জাতীয় ডেস্কঃ
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বাংলাদেশকে ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন বা ১৩০ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলারের ঋণ দেবে, যা বর্তমান বাজারদরে দেশীয় মুদ্রায় ১৫ হাজার ৯০৯ কোটি টাকার সমান (প্রতি ডলার ১২২ টাকা করে)।
শুক্রবার (২০ জুন) রাজধানী ঢাকার ইআরডি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক অনুষ্ঠানে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) ও এডিবির মধ্যে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
এই অর্থ চলতি জুন মাসেই পাবে বাংলাদেশ। এই অর্থ ব্যাংক খাত সংস্কার ও জলবায়ু সহনশীলতা কার্যক্রমে খরচ করা হবে। ৯০ কোটি ডলারের বাজেট সহায়তা রয়েছে। আর অবকাঠামো উন্নয়নে থাকছে ৪০ কোটি ডলার। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে চারটি চুক্তি হয়েছে। পাশাপাশি ২০ কোটি ডলার করে আরও দুটি ঋণচুক্তি হয়।
ইআরডি সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী এবং বাংলাদেশে এডিবির প্রধান হোয়ে ইউন জিয়ং চারটি চুক্তিতে সই করেন। এডিবির বাংলাদেশ কার্যালয়ের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
এডিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ১৩০ কোটি ডলারের ঋণ সহায়তার মধ্যে বড় অংশ অর্থাৎ, ৫০ কোটি ডলার দেওয়ার উদ্দেশ্যে হচ্ছে বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের স্থিতিশীলতা ও সংস্কার নিশ্চিত করা। এই চুক্তির আওতায় নিয়ন্ত্রক তদারকি, করপোরেট সুশাসন, সম্পদের গুণগত মান এবং স্থিতিশীলতা জোরদার করা হবে।
চুক্তি অনুযায়ী ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতা ও সংস্কার কর্মসূচি, উপ-প্রোগ্রাম–১ এর আওতায় নীতিগত সংস্কারের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে, যার লক্ষ্য হচ্ছে আর্থিক খাতকে স্থিতিশীল ও টেকসই করা। এটি ব্যাংকিং খাতে সুশাসন উন্নয়ন, বাংলাদেশ ব্যাংকের তারল্য ব্যবস্থাপনা কাঠামোর কার্যকারিতা বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতের বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণ দ্রুত সমাধানে পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে অর্জন করা হবে।
চুক্তি সই অনুষ্ঠানে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হোয়ে ইউন জিয়ং বলেন, বাংলাদেশ এখন ব্যাংকিং খাতে বড় পরিসরে সংস্কার বাস্তবায়ন শুরু করেছে। এই কর্মসূচি বাংলাদেশ ব্যাংকের সক্ষমতা বাড়াবে, ব্যাংকগুলোর সুশাসন জোরদার করবে, সম্পদের মান বাড়াবে এবং আর্থিক খাতকে প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য প্রস্তুত করবে।
এডিবি জলবায়ু সহনশীলতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ৪০ কোটি ডলার দেবে। এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য হলো জলবায়ু অর্থায়ন সহজতর করা, বাংলাদেশ জলবায়ু উন্নয়ন অংশীদারত্ব গঠন, দুর্যোগ ঝুঁকি অর্থায়নের কৌশল প্রণয়ন ইত্যাদি।
এ বিষয়ে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হোয়ে ইউন জিয়ং বলেন, এই কর্মসূচি জলবায়ু সহনশীলতা বৃদ্ধির জন্য নীতিমালা, অর্থায়ন, প্রতিষ্ঠান ও অবকাঠামোতে সমন্বিত সংস্কার আনবে, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি টেকসই ভিত্তি গড়ে তোলার পাশাপাশি বাংলাদেশকে জলবায়ু-স্মার্ট প্রবৃদ্ধির পথে এগিয়ে রাখবে।
এ ছাড়া ২০ কোটি ৪০ লাখ ডলার দেওয়া হবে ঢাকা–উত্তর পশ্চিম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য করিডর উন্নয়নে। এ প্রকল্পের আওতায় এলেঙ্গা থেকে হাটিকুমরুল হয়ে রংপুর পর্যন্ত ১৯০ কিলোমিটার সড়ক চার লেনে উন্নীত করা হবে। পাশাপাশি সড়ক নিরাপত্তা বাড়াতে নির্মিত হবে ফুট ওভারব্রিজ, ফুটপাত ও ধীরগতির যানবাহনের জন্য দুই লেনের সড়ক। বাকি ২০ কোটি ডলার বিদ্যুৎ সরবরাহের মান ও সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতের উন্নয়নে ব্যয় করা হবে।