অন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
ভেনেজুয়েলা শিগগিরই যুক্তরাষ্ট্রে তাদের দূতাবাস ও সব কনস্যুলেট বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো। খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।
গত বুধবার বাম ঘরানার এ নেতা মার্কিন কূটনীতিকদের ভেনেজুয়েলা ত্যাগে ৭২ ঘণ্টা সময়ও বেঁধে দিয়েছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্র সেসময় মাদুরো প্রশাসনের নির্দেশ মানতে অস্বীকৃতি জানালেও পরে কিছু কূটনীতিককে দেশে ফিরে আসতে বলেছে।
রাজধানী কারাকাসের সুপ্রিম কোর্টে সমর্থকদের উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে মাদুরো নিজেকে ভেনেজুয়েলার ‘বৈধ প্রেসিডেন্ট’ দাবি করে শিগগিরই যুক্তরাষ্ট্রে থাকা দূতাবাস ও কনস্যুলেটগুলো বন্ধ এবং সেখানকার কর্মীদের ফিরিয়ে আনা হবে বলে জানান।
মেক্সিকো ও উরুগুয়ে দক্ষিণ আমেরিকার দেশটির সংকট সমাধানে মাদুরোকে বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনায় বসার যে আহ্বান জানিয়েছে তাতেও সম্মতি জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার ভেনেজুয়েলার বিরোধীদলীয় নেতা হুয়ান গুইদো নিজেকে ‘অন্তর্র্বর্তী প্রেসিডেন্ট’ ঘোষণা করলে দেশটির রাজনৈতিক সংকট চরমে পৌঁছায়।
গুইদোর ঘোষণার পরপরই যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা এবং দক্ষিণ আমেরিকার ব্রাজিল, ইকুয়েডর, প্যারাগুয়েসহ বেশ কয়েকটি দেশ তাকে স্বীকৃতি দেয়। অন্যদিকে রাশিয়া, কিউবা, বলিভিয়া, চীন ও তুরস্ক মাদুরোর প্রতি তাদের সমর্থন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে। বিদেশি শক্তিগুলো মাদুরোর কাছ থেকে ‘ক্ষমতা জবরদখলের চেষ্টা’ চালাচ্ছে বলে নিন্দা করেছে রাশিয়া। গুইদোকে সমর্থন দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশ আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে এবং ‘সরাসরি রক্তপাতের পথে যাচ্ছে’ বলেও সতর্ক করেছে মস্কো।
চীন বলেছে, ভেনেজুয়েলায় বাইরের দেশের কোনো ধরনের হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে তারা।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ভেনেজুয়েলায় অবাধ নির্বাচনের আহ্বান জানিয়েছে। গুইদোকে মার্কিন স্বীকৃতির পর ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো এর জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন।
হুগো চাভেজের মৃত্যুর পর ২০১৩ সালে ভেনেজুয়েলার নেতৃত্বে আসেন মাদুরো। গত বছর মে মাসে নির্বাচনের মাধ্যমে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর এ মাসেই শপথ নেন তিনি। কারচুপির অভিযোগে তুলে বিরোধী দল ওই ভোট বয়কট করেছিল; ভোটের স্বচ্ছতা নিয়ে নানান মহলে প্রশ্নও উঠেছে।
বিরোধীদল নিয়ন্ত্রিত পার্লামেন্টের নেতা গুইদোর দাবি, দেশের সংবিধান অনুযায়ী তার অন্তর্বর্তী ক্ষমতা নেওয়ার এখতিয়ার আছে। ‘অন্তর্র্বর্তী প্রেসিডেন্ট’ হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশে একটি অবাধ নির্বাচন করারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন বলেছেন, ভেনেজুয়েলার তেল রপ্তানির রাজস্ব যেন মাদুরোর হাতে না যায়, তা নিশ্চিতে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভাবছে ওয়াশিংটন। ওই রাজস্ব কীভাবে গুইদোর কাছে পৌঁছানো যায়, যুক্তরাষ্ট্র তার সম্ভাব্য উপায়গুলো খতিয়ে দেখছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।