ঢাকা ১১:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাঞ্ছারামপুরের প্রত্যন্ত গ্রামেও ক্লাশের ভেতর ‘কোচিং বানিজ্য’ তুঙ্গে!

সালমা আহমেদ,বাঞ্ছারামপুর(ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধিঃ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ও ১২৬টি গ্রামেই কোচিং/প্রাইভেট বানিজ্য এখন চরম তুঙ্গে উঠেছে বলে জানা গেছে।স্কুলের ক্লাশের ভেতর কোিচিং বা প্রাইভেট পড়ানো নিষিদ্ধ থাকলেও এই আইনকে তোয়াক্কা করছেন না কোথাও। সরকার এমসিকিউ প্রশ্ন তুলে দেয়ার কারনে এখন কেবল ইংরেজী-গণিত বিষয়ই কেবল নয়,কোন কোন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থী সব বিষয়েই কোচিং করছে বলে জানা গেছে।

খোজ নিয়ে জানা গেছে,দিনভর কোচিং বানিজ্য করে শিক্ষকরা ক্লান্ত হওয়ার কারনে,ক্লাশে যেয়ে তারা মনোযোগী হতে পারছেন না।কোন রকম ক্লাশের সময় টুকুন পাড় করছেন শ্রেনী শিক্ষকরা।

বাঞ্ছারামপুর সদরে অবস্থিত বালিকা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের জনৈকা ছাত্রীর দিনমজুর অভিভাবক মো.কামরুল ইসলাম ক্ষুদ্ধ হয়ে বলেন,-‘আমরা দরিদ্র বলে সারা বছর কোচিং করাতে পারি না।চেষ্টা করি বার্ষিক পরীক্ষার আগের ৩ মাস পড়িয়ে মেয়েকে অন্তত পাশ করিয়ে আনি।’

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর অভিভাবক বলেন,-‘স্যার-রা তো এখন কোচিং-এ ৫শ টাকা জায়গায় ৭’শ টাকা রেট করে ফেলেছে।আমরা অটো চালাই,কেউ ব্যাটারী চালিত রিক্সা,কেউবা তরকারি বিক্রি বা দিনমজুরের কাজ,আমরা এতো টাকা পাবো কোথায়?’

বিভিন্ন সূত্র এবং খোজ নিয়ে জানা গেছে,বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ৩৯টি মাধ্যমিক/ নিম্ম মাধ্যমিক/মাদ্রাসার গণিতের নিয়মিত শিক্ষক,অতিরিক্ত পার্টটাইমার শিক্ষক গণিত ও ইংরেজীর শিক্ষক প্রতি ব্যাচে ১ হাজার টাকা করে নিয়ে কোচিং করাচ্ছেন।প্রতি ব্যাচে থাকে ২০ হতে ২৫জন শিক্ষার্থী।সে হিসেবে স্কুলের বেতনের ২ হতে ৫গুন বেশী আয় করছেন কেবল প্রাইভেট পড়িয়ে।১ শত ৪২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাইভেটের হার অবশ্য ৫-৭’শ টাকা করে।

কেন প্রাইভেট পড়ান ,স্কুলে পড়ানো হয় না? এমন প্রশ্নের মুখে জনৈক অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা বলেন,‘স্যারের কাছে কোচিং না করলে, ক্লাশে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্ল করা হয়,হয়রানী করা হয় নানা প্রশ্ন করে,পরীক্ষার খাতায় নাম্বার কম দেয়া হয়,ক্লাশের পেছনে বসতে দেয়া হয়’-সেজন্য কোচিং-এ বাধ্য হই।

উপজেলার রুপসদী বৃন্দাবন স্কুলের ইংরেজীর জনৈক শিক্ষক কোচিং বানিজ্যের অভিযোগের ভিত্তিতে বলেন,-‘স্কুলের বেতন ৬ সদস্যের পরিবার চালানো দায়।তবে,এখন থেকে স্কুলের ভেতর আর কোচিং করবো না।’

এ বিষয়ে কথা বললে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম এবং উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু তৈয়ব ভিন্ন ভিন্নভাবে বলেন,-‘বিষয়টি  জানলাম।সহকর্মীদের সাথে আলাপ করে সিদ্ধান্ত নেবো। তবে,শিক্ষাকে বানিজ্যের কাতারে নিতে দেবো না’।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মুরাদনগরে জাতীয় কন্যা শিশু দিবস পালিত

বাঞ্ছারামপুরের প্রত্যন্ত গ্রামেও ক্লাশের ভেতর ‘কোচিং বানিজ্য’ তুঙ্গে!

আপডেট সময় ০২:৫৭:৫৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ অগাস্ট ২০১৮
সালমা আহমেদ,বাঞ্ছারামপুর(ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধিঃ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ও ১২৬টি গ্রামেই কোচিং/প্রাইভেট বানিজ্য এখন চরম তুঙ্গে উঠেছে বলে জানা গেছে।স্কুলের ক্লাশের ভেতর কোিচিং বা প্রাইভেট পড়ানো নিষিদ্ধ থাকলেও এই আইনকে তোয়াক্কা করছেন না কোথাও। সরকার এমসিকিউ প্রশ্ন তুলে দেয়ার কারনে এখন কেবল ইংরেজী-গণিত বিষয়ই কেবল নয়,কোন কোন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থী সব বিষয়েই কোচিং করছে বলে জানা গেছে।

খোজ নিয়ে জানা গেছে,দিনভর কোচিং বানিজ্য করে শিক্ষকরা ক্লান্ত হওয়ার কারনে,ক্লাশে যেয়ে তারা মনোযোগী হতে পারছেন না।কোন রকম ক্লাশের সময় টুকুন পাড় করছেন শ্রেনী শিক্ষকরা।

বাঞ্ছারামপুর সদরে অবস্থিত বালিকা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের জনৈকা ছাত্রীর দিনমজুর অভিভাবক মো.কামরুল ইসলাম ক্ষুদ্ধ হয়ে বলেন,-‘আমরা দরিদ্র বলে সারা বছর কোচিং করাতে পারি না।চেষ্টা করি বার্ষিক পরীক্ষার আগের ৩ মাস পড়িয়ে মেয়েকে অন্তত পাশ করিয়ে আনি।’

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর অভিভাবক বলেন,-‘স্যার-রা তো এখন কোচিং-এ ৫শ টাকা জায়গায় ৭’শ টাকা রেট করে ফেলেছে।আমরা অটো চালাই,কেউ ব্যাটারী চালিত রিক্সা,কেউবা তরকারি বিক্রি বা দিনমজুরের কাজ,আমরা এতো টাকা পাবো কোথায়?’

বিভিন্ন সূত্র এবং খোজ নিয়ে জানা গেছে,বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ৩৯টি মাধ্যমিক/ নিম্ম মাধ্যমিক/মাদ্রাসার গণিতের নিয়মিত শিক্ষক,অতিরিক্ত পার্টটাইমার শিক্ষক গণিত ও ইংরেজীর শিক্ষক প্রতি ব্যাচে ১ হাজার টাকা করে নিয়ে কোচিং করাচ্ছেন।প্রতি ব্যাচে থাকে ২০ হতে ২৫জন শিক্ষার্থী।সে হিসেবে স্কুলের বেতনের ২ হতে ৫গুন বেশী আয় করছেন কেবল প্রাইভেট পড়িয়ে।১ শত ৪২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাইভেটের হার অবশ্য ৫-৭’শ টাকা করে।

কেন প্রাইভেট পড়ান ,স্কুলে পড়ানো হয় না? এমন প্রশ্নের মুখে জনৈক অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা বলেন,‘স্যারের কাছে কোচিং না করলে, ক্লাশে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্ল করা হয়,হয়রানী করা হয় নানা প্রশ্ন করে,পরীক্ষার খাতায় নাম্বার কম দেয়া হয়,ক্লাশের পেছনে বসতে দেয়া হয়’-সেজন্য কোচিং-এ বাধ্য হই।

উপজেলার রুপসদী বৃন্দাবন স্কুলের ইংরেজীর জনৈক শিক্ষক কোচিং বানিজ্যের অভিযোগের ভিত্তিতে বলেন,-‘স্কুলের বেতন ৬ সদস্যের পরিবার চালানো দায়।তবে,এখন থেকে স্কুলের ভেতর আর কোচিং করবো না।’

এ বিষয়ে কথা বললে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম এবং উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু তৈয়ব ভিন্ন ভিন্নভাবে বলেন,-‘বিষয়টি  জানলাম।সহকর্মীদের সাথে আলাপ করে সিদ্ধান্ত নেবো। তবে,শিক্ষাকে বানিজ্যের কাতারে নিতে দেবো না’।