ঢাকা ০২:৪০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাঞ্ছারামপুরে মাটিকাটাল শ্রমিকের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে ভেকু মেশিন’

ফয়সল আহমেদ খান,বাঞ্ছারামপুর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) থেকেঃ

অতিদরিদ্র বেকার শ্রমিকদের কর্মসংস্থান কর্মসূচীর (৪০ দিন) প্রথম পর্ব শেষ হওয়ার পর ব্রাহ্মনবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলাধীন বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয়েছে ২য় পর্বেও বিভিন্ন প্রকল্পের বাস্তবায়নের কাজ।

কোথাও শ্রমিকের পরিবর্তে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে কাজ চালিয়ে, আবার কোথাও ৩০জনের স্থলে ১০ জন শ্রমিক দিয়ে কাজ করিয়ে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে গরীব শ্রমিকদের নামে বরাদ্দকৃত সরকারী অর্থ। আবার কেউবা প্রকল্প বরাদ্দ করে রাস্তার নামে নিজের মৎস্য প্রজেক্টের বাঁধ নির্মাণ করে ব্যক্তি স্বার্থ হাসিল করছেন।

উপজেলা প্রশাসনিক কর্মকর্তা (বিশেষ করে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস) ও কর্মচারীদের যোগসাজসে জনপ্রতিনিধিদের স্বেচ্ছাচারিতায় ভেস্তে যাচ্ছে শেখ হাসিনা সরকারের ওই মহান উদ্যোগ।

অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির (ইজিপিপি) আওতায় বছরের কর্মহীন মৌসুমে কর্মক্ষম বেকার শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নিশ্চিত করণে বছরে দুই মৌসুমে (৪০ দিনের কর্মসূচী) চালু করেছে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।

স্বল্প মেয়াদী কর্মসংস্থানের মাধ্যমে কর্মক্ষম দুঃস্থ পরিবারগুলোর দারিদ্র নিরসনের লক্ষ্যে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে সক্ষমতা বৃদ্ধিই এ কর্মসূচীর মূল উদ্দেশ্য বর্তমান সরকারের। ইজিপিপি প্রকল্প বাস্তবায়নে বছরের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর ওই দুই মাসের মাঝামাঝি ৪০দিন এবং মার্চ থেকে এপ্রিল ওই দুই মাসের ৪০দিনকে শ্রমিকদের কর্মহীন মৌসুম হিসেবে চিহ্নিত করেছেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়।

আর ওই দুই পর্বে মোট ৮০দিন অদক্ষ ও দরিদ্র শ্রমিকদের কর্ম সংস্থানের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে ইউনিয়ন পর্যায়ের সমাজিক, ধর্মীয় ও জনস্বার্থে বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজের মাধ্যমে ওই বেকার শ্রমিকদের নিয়োজিত করার কথা রয়েছে। যার উপকারভোগী হবে অতিদরিদ্র শ্রমিক।

বাঞ্ছারামপুরে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের(১৩টি) প্রতিটি ইউনিয়নে যথা সময়ে ৪০ দিনের কর্মসূচী বাস্তবায়নের উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে একাধিক কর্মসূচী হাতে নেওয়া হয়েছে। কাগজে-কলমে মার্চের আগেই কর্মসূচী রেজুলেশনভূক্ত হয়ে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যসহ নেতা-কর্মীদের মধ্যে ওইসব প্রকল্প বিতরণ করা হলেও মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত কর্মসূচী বাস্তবায়নে ধারে কাছেও নেই। দুর্নীতি-অনিয়ম ও সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করাই যেন ওই প্রকল্পের মূল কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কেস ষ্টাডি

বাঞ্ছারামপুর উপজেলার দরিয়াদৌলত ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান ও সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত রেজুলেশনে ৪০দিনের কর্মসূচীর আওতায় ৫টি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছিলো। ওই চারটি প্রকল্পে প্রতিদিন ১৮৪ জন শ্রমিক কাজ করারও কথা রয়েছে। কিন্তু ওই চারটি প্রকল্পে কাজ করছে প্রতিদিন ১৫-২০জন শ্রমিক। আর মাত্র কয়েকদিন কাজ করছে একটি মাটি কাটার এক্সিভেটর (ভেকু)! যার ফলে কাজের অভাবে বেকার হয়ে পড়ে আছে অনেক নারী ও পুরুষ শ্রমিকরা।

দরিয়াদৌলত ইউনিয়ন পরিষদের রেজুলেশনের প্রথম প্রকল্পটি রয়েছে ‘দরিয়াদৌলত বাজার হইতে কানাইনগর পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ’। ওই প্রকল্পে প্রতিদিন ৪০ জন শ্রমিক কাজ করার কথা থাকলেও সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় ওই রাস্তা নির্মাণে ৪০জন শ্রমিকের পরিবর্তে কাজ হচ্ছে একটি এক্সিভেটর! ওই প্রকল্পে তদারকি করছেন প্রকল্প সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদ ওয়ার্ড মেম্বার যথাক্রমে সফিকুল ইসলাম এবং মিনা বেগম ।

এ ব্যাপারে সফিক মেম্বার ভেকু মেশিন দিয়ে কাজ করানোর কথা গোপন রেখে জানান, এই প্রকল্পের সবটুকু শ্রমিকরাই করেছেন। প্রতিদিন কতজন শ্রমিক কাজ করেছেন তাদের হাজিরা খাতা আছে কি? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, সেটা মাটি কাটার সর্দারের কাছে। শ্রমিক ও সর্দার কোথায় জানতে চাইলে তিনি কোন উত্তরই দিতে পারেননি।

স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিন ভেকু মেশিনে সাথে ৪-৫ জন শ্রমিক কাজ করে প্রকল্পের ওই রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু প্রতিদিন ৪০জন শ্রমিকের নামে-বেনামে ৪০দিন কর্ম তালিকায় সরকারি অর্থ উত্তোলন করা হবে। নাম প্রকাশ না করা শর্তে ওই ইউনিয়নের আরও একজন জানান, তালিকা ভূক্ত শ্রমিকদের কাছ থেকে ৪০ টাকা ও ছবি নিয়ে তাদের নামে ব্যাংক একাউন্টও খোলা হয়েছে। তাদের নামে টাকা উঠানোর পর তাদেরকে ৫শ টাকা দিয়ে বিদায় করা হয় বা হবে।

একই ভাবে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ইউনিয়নের মধ্যে বাহেরচরের রহিম চেয়ারম্যান,তেজখালির মো. তাজুল ইসলাম চেয়ারম্যান,আইয়ুবপুরের নজরুল ইসলাম প্রমূখ। ওই ইউনিয়ন পরিষদের সভায় ৩টি প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে রেজুলেশন করা হলেও সেই রেজুলেশনের কথা জানেন না ইউপি সদস্যরা।

এব্যাপারে মুখ খুলেন ৪০ দিনের কর্মসূচীর তালিকায় অন্তর্ভূক্ত নারী ও পুরুষ শ্রমিকরা। তারা জানান, দরিয়াদৌলতের”৫/৮ নং ওয়ার্ডের সফিক মেম্বার আমাদের কার্ড করে দেওয়ার জন্য ছবি,টিপ সহিসহ ভোটার আইডি কার্ড ইত্যাদি নেন।৩ দিন আমরা কাজের আশায় অন্যকাজ ছেড়ে দেই।কিন্তু মেম্বার সাবরা ভেকু মেশিন দিয়ে কাজ করায়।আমরা বেকার থাকি ”

এদিকে বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় বিভিন্ন ইউনিয়নে ৪০ দিনের কর্মসূচীর সুষ্ঠু তদন্ত দাবী করেন ভোক্তাসহ এলাকাবাসী।
এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে দরিয়াদৌলত ইউনিয়নের স্বেচ্ছাসেবক লীগের উপজেলা শাখার সহসভাপতি মো.ইসমাইল সরকার ইউএনও বরাবর লিখিত আবেদনে ভেকু মেশিন দিয়ে কাজ করানোর বিষয়টি উল্লেখ কওে তদন্তের দাবী করেন।অন্যদিকে,একই ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের সভাপতি মো.আমীর হোসেন বলেন,-‘সরকারের উদ্দেশ্য যদি বাস্তবায়িত না হয়,ইউএনও সাহেব যদি তদন্ত না করেন,তা হলে আমি এমন অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে আদালতে যাবো’।
বাঞ্ছারামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.শরিফুল ইসলাম বলেন,-‘আমি অভিযোগ পেয়েছি।তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে’।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মুরাদনগরে পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রবাসীর বাড়ি ঘরে হামলা, নারীসহ আহত ৩

বাঞ্ছারামপুরে মাটিকাটাল শ্রমিকের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে ভেকু মেশিন’

আপডেট সময় ০২:৫০:১৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০১৮
ফয়সল আহমেদ খান,বাঞ্ছারামপুর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) থেকেঃ

অতিদরিদ্র বেকার শ্রমিকদের কর্মসংস্থান কর্মসূচীর (৪০ দিন) প্রথম পর্ব শেষ হওয়ার পর ব্রাহ্মনবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলাধীন বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয়েছে ২য় পর্বেও বিভিন্ন প্রকল্পের বাস্তবায়নের কাজ।

কোথাও শ্রমিকের পরিবর্তে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে কাজ চালিয়ে, আবার কোথাও ৩০জনের স্থলে ১০ জন শ্রমিক দিয়ে কাজ করিয়ে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে গরীব শ্রমিকদের নামে বরাদ্দকৃত সরকারী অর্থ। আবার কেউবা প্রকল্প বরাদ্দ করে রাস্তার নামে নিজের মৎস্য প্রজেক্টের বাঁধ নির্মাণ করে ব্যক্তি স্বার্থ হাসিল করছেন।

উপজেলা প্রশাসনিক কর্মকর্তা (বিশেষ করে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস) ও কর্মচারীদের যোগসাজসে জনপ্রতিনিধিদের স্বেচ্ছাচারিতায় ভেস্তে যাচ্ছে শেখ হাসিনা সরকারের ওই মহান উদ্যোগ।

অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির (ইজিপিপি) আওতায় বছরের কর্মহীন মৌসুমে কর্মক্ষম বেকার শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নিশ্চিত করণে বছরে দুই মৌসুমে (৪০ দিনের কর্মসূচী) চালু করেছে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।

স্বল্প মেয়াদী কর্মসংস্থানের মাধ্যমে কর্মক্ষম দুঃস্থ পরিবারগুলোর দারিদ্র নিরসনের লক্ষ্যে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে সক্ষমতা বৃদ্ধিই এ কর্মসূচীর মূল উদ্দেশ্য বর্তমান সরকারের। ইজিপিপি প্রকল্প বাস্তবায়নে বছরের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর ওই দুই মাসের মাঝামাঝি ৪০দিন এবং মার্চ থেকে এপ্রিল ওই দুই মাসের ৪০দিনকে শ্রমিকদের কর্মহীন মৌসুম হিসেবে চিহ্নিত করেছেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়।

আর ওই দুই পর্বে মোট ৮০দিন অদক্ষ ও দরিদ্র শ্রমিকদের কর্ম সংস্থানের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে ইউনিয়ন পর্যায়ের সমাজিক, ধর্মীয় ও জনস্বার্থে বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজের মাধ্যমে ওই বেকার শ্রমিকদের নিয়োজিত করার কথা রয়েছে। যার উপকারভোগী হবে অতিদরিদ্র শ্রমিক।

বাঞ্ছারামপুরে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের(১৩টি) প্রতিটি ইউনিয়নে যথা সময়ে ৪০ দিনের কর্মসূচী বাস্তবায়নের উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে একাধিক কর্মসূচী হাতে নেওয়া হয়েছে। কাগজে-কলমে মার্চের আগেই কর্মসূচী রেজুলেশনভূক্ত হয়ে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যসহ নেতা-কর্মীদের মধ্যে ওইসব প্রকল্প বিতরণ করা হলেও মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত কর্মসূচী বাস্তবায়নে ধারে কাছেও নেই। দুর্নীতি-অনিয়ম ও সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করাই যেন ওই প্রকল্পের মূল কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কেস ষ্টাডি

বাঞ্ছারামপুর উপজেলার দরিয়াদৌলত ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান ও সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত রেজুলেশনে ৪০দিনের কর্মসূচীর আওতায় ৫টি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছিলো। ওই চারটি প্রকল্পে প্রতিদিন ১৮৪ জন শ্রমিক কাজ করারও কথা রয়েছে। কিন্তু ওই চারটি প্রকল্পে কাজ করছে প্রতিদিন ১৫-২০জন শ্রমিক। আর মাত্র কয়েকদিন কাজ করছে একটি মাটি কাটার এক্সিভেটর (ভেকু)! যার ফলে কাজের অভাবে বেকার হয়ে পড়ে আছে অনেক নারী ও পুরুষ শ্রমিকরা।

দরিয়াদৌলত ইউনিয়ন পরিষদের রেজুলেশনের প্রথম প্রকল্পটি রয়েছে ‘দরিয়াদৌলত বাজার হইতে কানাইনগর পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ’। ওই প্রকল্পে প্রতিদিন ৪০ জন শ্রমিক কাজ করার কথা থাকলেও সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় ওই রাস্তা নির্মাণে ৪০জন শ্রমিকের পরিবর্তে কাজ হচ্ছে একটি এক্সিভেটর! ওই প্রকল্পে তদারকি করছেন প্রকল্প সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদ ওয়ার্ড মেম্বার যথাক্রমে সফিকুল ইসলাম এবং মিনা বেগম ।

এ ব্যাপারে সফিক মেম্বার ভেকু মেশিন দিয়ে কাজ করানোর কথা গোপন রেখে জানান, এই প্রকল্পের সবটুকু শ্রমিকরাই করেছেন। প্রতিদিন কতজন শ্রমিক কাজ করেছেন তাদের হাজিরা খাতা আছে কি? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, সেটা মাটি কাটার সর্দারের কাছে। শ্রমিক ও সর্দার কোথায় জানতে চাইলে তিনি কোন উত্তরই দিতে পারেননি।

স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিন ভেকু মেশিনে সাথে ৪-৫ জন শ্রমিক কাজ করে প্রকল্পের ওই রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু প্রতিদিন ৪০জন শ্রমিকের নামে-বেনামে ৪০দিন কর্ম তালিকায় সরকারি অর্থ উত্তোলন করা হবে। নাম প্রকাশ না করা শর্তে ওই ইউনিয়নের আরও একজন জানান, তালিকা ভূক্ত শ্রমিকদের কাছ থেকে ৪০ টাকা ও ছবি নিয়ে তাদের নামে ব্যাংক একাউন্টও খোলা হয়েছে। তাদের নামে টাকা উঠানোর পর তাদেরকে ৫শ টাকা দিয়ে বিদায় করা হয় বা হবে।

একই ভাবে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ইউনিয়নের মধ্যে বাহেরচরের রহিম চেয়ারম্যান,তেজখালির মো. তাজুল ইসলাম চেয়ারম্যান,আইয়ুবপুরের নজরুল ইসলাম প্রমূখ। ওই ইউনিয়ন পরিষদের সভায় ৩টি প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে রেজুলেশন করা হলেও সেই রেজুলেশনের কথা জানেন না ইউপি সদস্যরা।

এব্যাপারে মুখ খুলেন ৪০ দিনের কর্মসূচীর তালিকায় অন্তর্ভূক্ত নারী ও পুরুষ শ্রমিকরা। তারা জানান, দরিয়াদৌলতের”৫/৮ নং ওয়ার্ডের সফিক মেম্বার আমাদের কার্ড করে দেওয়ার জন্য ছবি,টিপ সহিসহ ভোটার আইডি কার্ড ইত্যাদি নেন।৩ দিন আমরা কাজের আশায় অন্যকাজ ছেড়ে দেই।কিন্তু মেম্বার সাবরা ভেকু মেশিন দিয়ে কাজ করায়।আমরা বেকার থাকি ”

এদিকে বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় বিভিন্ন ইউনিয়নে ৪০ দিনের কর্মসূচীর সুষ্ঠু তদন্ত দাবী করেন ভোক্তাসহ এলাকাবাসী।
এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে দরিয়াদৌলত ইউনিয়নের স্বেচ্ছাসেবক লীগের উপজেলা শাখার সহসভাপতি মো.ইসমাইল সরকার ইউএনও বরাবর লিখিত আবেদনে ভেকু মেশিন দিয়ে কাজ করানোর বিষয়টি উল্লেখ কওে তদন্তের দাবী করেন।অন্যদিকে,একই ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের সভাপতি মো.আমীর হোসেন বলেন,-‘সরকারের উদ্দেশ্য যদি বাস্তবায়িত না হয়,ইউএনও সাহেব যদি তদন্ত না করেন,তা হলে আমি এমন অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে আদালতে যাবো’।
বাঞ্ছারামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.শরিফুল ইসলাম বলেন,-‘আমি অভিযোগ পেয়েছি।তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে’।