ঢাকা ০৪:২৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ১৭ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাঞ্ছারামপুরে পা কেটে নেওয়ার ঘটনায় ৪ দিনেও আটক করতে পরেনি পুলিশ মূল আসামীদের

ফয়সাল আহমেদ খান,বাঞ্ছারামপুর(ব্রাহ্মণবাড়িয়া)প্রতিনিধি:

রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার রূপসদী গ্রামের কালা মিয়ার (৪৫) পা কেটে নেওয়ার ঘটনা ৪ দিন পেরিয়ে গেলেও মূল আসামীদের আটক করতে পারেনি পুলিশ। এ ঘটনায় উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ অভিযোক্ত আবুল বাশারের প্রাথমিক সদস্য পদ বাতিলসহ স্থায়ী বহিষ্কারের সুপারিশ করেছে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের কাছে।

চারদিন ধরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন কালা মিয়া ও তার ছেলে বিপ্লব  মিয়া (১৯)। এ ঘটনায় আবুল বাশারকে প্রধান আসামি করে ১৪ জনের নামসহ অজ্ঞাত আরও ১৫/২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন কালা মিয়ার স্ত্রী সালমা আক্তার। তবে এখন পর্যন্ত মূল অভিযুক্ত আবুল বাশার পুলিশের হাতে ধরা না পড়ায় শঙ্কা প্রকাশ করেছেন কালা মিয়ার পরিবারের লোকজন।

আহত কালা মিয়ার পরিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বাঞ্ছারমপুর উপজেলার রূপসদী গ্রামের কালা মিয়ার সঙ্গে একই গ্রামের বাসিন্দা ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আবুল বাশারের বিরোধ চলে আসছিল। এ বিরোধের জের ধরে গত শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে আবুল বাশার ও সহযোগীরা কালা মিয়া এবং তার ছেলে বিপ্লব মিয়াকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে প্রথমে টেঁটাবিদ্ধ করেন। এরপর কালা মিয়া মাটিতে লুটে পড়লে ধারালো দা দিয়ে তার ডান পায়ের হাঁটু থেকে নিচ পর্যন্ত কেটে নিয়ে যায় তারা। এ ঘটনায় কালা মিয়ার ছেলে বিপ্লবের দুই পায়ের রগও কেটে দেয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে। পরে তাদের মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ঢাকায় মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে রেফার্ড করেন। সেখানে গত চারদিন ধরে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন কালা মিয়া ও তার ছেলে বিপ্লব মিয়া।

তবে ঘটনার দিন অভিযোগ অস্বীকার করে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি আবুল বাশার বলেছিলেন, যতটুকু শুনেছি কালা মিয়া আমাদের গ্রামের এক বাড়িতে চুরি করতে গিয়েছিল। সেই বাড়ির লোকজন ও এলাকাবাসী ধরে তাকে গণপিটুনি দিয়েছে। পরবর্তীতে কি হয়েছে আমি জানি না।

এ ব্যাপারে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাঈদুজ্জামান আরিফ বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে কালা মিয়ার পা কেটে নেয়ার ঘটনাটি জানতে পেরে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে আবুল বাশারকে দল থেকে বহিষ্কার করার জন্য উপজেলা কমিটিকে নির্দেশনা দেই। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়, অপরাধী যে দলেরই হোক তার শাস্তি হবে। আবুল বাশারের প্রাথমিক সদস্য পদ বাতিল করে তাকে দল থেকে স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

বাঞ্ছারামপুর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালাহ্ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, এ মামলায় এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা যায়নি। আমরা আবুল বাশারকে গ্রেফতারের জন্য বিভিন্নভাবে চেষ্টা করছি। কালা মিয়ার কেটে নেয়া পা উদ্ধারে পুলিশের পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রনিধিরাও চেষ্টা করছে বলেও জানান। তিনি আরো বলেন, অপরাধী যে কেউ হোক তাকে আইনের আওয়াতায় আনা হবে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

বাঞ্ছারামপুরে পা কেটে নেওয়ার ঘটনায় ৪ দিনেও আটক করতে পরেনি পুলিশ মূল আসামীদের

আপডেট সময় ০২:০৩:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ এপ্রিল ২০১৯
ফয়সাল আহমেদ খান,বাঞ্ছারামপুর(ব্রাহ্মণবাড়িয়া)প্রতিনিধি:

রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার রূপসদী গ্রামের কালা মিয়ার (৪৫) পা কেটে নেওয়ার ঘটনা ৪ দিন পেরিয়ে গেলেও মূল আসামীদের আটক করতে পারেনি পুলিশ। এ ঘটনায় উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ অভিযোক্ত আবুল বাশারের প্রাথমিক সদস্য পদ বাতিলসহ স্থায়ী বহিষ্কারের সুপারিশ করেছে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের কাছে।

চারদিন ধরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন কালা মিয়া ও তার ছেলে বিপ্লব  মিয়া (১৯)। এ ঘটনায় আবুল বাশারকে প্রধান আসামি করে ১৪ জনের নামসহ অজ্ঞাত আরও ১৫/২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন কালা মিয়ার স্ত্রী সালমা আক্তার। তবে এখন পর্যন্ত মূল অভিযুক্ত আবুল বাশার পুলিশের হাতে ধরা না পড়ায় শঙ্কা প্রকাশ করেছেন কালা মিয়ার পরিবারের লোকজন।

আহত কালা মিয়ার পরিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বাঞ্ছারমপুর উপজেলার রূপসদী গ্রামের কালা মিয়ার সঙ্গে একই গ্রামের বাসিন্দা ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আবুল বাশারের বিরোধ চলে আসছিল। এ বিরোধের জের ধরে গত শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে আবুল বাশার ও সহযোগীরা কালা মিয়া এবং তার ছেলে বিপ্লব মিয়াকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে প্রথমে টেঁটাবিদ্ধ করেন। এরপর কালা মিয়া মাটিতে লুটে পড়লে ধারালো দা দিয়ে তার ডান পায়ের হাঁটু থেকে নিচ পর্যন্ত কেটে নিয়ে যায় তারা। এ ঘটনায় কালা মিয়ার ছেলে বিপ্লবের দুই পায়ের রগও কেটে দেয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে। পরে তাদের মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ঢাকায় মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে রেফার্ড করেন। সেখানে গত চারদিন ধরে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন কালা মিয়া ও তার ছেলে বিপ্লব মিয়া।

তবে ঘটনার দিন অভিযোগ অস্বীকার করে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি আবুল বাশার বলেছিলেন, যতটুকু শুনেছি কালা মিয়া আমাদের গ্রামের এক বাড়িতে চুরি করতে গিয়েছিল। সেই বাড়ির লোকজন ও এলাকাবাসী ধরে তাকে গণপিটুনি দিয়েছে। পরবর্তীতে কি হয়েছে আমি জানি না।

এ ব্যাপারে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাঈদুজ্জামান আরিফ বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে কালা মিয়ার পা কেটে নেয়ার ঘটনাটি জানতে পেরে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে আবুল বাশারকে দল থেকে বহিষ্কার করার জন্য উপজেলা কমিটিকে নির্দেশনা দেই। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়, অপরাধী যে দলেরই হোক তার শাস্তি হবে। আবুল বাশারের প্রাথমিক সদস্য পদ বাতিল করে তাকে দল থেকে স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

বাঞ্ছারামপুর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালাহ্ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, এ মামলায় এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা যায়নি। আমরা আবুল বাশারকে গ্রেফতারের জন্য বিভিন্নভাবে চেষ্টা করছি। কালা মিয়ার কেটে নেয়া পা উদ্ধারে পুলিশের পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রনিধিরাও চেষ্টা করছে বলেও জানান। তিনি আরো বলেন, অপরাধী যে কেউ হোক তাকে আইনের আওয়াতায় আনা হবে।