জাতীয় :
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বিএনপি দাবি করে তাদের গণজোয়ার চলছে। কিন্তু তাদের আন্দোলনেও ভাটা, নির্বাচনেও ভাটা, জোয়ার তারা দেখেনি। তাদের সবকিছুতেই এখন ভাটা পড়ে গেছে। যদি আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ থাকে বিএনপি আর কখনো জোয়ারের দেখা পাবে না। তাদের জন্য জোয়ার আর কখনো আসবে না।’
মঙ্গলবার বিকালে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক বিশাল কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সবাই এক থাকবেন; নিজের দল ভারি করার জন্য সুবিধাবাদীদের দলে টানবেন না। দুঃসময়ের কর্মীরাই হচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রাণ। দুঃসময়ের এইসব ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করুন। ওয়ার্ড কমিটি পর্যন্ত সব কমিটি করে ফেলুন। তৃণমূল পর্যন্ত সব কমিটিতে ত্যাগী নেতাকর্মীদের অগ্রাধিকার দেবেন। সব কমিটি শেষ করে জেলা কমিটি করতে হবে।’
সেতুমন্ত্রী আরো বলেন, ‘আপনারা আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করে তুলুন। আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ করুন। ঐক্যবদ্ধ থেকে আওয়ামী লীগকে বেঁচে থাকবে হবে। আওয়ামী লীগ না বাঁচলে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বাঁচবে না, গণতন্ত্র বাঁচবে না, উন্নয়ন বাঁচবে না। আওয়ামী লীগ না বাঁচলে বাংলাদেশের অর্জন হবে না।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ক্ষমতার অহংকার কেউ দেখাবেন না। জনগণের সাথে বিনয়ী হয়ে রাজনীতি করুন। জনগণের উন্নয়ন করে জনগণের সঙ্গে থাকবেন। এটাই শেখ হাসিনার রাজনীতি।’
কক্সবাজারের উন্নয়ন তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ‘মাতারবাড়ি কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে শুরু করে কক্সবাজারের সবখানে উন্নয়ন হচ্ছে। কোথাও রাস্তা ও ব্রিজ খুব বেশি অসম্পূর্ণ নেই। কক্সবাজারে চার লেনের সড়ক হচ্ছে। মেরিন ড্রাইভ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যদি না করতেন তা হলে রোহিঙ্গা সংকটে দেশি-বেশি সাহায্য সংস্থার লোকজনের চলাচল প্রতিবন্ধকতায় চরম মানবিক সংকট তৈরি হতো। আমাদের সরকারের উন্নয়নের এই ধারা অব্যাহত থাকবে। কক্সবাজারকে আমরা বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রাণকেন্দ্রে পরিণত করতে চাই। সে লক্ষ্যে আমরা এখানে অবিরাম কাজ করে যাচ্ছি। ’
সড়ক ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশ বিশ্বসভায় বিশেষ মর্যাদা লাভ করেছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। সারা দুনিয়া আজ বাংলাদেশকে সমীহ করে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী আজ বিশ্বের ১০ জন প্রভাবশালী নেতার একজন। তিনি বিশ্বের সেরা দুইজন প্রধানমন্ত্রীর একজন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বিশ্বের সেরা তিনজন সৎ রাষ্ট্রনায়কের একজন। তিনিই বিশ্বের চারজন পরিশ্রমী দেশ শাসকের একজন। পা থেকে মাথা পর্যন্ত তিনি সৎ। তিনি কখনো দুর্নীতি করেননি। তিনি অন্যায় করেন না। তার ছেলে জয় আজ বাংলাদেশে আইসিটি বিপ্লব ঘটিয়েছেন। হাওয়া ভবনের মতো প্রধানমন্ত্রীর ছেলেমেয়েরা দুর্নীতি করেনা।’
শুদ্ধি অভিযান সম্পর্কে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করার জন্য আগে ঘরের দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তার সৎ সাহস আছে বলেই তিনি আপন ঘর থেকে এই শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছেন। কোনো নেতাকর্মীদের তিনি দুর্নীতি, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি এবং মাদক ব্যবসা করতে দেবেন না।’
রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘মানবিক দিক বিবেচনা করে প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছিলেন মানবতার নেত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু ১১ লাখ রোহিঙ্গার কারণে কক্সবাজারের মানুষ আজ বিপর্যস্ত। মানবিক রোহিঙ্গারা আজ আমাদের মানবিক সংকটের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আপনাদের কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু শেখ হাসিনা বসে নেই। তিনি রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে দিতে ভারত ও চীনকে সাথে নিয়ে বিশ্ব সম্প্রদায়কে দিয়ে মিয়ানমারকে চাপ প্রয়োগ করাচ্ছেন। এই ক্ষেত্রে তিনি সফলও হচ্ছেন। মিয়ানমার তাদের দাম্ভিকতা নরম করেছে।’
পাবলিক লাইব্রেরির শহীদ দৌলত ময়দানে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এড. সিরাজুল মোস্তফা সভাপতিত্বে এবং জেলা আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক এম.এ মনঞ্জুরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে জেলা সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান, কক্সবাজার সদর-রামু আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য কানিজ ফাতেমা মোস্তাক, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু তালেব, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ নজিবুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক উজ্জল কর, জেলা যুবলীগের সভাপতি সোহেল আহমদ বাহাদুর, জেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি রহিম উদ্দীন, সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান কায়সারুল হক জুয়েল, জেলা তাঁতী লীগের সভাপতি আরিফুল মাওলা, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান হামিদা তাহের ও জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোরশেদ হোসাইন তানিম বক্তব্য রাখেন।