মুরাদনগর বার্তা ডেস্কঃ
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। জেলার বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষে নিহত হয়েছে অন্তত ৫ জন। পুলিশসহ আহত হয়েছে অর্ধশত।
শনিবার (২৭ মার্চ) বিকেলে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নন্দনপুরে কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী মহাসড়কে অবস্থান করে। এসময় পুলিশ-বিজিবি সদস্যরা তাদের ধাওয়া করলে সেখানে উত্তেজনা দেখা দেয়। তখন ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক রানা নুরুস শামস সাংবাদিকদের জানিয়েছেন এখন পর্যন্ত আমরা ৫ জনকে মৃত ঘোষণা করেছি। তবে এক জনের নাম এখনো জানা যায়নি।
নিহতরা হলেন, নন্দনপুর হারিয়া গ্রামের আব্দুল লতিফ মিয়ার ছেলে দোকানী জুরু আলম (৩৫), সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার দাবিড় মিয়ার ছেলে শ্রমিক বাদল মিয়া (২৪) ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া বারিউড়া মৈন্দ গ্রামের জুরু আলীর ছেলে সুজন মিয়া (২২) এবং বুধলের আলী আহমদের ছেলে প্লাম্বার শ্রমিক কাউসার (২৫) তাদের হাসপাতালে আনা হলে সদর হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক আব্দুল্লাহ আল মামুন মৃত ঘোষণা করেন। আহতদের সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এদিকে, বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের টিএ রোড দিয়ে আওয়ামী লীগের একটি র্যালি জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসার এলাকা অতিক্রম করার সময় পেছন দিক থেকে মাদ্রাসার কয়েকজন ছাত্রকে ধাওয়া করে। এসময় ছাত্ররাও পাল্টা ধাওয়া দেয়। তখন অর্ধশত ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। কিছুক্ষণ পর কান্দিপাড়া মসজিদ থেকে মাদ্রাসাকে রক্ষার জন্য মসজিদের মাইক থেকে ঘোষণা দেয়া হলে হাজার হাজার লোক রাস্তায় নেমে পড়ে। তখন ছাত্রলীগ কর্মীরা পিছু হটে। ক্ষুব্ধ লোকজন প্রধান সড়ক অবরোধ করে রাস্তায় আগুন ধরিয়ে দেয় এবং যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। এসময় শহরের দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। পরে বিজিবি সদস্য ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মাদ্রাসা এলাকায় থেমে থেমে পুলিশের সাথে সংঘর্ষ চলছিল।
অন্যদিকে সরাইল উপজেলায় স্থানীয়দের বের করা বিক্ষোভ মিছিল থেকে পুলিশ ক্যাম্পে হামলা চালানো হয়েছে। এতে ক্যাম্পে থাকা ২৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। আহত পুলিশ সদস্যদের নাম জানা যায়নি। তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। পুলিশ অন্তত ৪০ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ ও ১৫ রাউন্ড টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সরাইল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) কবির হোসেন জানান, বিক্ষোভ মিছিল থেকে হঠাৎ করে পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা চালানো হয়। এছাড়া গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আলী আহমেদের ছেলে কাউসার মিয়া, সাইদ মিয়ার ছেলে নুরুল আমিন (৩৫), আব্দুল সাত্তারের ছেলে বাছির মিয়া (২৮), আবদুল হোসেনের ছেলে ছাদের মিয়া (৩৫) হাসপাতালে আনা হয়।