খেলাধূলা ডেস্ক:
নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিয়েছে ভারত। হারের এই জ্বালা বয়ে বেড়াচ্ছে কোহলিদের সমর্থকরা। এরই মাঝে ভারতের ক্রিকেট দলে গ্রুপিংয়ের খবর শোনা যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, অধিনায়ক বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মার সম্পর্কের মাঝেও নাকি ফাটল ধরেছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বকাপ থেকে দুঃখজনকভাবে বিদায়ের পর থেকে টিম ইন্ডিয়ার অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বগুলো প্রকাশ পেতে থাকে। কোহলি ও রোহিত শর্মার সম্পর্কে ভাঙন দেখা দেয়। দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়ে যায় দল। এর এক গ্রুপে রয়েছেন অধিনায়ক কোহলি নিজে অন্য দলে রোহিত শর্মা।
ভারতের জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম টাইমনিউজের খবরে বলা হয়, ভারতের ক্রিকেট দলে এখন দুটি গ্রুপ রয়েছে। যার একটির নেতৃত্বে আছেন কোহলি অন্যটিতে রোহিত শর্মা।
এই সংবাদমাধ্যমটি ভারতের সাবেক কোচ অনিল কুম্বলের পদত্যাগের বিষয়টি সামনে তুলে আনে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সালে কুম্বলে পদত্যাগের সময় জানিয়েছিলেন, তাদের মাঝে ভালো জুটি গড়ে উঠুক কোহলি তা চাইতেন না। এছাড়া দলের রুটিন নিয়ে কোহলির আপত্তি ছিল। ফলে কোহলির সঙ্গে মতের মিল না পড়ায় কোচ পদ থেকে সরে যেতে হয়েছিল অনিল কুম্বলকে। যদিও এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন টিম ইন্ডিয়ার বর্তমান অধিনায়ক।
ভারতের আরেক সংবাদমাধ্যম ‘জাগরণ’র প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে হেরে যাওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ কোচ রবি শাস্ত্রী এবং কোহলির একতরফা চিন্তা, যা তারা দলের উপর চাপিয়ে দিয়ে থাকে। ভয়ে এর বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস কেউ পায় না। কারণ সবাই জানে, সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক নিযুক্ত বিসিসিআই প্রধান বিনোদ রাই কোহলিকে পছন্দ করেন। তার সঙ্গে কোহলির মতের খুব একটা পার্থক্য নেই। আর বিসিসিআইয়ের বাকি তিন কর্মকর্তাদের নাকি দলের ইস্যু নিয়ে কথা বলার পর্যাপ্ত ক্ষমতা নেই।
ছবি: টাইমনিউজ
এমএসকে প্রসাদের নেতৃত্বাধীন নির্বাচক কমিটিও শাস্ত্রী ও কোহলিকে কোনো ব্যাপারে থামাতে পারছেন না। আর এসব কারণেই চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে হারের পর কোহলির সঙ্গে মতের মিল না পড়ায় কোচ পদ থেকে সরে যেতে হয়েছিল অনিল কুম্বলকে।
খেলোয়াড় নির্বাচনে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, দল এখন দুটি গ্রুপে বিভক্ত। একটি সহকারী অধিনায়ক রোহিতের, আরেকটি অধিনায়ক বিরাটের অধীনে। তবে এ বিরোধ এখনো সেভাবে আলোচনায় উঠে আসেনি।
বিশ্বকাপে কোহলিরা খেলার সময় জাগরণের রিপোর্টারকে ভারতীয় দলের এক ক্রিকেটার বলেন, ‘রাহুল যত খারাপই খেলুক, তবু সে দলে ফিরবেই। ওপেনিংয়ে সুযোগ থাকলে, তাকে সেখানে খেলানো হবে, চারে সুযোগ থাকলে সেখানেও জায়গা হবে। আর যদি কোনো সুযোগই না থাকে, তাহলে ১৫ সদস্যের দলে থাকবে। যদি কেউ চোট পায় কিংবা বাজে পারফর্ম করে তাহলে তাকে একাদশে ফেরানো হবে।’
প্রতিবেদনে বলা হয়, শুধু তাই নয়, কুলদীপ যাদব ও যুজবেন্দ্র চাহালের মধ্যে যে স্পিনারই বাজে পারফর্ম করুক না কেন, একাদশ থেকে বাদ পড়তে হয় কুলদীপকে।
কোচ ও অধিনায়কের সঙ্গে বাকি ক্রিকেটারদের সমস্যার কথা বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়, টিম ইন্ডিয়া খেলোয়াড়দের বেশির ভাগ চায় কোচ ও অধিনায়কের প্রস্থান। ইংল্যান্ডে থাকা অবস্থায় রিপোর্টারকে দলের এক ক্রিকেটার প্রশ্ন করেছেন, ‘তারা কবে যাবে?’ অর্থাৎ কোচ ও অধিনায়ক কবে পদত্যাগ করবেন।
প্রতিবেদনের শেষের দিকে বলা হয়, দলে এসব সমস্যা ও খেলোয়াড়দের বনিবনা না হওয়ার কারণে বিশ্বকাপে প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি ভারত। আর এ জন্য দায়ী করে কোচ রবি শাস্ত্রী ও কোহলিকেই ইঙ্গিত করা হয়।