে। এছাড়াও ভালো একটি চাকরি পেতে বাধার সৃষ্টি করতে পারে অথবা জালিয়াতির মাধ্যমে পোস্ট দিয়ে আপনার সঙ্গে অন্যদের বন্ধুত্ব নষ্ট করে দিতে পারে।
একজন বিনিয়োগকারী হিসেবে আমি সর্বদা বিজ্ঞাপনভিত্তিক ওয়েবসাইট থেকে দূরে সরে থাকি এবং সাবস্ক্রিপশন-ভিত্তিক মডেলগুলোতে আমি বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকি। যদি আপনার কাছে মূল্যবান কিছু থেকে থাকে তবে লোকেরা তার মূল্য দিতে প্রস্তুত।
অ্যাপল মিউজিক, স্পটিফাই, অ্যামাজন মিউজিকের মতো সাইটগুলোতে এখন সাবস্ক্রিপশন ফি দিতে হয়। তারা আপনার ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করে। বিনা পয়সায় যারা ঐ সাইটগুলোতে গান আপ করায় তা মুছে ফেলা হয়। এ বিষয়টি টেলিভিশনে ভিডিওর মতো পণ্যের বেলাতেও লক্ষণীয়। এই পরিষেবা গ্রহণের জন্য প্রতি মাসে ব্যবহারকারীদের ৯.৯৫ ডলার প্রতি মাসে গুনতে হচ্ছে। এতে প্রমাণিত হয়, যুক্তিসংগত সাবস্ক্রিপশন ফি দিতে ব্যবহাকারীরা ইচ্ছুক।