ফয়সল আহমেদ খান, বাঞ্ছারামপুর(ব্রাহ্মণবাড়িয়া)প্রতিনিধিঃ
পুলিশের খাতায় মোষ্টওয়ান্টেড ও ৩০টির মতো মাদক-ডাকাতি মামলার আসামী স্বঘোষিত মাদক সম্রাট এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর, বড়িকান্দি, ছলিমগঞ্জ, নবীনগরের ত্রাস হিসেবে মোনেক মিয়া এবার প্রকাশ্যে মাদক বানিজ্য করছেন বলে লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন ভূক্তভোগী এলাকাবাসী। তারা র্যাপিড একশান ব্যাটালিয়ান (র্যাব) সদর দপ্তরে লিখিত অভিযোগে অবিলম্বে মোনেককে গ্রেফতার করে পুলিশী হেফাজতে রাখার দাবী জানিয়ে গনস্বাক্ষর করে সাংবাদিকদেরও সহায়তা চেয়েছে।
মোনেকের মাদক বানিজ্যের বিস্তৃতিতে আতংকিত জনগন অনন্যোপায় হয়ে গতকাল (শনিবার) পুলিশের আইজি,পুলিশ সুপার,র্যাব-১৪ কে ফের মোনেকের অপরাধের বিভিন্ন তথ্য ও দেড় ডজন মামলার নথির ফটোকপি প্রেরন করেছেন বলে জানা গেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে,দিনের বেলায় পীরের বেশে মোনেক ছলিমগঞ্জ ও আশপাশের এলাকায় ঘুপটি মেরে থাকে এবং গণি শাহ মাজার হলো তার প্রধান আস্তানা।থানার পুলিশ কেনো তাকে ধরতে পারে না-এমন প্রশ্নের জবাবে এলাকাবাসীর অনেকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান,
ছলিমগঞ্জ ফাঁড়ি থানার পুলিশের হাবিলদার ইয়াকুব আলী মোনেক ডাকাতকে তথ্য ও আইনী সহায়তা দিয়ে রক্ষা করছে।সেজন্য তাকে র্যাব-পুলিশ ধরতে পারে না।অথচ সে দিনের বেলায় ঘুরে বেড়ায়,রাতে ঘরে থাকে না।তার সাথে তার স্ত্রীও মাদক ব্যবসায় জড়িত বলে জানা গেছে।
এবিষয়ে হাবিলদার ইয়াকুবের সাথে মুঠোফোনে কথা বললে জানায়-‘তওবা তওবা,এটা আমার শত্রুরা ছড়িয়েছে।আমি কেনো একজন কুখ্যাত ক্রিমিনালকে তথ্য দিবো?’’
নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি)মো.আসলাম সিকদার মোনেক প্রসঙ্গে বলেন,-‘মোনেক একটা আস্তা হারামজাদা,খারাপ এবং দুষ্টুলোক।পুলিশ তাকে খুজছে।তার নামে একাধিক ওয়ারেন্ট আছে।’
র্যাব-১৪ কমান্ডার মেজর এডি চন্দন দেবনাথ আজ (শনিবার)রাতে মুঠোফোনে জানান-‘মোনেকের বিষয়ে আমরা তৎপর।আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষন করছি।গ্রামবাসীকে অনুরোধ করবো-আপনারা আমাদের উপর আস্থা রাখুন।যেকোন সময় আমরা মোনেককে আইনের আওতায় আনবো’।
মোনেকের সহযোগী: মোনেকের সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে এলাকায় যার নাম ছড়িয়ে আছে হলো মুছা।ফ্রেঞ্চকাট দাড়িতে সব সময় মোনেকের নিজস্ব অবৈধ অস্ত্র একটি শর্টগাট ও একটি রিভলবার মুছা বহন করে মোনেককে ছায়ার মতো অনুসরন করে।এরপর রয়েছে উজ্জ্বল,সাদেক ও আলম।তাদের উপর মোনাক খুব আস্থাশীল।(ছবি দেয়া আছে)
মোনেকের অপরাধনামা : মোনেক কে অনেকে বিভিন্ন নামে জানেন।কখনো মোনেক পীর।কখনো ডাকাত।কখনো মাদক স¤্রাট।কখনো ভাড়াটে খুনী।কখনোবা দানশীল ব্যাক্তি।
খোজ নিয়ে জানা গেছে, বাল্যকাল থেকেই তার গ্রামের বাড়ি নুরজাহান পুরে চুরী-মারামারির সাথে জড়িত ছিলো।২০১২ সালে প্রথম সে ডাকাতির সাথে যুক্ত হয়।পুলিশের খাতায় নাম উঠে জিআর ১৩/৪৫৪ ডাকাতির মামলায় ধরা খেয়ে।জামিনে বেড়িয়ে এসে বড় সরো একটি ডাকাত টীম গঠন করে।বাড়তে থাকে অপরাধ পরিক্রমা।শোনা গেছে,জেলে থেকে বেড়িয়ে মাত্র ৫ টি অপারেশনে ৫ কোটি টাকা তার ভান্ডারে জমা হয়।সেগুলো দিয়ে এলাকার কিছু গরীব মানুষকে সে আর্থিক সহায়তা করে দানবীর বনে যায়।বিধিবাম! আবার ধরা পড়ে ১ এপ্রিল মাদক নিয়ে।পুলিশের খাতায় এবার নাম উঠে মাদক স¤্রাট হিসেবে।মামলা নং জিআর ৩/১৭৩ নবীনগর থানা।মজার বিষয় হলো তার এতো অর্থ বিত্ত হয়ে যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সব বড়সরো উকিল তার কেনা হয়ে যায়।ফলে তাকে বেশী দিন জেলে থাকতে হয়নি।গ্রেফতার হয় তো ৭দিন পর বেরিয়ে আসে।কেবল ২০১৪ সালের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে ঐ বছর তার নামে ডাকাতি,মাদক,ঘড়পুড়িয়ে দেয়ার মামলা অভিযোগে তার নামে মামলা হয় ৫ টি। ২০১৫ সালে আরো ৫টি।২০১৬ সালে ৩টি।
২০১৭-১৮ সালের তথ্যবহুল পরিসংখ্যান এখনো পাওয়া যায়নি।
মোনেকের বিলাসী জীবন : মোনেক এর কাছের লোকদের কাছ থেকে জানা গেছে,মোনেক ধর্ষনে বিশ^াসী নয়।তবে,নারী সঙ্গ তার ভালো লাগে।টাকার বিনিময়ে নিত্যনতুন নারী তার শয্যাসঙ্গী হয়।মাংস ছাড়া তার মুখে খাবার জুটে না।জেল খানায় থাকলেও মাংস ছাড়া ভাত খায় না মোনেক।তবে,সে দান-খয়রাতে এক নাম্বার।দরিদ্র মানুষের কষ্ট সহ্য করতে পারে না।