ঢাকা ০১:২৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাঞ্ছারামপুরে পরিবেশ দূষণে ব্যবসায়ীদের সর্বনাশ!!

ফয়সল আহমেদ খান, বাঞ্ছারামপুর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) থেকেঃ

মাথার ওপর কা কা শব্দ। আকাশে উড়ছে একঝাঁক কাক।ভরদুপুর। পাশেই আবর্জনার ‘পাহাড়’। দুর্গন্ধে বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। মানুষ নাক টিপে রাস্তা পারি দিচ্ছেন।ব্যবসায়ীরা স্থায়ী মাস্ক কিনে দোকানদারী করছেন।বাজারের পশ্চিমে নোংরা-আবর্জনায় আর বর্ষায় কাদামাটিতে চলাচল করা দায়। এমন পরিবেশের মধ্যে চলছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ছয়ফুল্লাকান্দি ইউপি সদরের প্রখ্যাত আউলিয়া শাহ রাহাত আলী শাহ মাজার সংলগ্ন মাছিমনগরের বাজারের প্রাণকেন্দ্র।

দৈনন্দিন বাজার আর প্রয়োজনীয় কাজকর্ম করতে লাখো মানুষের এই বাজাওে দৈনন্দিন আসা-যাওয়া।বেশ জমজমাট বাজার। কিন্তু ই্উনিয়ন পরিষদ বা বাজার কমিটির চরম অব্যবস্থাপনা, বর্ষায় কাদা, পানি আর আবর্জনায় যেন ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে মাছিমনগর হাট। সেখানে দুর্গন্ধে টিকতে পারছেন না ক্রেতা-বিক্রেতারা।

বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় ১৩টি ইউনিয়নের সবচেয়ে বিকিকিনির প্রধান জায়গা এটি। কিন্তু বাজারের বিভিন্ন স্থান সহ কসাইরা গরুর নারী-ভূড়ি-হাঁড় থেকে সংগ্রহ করা বর্জ্য বাজারের মধ্যখানে ফেলছে যে যেমন পারছে। বর্জ্য আর বৃষ্টির পানি জমে তীব্র দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।

১৩ ফেব্রুয়ারি দুপুরে বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বাজারের মূল জায়গার আগেই রাস্তার পশ্চিমে মশা-মাছির উড়াউড়ি।রাস্তার ২মিটিার দূরে গরু জবাই ও গোস্ত বিক্রির নির্ধারিত টিনশেড জায়গা।কসাই পট্রির দুপাশে গরুর ভূড়ির মল,নাড়ি-ভূড়ি পচেঁ তীব্র দূগর্ন্ধ ছড়াচ্ছে।রুমাল নাকে দিয়ে ছবি তুলতে হলো।এখানে সকালে মাংশ নিয়ে বসে থাকেন বিক্রেতারা। এগিয়ে যেতেই দেখা গেল, বৃষ্টির পানি জমেছে গর্তে। হাটের ভেতরের মাটি রাস্তাগুলো কাদাপানিতে একাকার। এই দূর্গ›ধ নিয়েই  চলাচল করছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। চলাচলের সুবিধার জন্য অনেকে নাকে দু আগুল টিপে ধরছেন।স্থায়ী ব্যবসায়ীরা মাস্ক বা রুমাল। আবর্জনা জমতে জমতে বাজারের পশ্চিম দিকের পুরো জায়গাটি বিশাল স্তুপে রূপ নিয়েছে। সেখানকার দূষিত পানি এসে মিশছে হাটের কাদাপানিতে।এর সাথেই রয়েছে ভাঙ্গাচুড়া ৪টি পাবলিক টয়লেট-যেন মড়াঁর উপর খাঁড়ার ঘাঁ।মানুষের মলমূত্রের গন্ধ ভেসে আসছে বিরামহীন। ভাগাড়ে খাবার খুঁজে ফেরা কাকগুলো উড়ছে বাজারটির ওপর। কখনো কখনো পাখিগুলো আবর্জনা মুখে করে নিয়ে ফেলছে বাড়িঘরের ভেতর।

দীঘদিন ধরে ফল ব্যবসা করছেন জাহাঙ্গীর আলম।সাথে এসছেন ,মরম আলী, আবদুল মতিন আরো জনা দশেক। তারা বলেন, ‘বাজার কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম তুষার ও সেক্রেটারী তার মামা ফুল মিয়া।তারাই বাজারটির মা-বাপ। তাদেরকে বহুবার বহু বছর ধরে আমরা এই নরক যন্ত্রনা থেকে মুক্তির জন্য অনুরোধ করে আসছি।তারা জবাবে বলেন,‘দেখছি’। এখন ক্রেতারাও আসছেন না।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কসাই কর্মী  অবশ্য বলে, ‘‘শুধু আমরা নই, আরও অনেকে আবর্জনা ফেলেন।’’

বাজার কমিটির সাধারন সম্পাদক ফুল মিয়া বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। কিন্তু কোন সরকারি খাস জায়গা নেই,এখানে ছাড়া ফেলবো কোথায়?তবুও বিষয়টি দেখবো’’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.শরিফুল ইসলাম বলেন,-‘বাজারের যে কেউ আমাকে একটি লিখিত অভিযোগ দিতে বলুন,আমি এর বিরুদ্ধে একশন নিবো’।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মুরাদনগরে মাদ্রাসায় যান না পাঁচ বছর নিয়মিত বেতন তোলেন শিক্ষক

বাঞ্ছারামপুরে পরিবেশ দূষণে ব্যবসায়ীদের সর্বনাশ!!

আপডেট সময় ০১:৩৫:৩৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৮
ফয়সল আহমেদ খান, বাঞ্ছারামপুর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) থেকেঃ

মাথার ওপর কা কা শব্দ। আকাশে উড়ছে একঝাঁক কাক।ভরদুপুর। পাশেই আবর্জনার ‘পাহাড়’। দুর্গন্ধে বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। মানুষ নাক টিপে রাস্তা পারি দিচ্ছেন।ব্যবসায়ীরা স্থায়ী মাস্ক কিনে দোকানদারী করছেন।বাজারের পশ্চিমে নোংরা-আবর্জনায় আর বর্ষায় কাদামাটিতে চলাচল করা দায়। এমন পরিবেশের মধ্যে চলছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ছয়ফুল্লাকান্দি ইউপি সদরের প্রখ্যাত আউলিয়া শাহ রাহাত আলী শাহ মাজার সংলগ্ন মাছিমনগরের বাজারের প্রাণকেন্দ্র।

দৈনন্দিন বাজার আর প্রয়োজনীয় কাজকর্ম করতে লাখো মানুষের এই বাজাওে দৈনন্দিন আসা-যাওয়া।বেশ জমজমাট বাজার। কিন্তু ই্উনিয়ন পরিষদ বা বাজার কমিটির চরম অব্যবস্থাপনা, বর্ষায় কাদা, পানি আর আবর্জনায় যেন ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে মাছিমনগর হাট। সেখানে দুর্গন্ধে টিকতে পারছেন না ক্রেতা-বিক্রেতারা।

বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় ১৩টি ইউনিয়নের সবচেয়ে বিকিকিনির প্রধান জায়গা এটি। কিন্তু বাজারের বিভিন্ন স্থান সহ কসাইরা গরুর নারী-ভূড়ি-হাঁড় থেকে সংগ্রহ করা বর্জ্য বাজারের মধ্যখানে ফেলছে যে যেমন পারছে। বর্জ্য আর বৃষ্টির পানি জমে তীব্র দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।

১৩ ফেব্রুয়ারি দুপুরে বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বাজারের মূল জায়গার আগেই রাস্তার পশ্চিমে মশা-মাছির উড়াউড়ি।রাস্তার ২মিটিার দূরে গরু জবাই ও গোস্ত বিক্রির নির্ধারিত টিনশেড জায়গা।কসাই পট্রির দুপাশে গরুর ভূড়ির মল,নাড়ি-ভূড়ি পচেঁ তীব্র দূগর্ন্ধ ছড়াচ্ছে।রুমাল নাকে দিয়ে ছবি তুলতে হলো।এখানে সকালে মাংশ নিয়ে বসে থাকেন বিক্রেতারা। এগিয়ে যেতেই দেখা গেল, বৃষ্টির পানি জমেছে গর্তে। হাটের ভেতরের মাটি রাস্তাগুলো কাদাপানিতে একাকার। এই দূর্গ›ধ নিয়েই  চলাচল করছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। চলাচলের সুবিধার জন্য অনেকে নাকে দু আগুল টিপে ধরছেন।স্থায়ী ব্যবসায়ীরা মাস্ক বা রুমাল। আবর্জনা জমতে জমতে বাজারের পশ্চিম দিকের পুরো জায়গাটি বিশাল স্তুপে রূপ নিয়েছে। সেখানকার দূষিত পানি এসে মিশছে হাটের কাদাপানিতে।এর সাথেই রয়েছে ভাঙ্গাচুড়া ৪টি পাবলিক টয়লেট-যেন মড়াঁর উপর খাঁড়ার ঘাঁ।মানুষের মলমূত্রের গন্ধ ভেসে আসছে বিরামহীন। ভাগাড়ে খাবার খুঁজে ফেরা কাকগুলো উড়ছে বাজারটির ওপর। কখনো কখনো পাখিগুলো আবর্জনা মুখে করে নিয়ে ফেলছে বাড়িঘরের ভেতর।

দীঘদিন ধরে ফল ব্যবসা করছেন জাহাঙ্গীর আলম।সাথে এসছেন ,মরম আলী, আবদুল মতিন আরো জনা দশেক। তারা বলেন, ‘বাজার কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম তুষার ও সেক্রেটারী তার মামা ফুল মিয়া।তারাই বাজারটির মা-বাপ। তাদেরকে বহুবার বহু বছর ধরে আমরা এই নরক যন্ত্রনা থেকে মুক্তির জন্য অনুরোধ করে আসছি।তারা জবাবে বলেন,‘দেখছি’। এখন ক্রেতারাও আসছেন না।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কসাই কর্মী  অবশ্য বলে, ‘‘শুধু আমরা নই, আরও অনেকে আবর্জনা ফেলেন।’’

বাজার কমিটির সাধারন সম্পাদক ফুল মিয়া বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। কিন্তু কোন সরকারি খাস জায়গা নেই,এখানে ছাড়া ফেলবো কোথায়?তবুও বিষয়টি দেখবো’’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.শরিফুল ইসলাম বলেন,-‘বাজারের যে কেউ আমাকে একটি লিখিত অভিযোগ দিতে বলুন,আমি এর বিরুদ্ধে একশন নিবো’।