স্টাফ রির্পোটারঃ
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার খাড়াতাইয়া গাজীপুর এলাকায় ইঁদুর মারার জন্য জমিতে দেওয়া বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার পর লাশ গুম করার জন্য তা পার্শ্ববর্তী ডোবার পানিতে ফেলে দেয় জমির মালিক। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় বুড়িচং থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন নিহতের মা জাহানারা বেগম।
মামলার বিবরণ ও স্থানীয়রা জানায়, জেলার বুড়িচং উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের রাজাপুর পশ্চিম পাড়া গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে মো. শাকিল খাঁন বাবু (১৮), একই এলাকার সুরুজ মিয়ার ছেলে সুমন (১৮), আ. ওয়াহেদের ছেলে হসান (১৮), আ. বারেকের ছেলে রুবেল (১৬), জাকির (২২), ফজলু মিয়ার ছেলে মনির (২৫), রেজু মিয়ার ছেলে ইকবাল হোসেন (২৫) গতকাল শুক্রবার রাতে মাছ ধরার জন্য উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের খাড়াতাইয়া গাজীপুর গ্রামের আল-আমিনের ছেলে নজরুল ইসলামের পুকুরে যান। রাতে মাছ ধরা শেষে ভোর সাড়ে ৩টার দিকে পুকুর থেকে ফেরার পথে শাকিল খাঁন বাবু গাজীপুর এলাকার বাদশা মিয়ার ছেলে শাম মিয়ার জমিতে ইঁদুর নিধনের জন্য দেওয়া তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। এ সময় বাবুর সঙ্গে থাকা সুমন ও হাসানের চিৎকার শুনে জমির মালিক শাম মিয়া ঘর থেকে বিদ্যুতের লাইন বন্ধ করে আহত বাবুকে শাম মিয়ার উঠানে নিয়ে রাখেন। পরে জমির মালিক শাম মিয়া বাবুর দুই সঙ্গীকে সিএনজি নিয়ে আসার জন্য পাঠায়।
আধঘণ্টা পর সুমন ও হাসান সিএনজি নিয়ে এসে আহত বাবুকে কোথাও দেখতে না পেয়ে চিৎকার করতে থাকেন। এ সময় স্থানীয় লোকজন জড়ো হলে বিষয়টি জানায় এবং আহত বাবুকে খুঁজতে থাকে। পরে ভোর ৬টার দিকে স্থানীয়রা ঘটনাস্থল থেকে ৫০০ গজ দূরে একটি ডোবায় বাবুর লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়। এ সময় স্থানীয়রা বুড়িচং থানা পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করলে বুড়িচং থানার এসআই সাইফুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ডোবা থেকে লাশ উদ্ধার করে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ঘটনার পর থেকে জমির মালিক শাম মিয়া ও তার পরিবারের সদস্যরা পলাতক।
নিহতের স্বজনরা থানায় এসে বাবুর লাশ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তারা দোষীদের কঠোর শাস্তি দাবি করেন। নিহত বাবু বাসের হেলপার হিসেবে কাজ করতেন। মাঝে মাঝে রাতে বিভিন্ন পুকুরে চুক্তিভিত্তিক মাছও ধরতেন তিনি।
এদিকে, পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য তা মর্গে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের মা জাহানারা বেগম বাদী হয়ে জমির মালিক শাম মিয়াকে প্রধান আসামি করে বুড়িচং থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এ বিষয়ে বুড়িচং থানার এসআই সাইফুল ইসলাম বলেন, “খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”