জাতীয় ডেস্কঃ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধু টানেলের মধ্য দিয়ে উন্নয়নের নতুন ধাপে প্রবেশ করলো বাংলাদেশ। রবিবার চট্টগ্রামে এক সুধী সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর আগে চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গায় কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল ও প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে সম্পর্কে বলেন, ‘আজকে আমরা আরেকটি কাজ করে দিচ্ছি। চট্টগ্রাম শহরের লালখান বাজার থেকে শাহ আমানত বিমান বন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের কাজেরও শুভ উদ্বোধন করে দিয়ে গেলাম। কাজেই এখানে আর ওই যানজট হবে না।’
তিনি বলেন, ‘এর মাধ্যমে সরাসরি এয়ারপোর্ট পর্যন্ত এক টানে চলে আসতে পারবে। আর তার সঙ্গে সংযুক্ত হবে এই টানেল। কাজেই খুব সহজেই এই টানেল হয়ে একেবারে কক্সবাজার যাওয়া যাবে। এদিকে ঢাকা থেকেও ফোর লেন রাস্তা। কাজেই যোগাযোগটা আরও দ্রুত হবে। আমি মনে করি এটা চট্টগ্রামের সার্বিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এটা বিরাট অবদান রাখবে।’
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, গৃহায়ন ও গণপুর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, ভুমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, চট্টগ্রামের মেয়র আ জ ম নাসির উদ্দীন প্রমুখ।
প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে ৯ হাজার ৮৮০ কোটি টাকায় নির্মাণ করা হচ্ছে ৩ হাজার ৫ মিটার দীর্ঘ টানেল। এটি দেশের প্রথম টানেল প্রকল্প। টানেলটি নেভাল একাডেমি পয়েন্ট থেকে শুরু হয়ে কাফকো ও সিইউএফএল পয়েন্টের মাঝখান দিয়ে অপর প্রান্তে যাবে। ৪ হাজার ৭৯৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকার যোগান দেবে চীনের এক্সিম ব্যাংক। বাকি টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে দেওয়া হবে।
নদীর তলদেশে সর্বনিম্ন ৩৬ ফুট থেকে সর্বোচ্চ ১০৮ ফুট গভীরে স্থাপন করা হবে দু’টি টিউব। কর্নফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের জন্য ২০১৪ সালের ১০ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে বেইজিংয়ে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। টানেলটি নির্মাণ করছে চীনা প্রতিষ্ঠান চায়না কমিউনিকেশন্স কন্সট্রাকশন কোম্পানি (সিসিসিসি)। প্রকল্পের ৩২ শতাংশ কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। প্রকল্পবাস্তবায়ন করবে সেতু কর্তৃপক্ষ। ২০২২ সালে প্রকল্পটির কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
এছাড়া প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নগরের লালখান বাজার থেকে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত চার লেনের ১৬ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে। চার বছরের মধ্যে এ কাজ শেষ করার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।