ঢাকা ১২:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিসর্জনে শেষ হলো দুর্গোৎসবের

জাতীয় ডেস্ক রির্পোটঃ
‘মা তুমি আবার এসো’..ভক্ত কণ্ঠের এই আকুতির ভেতর প্রতিমা বিসর্জনে বিদায় হলো দুর্গতি নাশিনী দুর্গা। শেষ হলো বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচে’ বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। পাঁচ দিনব্যাপী দুর্গোৎসবের শেষ দিনে মঙ্গলবার মণ্ডপে মণ্ডপে দশমীর বিহিত পূজার মধ্য দিয়ে ঘটে সমাপ্তি। অত:পর দেবীর বিসর্জন আর শান্তিজল গ্রহণ। গত বুধবার বোধনে ‘অরুণ আলোর অঞ্জলি নিয়ে আনন্দময়ী মা উমাদেবীর আগমন ঘটে মর্ত্যে। হিন্দু বিশ্বাসে-টানা পাঁচ দিন মৃন্ময়ীরূপে মণ্ডপে মণ্ডপে থেকে ফিরে গেছেন কৈলাসে স্বামী শিবের সান্নিধ্যে। এবার ঘটকে আসা দেবী ফিরেছেনও একই বাহনে।
মঙ্গলবার রাজধানীতে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ এবং মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির যৌথ উদ্যোগে বিজয়া শোভাযাত্রা শেষে বুড়িগঙ্গা নদীতে প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হয়। রাজধানীসহ সারাদেশে ২৯ হাজারের বেশি মণ্ডপের দুর্গা প্রতিমা নিরঞ্জন হয়। মণ্ডপে মণ্ডপে নামে ভক্তদের ঢল। ঢাক আর শঙ্খধ্বনি। ঢাকের বাদ্য, সিঁদুর খেলা। মুখরিত মণ্ডপ প্রাঙ্গণ। একদিকে বিদায়ের সুর। অন্যদিকে উৎসবের আমেজ। ঢাকেশ্বরী মন্দির,রামকৃষ্ণ মিশন, তাতী বাজার, শাখারী বাজার, স্বামীবাগসহ বিভিন্ন মণ্ডপে চলে বিষাদে আনন্দে বিদায় উৎসব।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস অসুর শক্তি বিনাশকারী দেবী বিদায় নেয়ার সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবী থেকে সকল অপশক্তির বিনাশ হয়। বিজয়া শোভাযাত্রা ও প্রতিমা নিরঞ্জনে অংশ নিতে দুপুর গড়িয়ে যেতেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার পূজামণ্ডপ থেকে ভক্তরা ট্রাক ও ঠেলাগাড়িতে করে প্রতিমা নিয়ে সমবেত হতে শুরু করে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মেলাঙ্গনে। শোভাযাত্রার পূর্বে নারীরা দেবীর ললাটের সিঁদুর আপন ললাটে এঁকে নেয়। পুরুষরা অশুভ শক্তির বিনাশ কামনা করেন। সবার অন্তরের কামনা আগামী শরতে আবার বাঙালি হিন্দুর ঘরে ঘরে ফিরে আসবেন মা ‘উমা’।
মন্দির ও শোভাযাত্রার যাত্রাপথে বিপুল সংখ্যক পুলিশের পাশাপাশি মোতায়েন করা হয়েছিল র‌্যাব সদস্যদেরও। ঢাকেশ্বরী মন্দির থেকে শতাধিক প্রতিমা নিয়ে বের হয় বর্ণাঢ্য বিজয়া শোভাযাত্রা। ট্রাকবাহী প্রতিমাসহ কেন্দ্রীয় নেতারা, নারী-পুরুষ, শিশু, কিশোর পায়ে হেঁটে এবং বিভিন্ন ধরনের যানবাহনে করে শোভাযাত্রায় অংশ নেয়। বিচিত্র সাজপোশাকে সজ্জিত হয়ে ভক্তরা ঢাক-ঢোল, করতাল ও অন্যান্য বাদ্যযন্ত্রসহ শোভাযাত্রায় যোগ দেয়। রাস্তার দু’পাশে দাঁড়ানো হিন্দু নারীদের উলুধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠে চারদিক। পলাশী-কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার হয়ে নবাবপুর রোড,সদরঘাট পেরিয়ে ওয়াইজঘাটে বুড়িগঙ্গা তীরে শেষ হয় শোভাযাত্রা। প্রতিমা ঘাটে নিয়ে আসার পর ভক্তকূল শেষবারের মতো ধুপধুনো নিয়ে আরতিতে মেতে ওঠে। শেষে পুরোহিতের মন্ত্রপাঠের মধ্যদিয়ে দেবীকে নৌকায় তুলে বিসর্জন দেওয়া হয়। নদীপাড়ে ধর্মীয় রীতি মেনে অপরাজিতা পূজা অনুষ্ঠিত হয়। শেষে আনা হয় শান্তি জল।
ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির ১৭ বছর পর বিজয় দিবস উদযাপন

বিসর্জনে শেষ হলো দুর্গোৎসবের

আপডেট সময় ০১:০৬:০২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ অক্টোবর ২০১৬
জাতীয় ডেস্ক রির্পোটঃ
‘মা তুমি আবার এসো’..ভক্ত কণ্ঠের এই আকুতির ভেতর প্রতিমা বিসর্জনে বিদায় হলো দুর্গতি নাশিনী দুর্গা। শেষ হলো বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচে’ বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। পাঁচ দিনব্যাপী দুর্গোৎসবের শেষ দিনে মঙ্গলবার মণ্ডপে মণ্ডপে দশমীর বিহিত পূজার মধ্য দিয়ে ঘটে সমাপ্তি। অত:পর দেবীর বিসর্জন আর শান্তিজল গ্রহণ। গত বুধবার বোধনে ‘অরুণ আলোর অঞ্জলি নিয়ে আনন্দময়ী মা উমাদেবীর আগমন ঘটে মর্ত্যে। হিন্দু বিশ্বাসে-টানা পাঁচ দিন মৃন্ময়ীরূপে মণ্ডপে মণ্ডপে থেকে ফিরে গেছেন কৈলাসে স্বামী শিবের সান্নিধ্যে। এবার ঘটকে আসা দেবী ফিরেছেনও একই বাহনে।
মঙ্গলবার রাজধানীতে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ এবং মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির যৌথ উদ্যোগে বিজয়া শোভাযাত্রা শেষে বুড়িগঙ্গা নদীতে প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হয়। রাজধানীসহ সারাদেশে ২৯ হাজারের বেশি মণ্ডপের দুর্গা প্রতিমা নিরঞ্জন হয়। মণ্ডপে মণ্ডপে নামে ভক্তদের ঢল। ঢাক আর শঙ্খধ্বনি। ঢাকের বাদ্য, সিঁদুর খেলা। মুখরিত মণ্ডপ প্রাঙ্গণ। একদিকে বিদায়ের সুর। অন্যদিকে উৎসবের আমেজ। ঢাকেশ্বরী মন্দির,রামকৃষ্ণ মিশন, তাতী বাজার, শাখারী বাজার, স্বামীবাগসহ বিভিন্ন মণ্ডপে চলে বিষাদে আনন্দে বিদায় উৎসব।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস অসুর শক্তি বিনাশকারী দেবী বিদায় নেয়ার সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবী থেকে সকল অপশক্তির বিনাশ হয়। বিজয়া শোভাযাত্রা ও প্রতিমা নিরঞ্জনে অংশ নিতে দুপুর গড়িয়ে যেতেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার পূজামণ্ডপ থেকে ভক্তরা ট্রাক ও ঠেলাগাড়িতে করে প্রতিমা নিয়ে সমবেত হতে শুরু করে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মেলাঙ্গনে। শোভাযাত্রার পূর্বে নারীরা দেবীর ললাটের সিঁদুর আপন ললাটে এঁকে নেয়। পুরুষরা অশুভ শক্তির বিনাশ কামনা করেন। সবার অন্তরের কামনা আগামী শরতে আবার বাঙালি হিন্দুর ঘরে ঘরে ফিরে আসবেন মা ‘উমা’।
মন্দির ও শোভাযাত্রার যাত্রাপথে বিপুল সংখ্যক পুলিশের পাশাপাশি মোতায়েন করা হয়েছিল র‌্যাব সদস্যদেরও। ঢাকেশ্বরী মন্দির থেকে শতাধিক প্রতিমা নিয়ে বের হয় বর্ণাঢ্য বিজয়া শোভাযাত্রা। ট্রাকবাহী প্রতিমাসহ কেন্দ্রীয় নেতারা, নারী-পুরুষ, শিশু, কিশোর পায়ে হেঁটে এবং বিভিন্ন ধরনের যানবাহনে করে শোভাযাত্রায় অংশ নেয়। বিচিত্র সাজপোশাকে সজ্জিত হয়ে ভক্তরা ঢাক-ঢোল, করতাল ও অন্যান্য বাদ্যযন্ত্রসহ শোভাযাত্রায় যোগ দেয়। রাস্তার দু’পাশে দাঁড়ানো হিন্দু নারীদের উলুধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠে চারদিক। পলাশী-কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার হয়ে নবাবপুর রোড,সদরঘাট পেরিয়ে ওয়াইজঘাটে বুড়িগঙ্গা তীরে শেষ হয় শোভাযাত্রা। প্রতিমা ঘাটে নিয়ে আসার পর ভক্তকূল শেষবারের মতো ধুপধুনো নিয়ে আরতিতে মেতে ওঠে। শেষে পুরোহিতের মন্ত্রপাঠের মধ্যদিয়ে দেবীকে নৌকায় তুলে বিসর্জন দেওয়া হয়। নদীপাড়ে ধর্মীয় রীতি মেনে অপরাজিতা পূজা অনুষ্ঠিত হয়। শেষে আনা হয় শান্তি জল।