ঢাকা ১০:০৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বঙ্গবন্ধু হত্যার পেছনের চক্রান্তটাও খুঁজে বের করবো: প্রধানমন্ত্রী

জাতীয় ডেস্কঃ

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার বিচার হয়েছে। এর পেছনে যে চক্রান্ত ছিল সেটা এখনও বের হয়নি। সেই চক্রান্তটা খুঁজে বের করার ঘোষণা দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার বিকালে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট প্রকাশিত ‘বঙ্গবন্ধু ও বিচার বিভাগ ও ‘বঙ্গবন্ধু অ্যান্ড জুডিসিয়ারি’ শীর্ষক বাংলা ও ইংরেজিতে মুজিব স্মারকগ্রন্থ এবং ‘ন্যায়কণ্ঠ’ শীর্ষক মুজিববর্ষের স্মরণিকা’র মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এই ঘোষণা দেন।

গণভবন থেকে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণের মূল অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের সাহায্যে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী।

বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আসলে বহু বছর বিচার না পেয়ে মনে অনেক দুঃখ ছিল। যা হোক, এই হত্যার বিচার পেয়েছি। এটাই হচ্ছে সব থেকে বড় কথা। তবে এখন আরেকটা দায়িত্ব রয়ে গেছে। চক্রান্তটা খুঁজে বের করা। এটাও একদিন বের হবে। এতে কোনো সন্দেহ নেই।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে খুনের পর যদিও প্রথমে ক্ষমতায় এসেছিল আমার বাবার মন্ত্রিসভার মন্ত্রী খন্দকার মোশতাক। সেটি সংবিধান লঙ্ঘন করেই তার ক্ষমতা আরোহন। কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক অফিসার ও জিয়াউর রহমান ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন এতে কোনো সন্দেহ নেই। জিয়াউর রহমানের প্ররোচনায় এই ঘটনা ঘটানো হয়।’

প্রধানমন্ত্রী সবার প্রতি সুবিচার নিশ্চিত করতে বিচারকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, তার সরকার এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সব সুবিধা নিশ্চিত করবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ন্যায়বিচার মানুষের প্রাপ্য। সেটা যেন সব সময় পায় সেটা আমরা চাই। কারণ আমরা ভুক্তভোগী। তাই আমরা জানি বিচার না পাওয়ার কষ্টটা কী।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা যারা ১৫ আগস্টে সব হারিয়েছিলাম, আমার মতো বাবা মা হারিয়ে যেন কাউকে বিচারের জন্য চোখের পানি ফেলতে না হয়। সেটাই আমরা চাই। সেটা আপনারা নিশ্চিত করে দেবেন। আর আমি যতক্ষণ সরকারে আছি এর জন্য যা যা দরকার আমরা করবো।’ শোষিত বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ে জাতির আজীবন সংগ্রামের কথা তুলে ধরার পাশপাশি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্টের বিয়োগান্তক অধ্যায় তুলে ধরে দীর্ঘদিন বিচার না পাওয়ার জন্য আক্ষেপ প্রকাশ করেন জাতির পিতার কন্যা।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করে বলেন, ‘আমেরিকা, যারা সবসময় ন্যায়বিচারের কথা বলে, গণতন্ত্রের কথা বলে, ভোটাধিকারের কথা বলে, মানবাধিকারের কথা বলে। এ পর্যন্ত আমেরিকার যতজন প্রেসিডেন্ট হয়েছেন আমি সরকারে আসার পর তাদের প্রত্যেককে অনুরোধ করেছি বঙ্গবন্ধুর খুনিকে ফেরত দিতে। তাদের জিজ্ঞাসা করেছি- একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে আপনারা কীভাবে আশ্রয় দেন? আপনাদের জুডিশিয়ারি সিস্টেম কীভাবে আশ্রয় দেয়? কীভাবে আপনারা একজন খুনিকে আশ্রয় দেন? খুনি রাশেদ এখন আমেরিকায়। আর নূরকে আশ্রয় দিয়ে রেখেছে কানাডা। তারপরও তাদের কাছ থেকে আমাদের আইনের শাসনের সবকও শুনতে হয়, গণতন্ত্রের কথাও শুনতে হয়, ন্যায়বিচারের কথাও শুনতে হয়! সেটিই আমার কাছে খুব অবাক লাগে।’

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। অ্য্যাপিলেট ডিভিশনের বিচারপতি এবং স্মারকগ্রন্থ এবং স্মরণিকার সম্পাদক মো. নুরুজ্জামান স্বাগত বক্তৃতা করেন।

মুজিব স্মারকগ্রন্থ এবং স্মরণিকার ওপর অনুষ্ঠানে ভিডিও ডকুমেন্টারিও প্রচারিত হয়। এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতির পিতা ও বঙ্গমাতাসহ ’৭৫ এর ১৫ আগস্টের সব শহীদ এবং বিজয়ের এই মাসে মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে সবাই দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদের সঙ্গে তুর্কী এমপির সাক্ষাৎ

বঙ্গবন্ধু হত্যার পেছনের চক্রান্তটাও খুঁজে বের করবো: প্রধানমন্ত্রী

আপডেট সময় ০৩:৩২:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২১

জাতীয় ডেস্কঃ

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার বিচার হয়েছে। এর পেছনে যে চক্রান্ত ছিল সেটা এখনও বের হয়নি। সেই চক্রান্তটা খুঁজে বের করার ঘোষণা দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার বিকালে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট প্রকাশিত ‘বঙ্গবন্ধু ও বিচার বিভাগ ও ‘বঙ্গবন্ধু অ্যান্ড জুডিসিয়ারি’ শীর্ষক বাংলা ও ইংরেজিতে মুজিব স্মারকগ্রন্থ এবং ‘ন্যায়কণ্ঠ’ শীর্ষক মুজিববর্ষের স্মরণিকা’র মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এই ঘোষণা দেন।

গণভবন থেকে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণের মূল অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের সাহায্যে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী।

বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আসলে বহু বছর বিচার না পেয়ে মনে অনেক দুঃখ ছিল। যা হোক, এই হত্যার বিচার পেয়েছি। এটাই হচ্ছে সব থেকে বড় কথা। তবে এখন আরেকটা দায়িত্ব রয়ে গেছে। চক্রান্তটা খুঁজে বের করা। এটাও একদিন বের হবে। এতে কোনো সন্দেহ নেই।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে খুনের পর যদিও প্রথমে ক্ষমতায় এসেছিল আমার বাবার মন্ত্রিসভার মন্ত্রী খন্দকার মোশতাক। সেটি সংবিধান লঙ্ঘন করেই তার ক্ষমতা আরোহন। কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক অফিসার ও জিয়াউর রহমান ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন এতে কোনো সন্দেহ নেই। জিয়াউর রহমানের প্ররোচনায় এই ঘটনা ঘটানো হয়।’

প্রধানমন্ত্রী সবার প্রতি সুবিচার নিশ্চিত করতে বিচারকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, তার সরকার এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সব সুবিধা নিশ্চিত করবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ন্যায়বিচার মানুষের প্রাপ্য। সেটা যেন সব সময় পায় সেটা আমরা চাই। কারণ আমরা ভুক্তভোগী। তাই আমরা জানি বিচার না পাওয়ার কষ্টটা কী।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা যারা ১৫ আগস্টে সব হারিয়েছিলাম, আমার মতো বাবা মা হারিয়ে যেন কাউকে বিচারের জন্য চোখের পানি ফেলতে না হয়। সেটাই আমরা চাই। সেটা আপনারা নিশ্চিত করে দেবেন। আর আমি যতক্ষণ সরকারে আছি এর জন্য যা যা দরকার আমরা করবো।’ শোষিত বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ে জাতির আজীবন সংগ্রামের কথা তুলে ধরার পাশপাশি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্টের বিয়োগান্তক অধ্যায় তুলে ধরে দীর্ঘদিন বিচার না পাওয়ার জন্য আক্ষেপ প্রকাশ করেন জাতির পিতার কন্যা।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করে বলেন, ‘আমেরিকা, যারা সবসময় ন্যায়বিচারের কথা বলে, গণতন্ত্রের কথা বলে, ভোটাধিকারের কথা বলে, মানবাধিকারের কথা বলে। এ পর্যন্ত আমেরিকার যতজন প্রেসিডেন্ট হয়েছেন আমি সরকারে আসার পর তাদের প্রত্যেককে অনুরোধ করেছি বঙ্গবন্ধুর খুনিকে ফেরত দিতে। তাদের জিজ্ঞাসা করেছি- একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে আপনারা কীভাবে আশ্রয় দেন? আপনাদের জুডিশিয়ারি সিস্টেম কীভাবে আশ্রয় দেয়? কীভাবে আপনারা একজন খুনিকে আশ্রয় দেন? খুনি রাশেদ এখন আমেরিকায়। আর নূরকে আশ্রয় দিয়ে রেখেছে কানাডা। তারপরও তাদের কাছ থেকে আমাদের আইনের শাসনের সবকও শুনতে হয়, গণতন্ত্রের কথাও শুনতে হয়, ন্যায়বিচারের কথাও শুনতে হয়! সেটিই আমার কাছে খুব অবাক লাগে।’

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। অ্য্যাপিলেট ডিভিশনের বিচারপতি এবং স্মারকগ্রন্থ এবং স্মরণিকার সম্পাদক মো. নুরুজ্জামান স্বাগত বক্তৃতা করেন।

মুজিব স্মারকগ্রন্থ এবং স্মরণিকার ওপর অনুষ্ঠানে ভিডিও ডকুমেন্টারিও প্রচারিত হয়। এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতির পিতা ও বঙ্গমাতাসহ ’৭৫ এর ১৫ আগস্টের সব শহীদ এবং বিজয়ের এই মাসে মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে সবাই দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।