ঢাকা ০৬:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৯ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বরুড়ায় জোরপূর্বক প্রবাসীর জায়গা দখলের অভিযোগ

বরুড়া প্রতিনিধি, কুমিল্লা:

কুমিল্লার বরুড়া পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের নয়নতলা এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে চলমান জমি দখল বিরোধ নতুন করে তীব্র আকার ধারণ করেছে। জমি দখলের চেষ্টা ও দস্যুতার প্রতিবাদে ভুক্তভোগী পরিবার সংবাদ সম্মেলন করে

শুক্রবার (১৩সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১০টায় উপজেলার বটতলী বাজার এলাকায় সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

এর আগে ভুক্তভোগী রুহুল আমিনের ছেলে গোলাম আজম (৩২) বরুড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, নয়নতলার জিনসার মৌজার ১৮৯ নং সিএস খতিয়ানে মোট ২ একর ২০.৫ শতক জমি তাঁদের পারিবারিক ওয়ারিশ সূত্রে প্রাপ্ত। দাদা-দাদির ক্রয়কৃত এই জমি দীর্ঘদিন ধরে পরিবারটি ভোগ দখল করে আসছে।কিন্তু একই এলাকার আনোয়ার (৫০), দেলোয়ার (৪৫), আবু তাহের (৩৮), মামুন (৩৫), বাবুল (৪৯) ও রফিক (৪৪) উক্ত জমি দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগে বলা হয়। বাধা দিলে একাধিকবার গোলাম আজম ও তার পরিবারকে মারধর ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। স্থানীয়ভাবে একাধিকবার সালিশ বৈঠক হলেও বিবাদীরা তা মানেনি। সর্বশেষ ৫ সেপ্টেম্বর সমাধানের জন্য বৈঠক ডাকা হলেও তারা উপস্থিত না হয়ে বাদীকে উল্টো হুমকি দেয়।

ভুক্তভোগী গোলাম আজম বলেন,আমরা এই জায়গাটা কিনেছে হিন্দুধর্মাবলম্বী হরিমন থেকে।কিন্তু পরে এই জায়গা নিয়ে মামলা হয় তাদের এ এক আত্মীয় নারু এর সাথে। তারপর আমরা এই জমির রায় বহু বছর আগে আদালত থেকে রায় পেয়েছি। জমিটি একসময় হিন্দু পরিবারের থাকলেও পরে আমরা রায় পাওয়ার পর তারা সহপরিবারে ভারতে চলে যায়। আমাদের তিনটি খতিয়ানের মধ্যে দুইটির মামলা নিষ্পত্তি হয়ে আমাদের পক্ষে রায় এসেছে তখন। একটি মামলা এখনো চলমান। মামলা গুলো ছিলো সে হিন্দু পরিবারের সাথে। অথচ বিগত দীর্ঘসময় ধরে অন্য প্রতিপক্ষ আওয়ামীলীগের নেতা হওয়ার সুবাধে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ভুয়া দলিল বানিয়ে জোরপূর্বক জায়গা দখল করে রেখেছে।

অন্যদিকে বিবাদীপক্ষের দেলোয়ার হোসেন দাবি করেন,আমি বৈধভাবে জায়গা ক্রয় করেছি।এ নিয়ে হাইকোর্টে মামলা চলছে। আমার কাছে কাগজপত্র আছে এবং এর আগেও রায় পেয়েছি।তবে তিনি আর কোনো মন্তব্য না করে ফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন।

স্থানীয় গ্রাম সদ্দার জাহাঙ্গীর আলম বলেন,জমিটি নিয়ে মূলত এক হিন্দু পরিবারের সাথে মামলা ছিল। প্রথমে একপক্ষ রায় পায়,পরে আবার আপিলে অন্যপক্ষ রায় পায়। প্রায় ২০ বছর আগে পরিবারটি কলকাতায় চলে গেলে জায়গাটি নিয়ে নতুন পক্ষের বিরোধ শুরু হয়।

এ বিষয়ে বরুড়া থানার এসআই সাজেদুল ইসলাম জানান,বাদীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। বিবাদীরা দাবি করে বিষয়টি হাইকোর্টে বিচারাধীন। কাগজপত্র দেখাতে বললেও তারা রাজি হয়নি। স্থানীয় সমাধানেও বসতে চায় না।

প্রসঙ্গত, এ বিরোধকে কেন্দ্র করে এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। আদালতের একাধিক রায় ও সালিশ সত্ত্বেও সমস্যার স্থায়ী সমাধান হয়নি। ভুক্তভোগী পরিবার প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

ফিউচার মুরাদনগর মিনিবার ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত

বরুড়ায় জোরপূর্বক প্রবাসীর জায়গা দখলের অভিযোগ

আপডেট সময় ১১:০৪:২২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বরুড়া প্রতিনিধি, কুমিল্লা:

কুমিল্লার বরুড়া পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের নয়নতলা এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে চলমান জমি দখল বিরোধ নতুন করে তীব্র আকার ধারণ করেছে। জমি দখলের চেষ্টা ও দস্যুতার প্রতিবাদে ভুক্তভোগী পরিবার সংবাদ সম্মেলন করে

শুক্রবার (১৩সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১০টায় উপজেলার বটতলী বাজার এলাকায় সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

এর আগে ভুক্তভোগী রুহুল আমিনের ছেলে গোলাম আজম (৩২) বরুড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, নয়নতলার জিনসার মৌজার ১৮৯ নং সিএস খতিয়ানে মোট ২ একর ২০.৫ শতক জমি তাঁদের পারিবারিক ওয়ারিশ সূত্রে প্রাপ্ত। দাদা-দাদির ক্রয়কৃত এই জমি দীর্ঘদিন ধরে পরিবারটি ভোগ দখল করে আসছে।কিন্তু একই এলাকার আনোয়ার (৫০), দেলোয়ার (৪৫), আবু তাহের (৩৮), মামুন (৩৫), বাবুল (৪৯) ও রফিক (৪৪) উক্ত জমি দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগে বলা হয়। বাধা দিলে একাধিকবার গোলাম আজম ও তার পরিবারকে মারধর ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। স্থানীয়ভাবে একাধিকবার সালিশ বৈঠক হলেও বিবাদীরা তা মানেনি। সর্বশেষ ৫ সেপ্টেম্বর সমাধানের জন্য বৈঠক ডাকা হলেও তারা উপস্থিত না হয়ে বাদীকে উল্টো হুমকি দেয়।

ভুক্তভোগী গোলাম আজম বলেন,আমরা এই জায়গাটা কিনেছে হিন্দুধর্মাবলম্বী হরিমন থেকে।কিন্তু পরে এই জায়গা নিয়ে মামলা হয় তাদের এ এক আত্মীয় নারু এর সাথে। তারপর আমরা এই জমির রায় বহু বছর আগে আদালত থেকে রায় পেয়েছি। জমিটি একসময় হিন্দু পরিবারের থাকলেও পরে আমরা রায় পাওয়ার পর তারা সহপরিবারে ভারতে চলে যায়। আমাদের তিনটি খতিয়ানের মধ্যে দুইটির মামলা নিষ্পত্তি হয়ে আমাদের পক্ষে রায় এসেছে তখন। একটি মামলা এখনো চলমান। মামলা গুলো ছিলো সে হিন্দু পরিবারের সাথে। অথচ বিগত দীর্ঘসময় ধরে অন্য প্রতিপক্ষ আওয়ামীলীগের নেতা হওয়ার সুবাধে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ভুয়া দলিল বানিয়ে জোরপূর্বক জায়গা দখল করে রেখেছে।

অন্যদিকে বিবাদীপক্ষের দেলোয়ার হোসেন দাবি করেন,আমি বৈধভাবে জায়গা ক্রয় করেছি।এ নিয়ে হাইকোর্টে মামলা চলছে। আমার কাছে কাগজপত্র আছে এবং এর আগেও রায় পেয়েছি।তবে তিনি আর কোনো মন্তব্য না করে ফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন।

স্থানীয় গ্রাম সদ্দার জাহাঙ্গীর আলম বলেন,জমিটি নিয়ে মূলত এক হিন্দু পরিবারের সাথে মামলা ছিল। প্রথমে একপক্ষ রায় পায়,পরে আবার আপিলে অন্যপক্ষ রায় পায়। প্রায় ২০ বছর আগে পরিবারটি কলকাতায় চলে গেলে জায়গাটি নিয়ে নতুন পক্ষের বিরোধ শুরু হয়।

এ বিষয়ে বরুড়া থানার এসআই সাজেদুল ইসলাম জানান,বাদীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। বিবাদীরা দাবি করে বিষয়টি হাইকোর্টে বিচারাধীন। কাগজপত্র দেখাতে বললেও তারা রাজি হয়নি। স্থানীয় সমাধানেও বসতে চায় না।

প্রসঙ্গত, এ বিরোধকে কেন্দ্র করে এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। আদালতের একাধিক রায় ও সালিশ সত্ত্বেও সমস্যার স্থায়ী সমাধান হয়নি। ভুক্তভোগী পরিবার প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করছে।